সুনামগঞ্জ-৪ আসনের আওয়ামী লীগ প্রার্থী ড. মোহাম্মদ সাদিক গত একমাস ব্যাপী গ্রামান্তরে ঘুরে ঘুরে নির্বাচনী প্রচারকাজ করে চলেছেন। গত শনিবারের (৩০ ডিসেম্বর ২০২৩) দৈনিক সুনামকণ্ঠে তাঁর নির্বাচনী প্রচারকাজ নিয়ে প্রতিবেদন করা হয়েছে। প্রতিবেদনের শুরুতেই বলা হয়েছে, “ড. মোহাম্মদ সাদিক বলেছেন, বাংলাদেশে যে উন্নয়ন-অগ্রযাত্রা চলছে সেই তুলনায় সুনামগঞ্জ-বিশ্বম্ভরপুরে উন্নয়ন হয়নি। বলা যায় প্রদীপের নিচে অন্ধকারের মতো সুনামগঞ্জ-বিশ্বম্ভরপুরের মানুষ অন্ধকারে রয়েছে। একটি ছোট ব্রিজ, একটি ছোট রাস্তার জন্য মানুষের চোখের জল দেখেছি। কৃষকের দুর্দশা দেখেছি। গত একমাস আমার নির্বাচনী এলাকার গ্রামে গ্রামে গিয়েছি। মানুষের সমস্যার কথা শুনেছি। আমি কখনোই ভাবতেই পারিনি মানুষের বুকে এতো ব্যথা জমে রয়েছে। এতো দীর্ঘশ্বাস জমে আছে। আমি আমার এলাকার মানুষের চোখের পানি মোছার জন্যে এখানে এসেছি, দীর্ঘশ্বাস দূর করার জন্যে এসেছি।” একজন প্রার্থীর এই উপলব্ধিকে বিবেচনায় নিলে কথাগুলো রাজনীতিক কর্মপ্রয়োগের উৎস থেকে বেরিয়ে এলেও এর মর্মে কোনও এক কবি হৃদয়ের সহৃদয়তার মিশেলটি সচেতন মানুষের চেতনার জালে ধরা পড়ে। তাঁর এইসব আবেগমথিত কথার বিছানো জ্যোৎ¯œাজ্যোতির চাদরে ফুল তোলা নকশার মতো পল্লবিত হয়েছে তাঁর নির্বাচনোত্তর রাজনীতিক প্রতিশ্রুতি।
কিন্তু অভিজ্ঞমহলের কেউ কেউ বলছেন, ‘প্রতিশ্রুতি ব্যর্থ হওয়ার সম্ভবনা থাকে, ষোল আনার স্থলে আঠারো আনা। আর প্রতিশ্রুতিটা যদি হয় কোনও রাজনীতিকের তবে তো আর কথাই নেই, নির্বাচন শেষে সেটা জনস্বার্থ থেকে আত্মস্বার্থে পর্যবসিত হয়।’
উপরে উল্লেখিত প্রতিশ্রুতিটি ভোটসংগ্রহের কাজে ব্যস্ত একজন প্রার্থীর বটে এবং সেই সুবাদে প্রতিশ্রুতিটি একটি রাজনীতিক প্রতিশ্রুতিও বটে। তবে আমরা ভুলে থাকতে পারি না যে, এই রাজনীতিকের অন্তরে রাজনীতিকের চেয়েও বড় ও মহৎ একজন কবি সমাসীন আছেন। কবি যখন রাজনীতিক হন তখন তো এমন উপলব্ধির কথা তিনি জনগণকে শুনাতে ও প্রতিশ্রুতিবদ্ধ হতেই পারেন। তাঁর পক্ষে এটাই স্বাভাবিক। অভিজ্ঞমহলের পক্ষ থেকে তারপরও কথা থেকে যায় এবং সেটা বলতেই হয়। তাঁরা কেউ কেউ বলেন, ‘প্রতিশ্রুতি প্রতারণার চোরাবালিতে বেমালুম তলিয়ে গেছে, অতীতে এমন সব অনেক ঘটনা ঘটেছে। তাই আমরা প্রতিনিয়ত প্রতিশ্রুতি পালন না হওয়ার আশঙ্কায় শঙ্কিত থাকি। জনগণের কাছে রাজনীতিক মানুষের প্রদত্ত প্রতিশ্রুতির বিগত ইতিহাস কেবল প্রজ্জ্বোল সব প্রতিশ্রুতি প্রতারণার চোরাবালিতে তলিয়ে যাওয়ার বেদনার্ত ইতিহাস।’ তাঁরা আরও বলেন, ‘এবার আমাদের আর কীছু চাই না, কেবল আশা করি, তিনি এই প্রতিশ্রুতি ভুলে যাবেন না।’
আমরা তাঁর কথার প্রশংসা করি ও তাঁকে অভিনন্দন জানাই।