স্টাফ রিপোর্টার ::
১২দিন পেরিয়ে গেলেও সুনামগঞ্জের ছাতক ও শান্তিগঞ্জ উপজেলায় এখনো এক ছটাক বোরো ধানও সংগ্রহ করা হয়নি। গত ৭ মে আনুষ্ঠানিকভাবে বোরো ধান সংগ্রহ কার্যক্রম উদ্বোধনের পর জেলায় এ পর্যন্ত ২৫ হাজার ৪০০ টন বোরো ধানের মধ্যে মাত্র ৪৩৮ টন বোরো ধান সংগ্রহ করেছে খাদ্য বিভাগ।
এদিকে জেলার বাইরের বিভিন্ন এলাকার পাইকাররা হাওরে এসে কৃষকদের কাছ থেকে অতিরিক্ত ধান কিনে নিয়ে যাচ্ছে বলে জানিয়েছেন কৃষকরা। প্রতিদিন আশুগঞ্জ, ভৈরব, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, কিশোরগঞ্জসহ বিভিন্ন এলাকার পাইকাররা হাওরের গ্রাম থেকে কমমূল্যে ধান কিনে নিয়ে যাচ্ছে।
সুনামগঞ্জ জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রকের কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, গত ১৮ মে পর্যন্ত জেলায় ৪৩৮ মেট্রিক টন ধান সংগ্রহ হয়েছে। সুনামগঞ্জ সদর উপজেলায় ৫২ মে.টন, দোয়ারাবাজার উপজেলায় ১২ মে.টন, জগন্নাথপুরে ২০৬ মে.টন, দিরাই উপজেলায় ২৭ মে.টন, শাল্লায় ৬০ মে.টন, ধর্মপাশায় ৯ মে.টন, মধ্যনগরে ৬ মে.টন, জামালগঞ্জে ৬ মে.টন, তাহিরপুরে ৩ মে.টন এবং বিশ্বম্ভরপুরে ৫৭ মে.টন বোরো ধান সংগ্রহ করা গেছে।
এদিকে কৃষকরা জানিয়েছেন, উপজেলা ভিত্তিক খাদ্যগুদামের বদলে ইউনিয়ন থেকে ধান সংগ্রহ করা গেলে কৃষকরা স্বতঃস্ফূর্ত হয়ে গুদামে ধান দিতে পারতেন। উপজেলা সদরে এসে ধান দিতে তাদের আগ্রহ কম। গুদামে এসে ধান দিতে সময়, শ্রম ও অর্থের ব্যয় হয় বলে কৃষকদের অভিযোগ। এই সুযোগে বাইরের জেলার পাইকাররা কৃষকের বিক্রির ধান কিনে নিয়ে যাচ্ছে। এতে তারা কম দাম পাচ্ছে এবং স্থানীয় খাদ্যগুদামগুলোও লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করতে পারছেনা।
জানা গেছে, গ্রাম এলাকায় ধান ৯০০-১০০০ হাজার টাকা মণ দরে বিক্রি হচ্ছে। গুদামে এনে দিতে পারলে এই ধান ১২০০ টাকা মণ পেতেন কৃষকরা। কিন্তু নানা বিড়ম্বনার কারণে গ্রাম এলাকার কৃষকরা গুদামে ধান দিতে আগ্রহী নন। তাছাড়া গুদামে ধান দিতে এসে তালিকাভুক্ত হতে নানা বিড়ম্বনায় পড়তে হয় বলে তারা জানান।
শাল্লা উপজেলার আটগাঁও ইউনিয়নের মীর্জাকান্দা গ্রামের কৃষক মোছানুর মিয়া বলেন, আমাদের এলাকায় একটি গুদাম আছে। ব্যবহার না হওয়ায় এটি নষ্ট হয়ে গেছে। ইউনিয়ন পর্যায় থেকে ধান নিলে আমরা সরকারকে দিতাম। কিন্তু এখান থেকে ঘুঙ্গিয়ারগাঁও গুদামে গিয়ে ধান দিতে হলে আমাদের মণপ্রতি ৩-৪শ টাকা খরচ হবে। তাই ধান দিতে কেউ আগ্রহী নন কৃষকরা।
সুনামগঞ্জ জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক মোহাম্মদ মইনুল ইসলাম ভূঞা বলেন, ধান দিতে আগ্রহী কৃষকদের তালিকা প্রায় চূড়ান্ত। সব গুদামেই ধান সংগ্রহ চলছে। তবে আগামী সপ্তাহ থেকে সংগ্রহের গতি বাড়বে।