1. [email protected] : admin2017 :
  2. [email protected] : Sunam Kantha : Sunam Kantha
  3. [email protected] : wp-needuser : wp-needuser
শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১২:১৩ পূর্বাহ্ন
ঘোষণা ::
সুনামগঞ্জ জেলার জনপ্রিয় সর্বাধিক পঠিত পত্রিকা সুনামকন্ঠে আপনাকে স্বাগতম। আমাদের পাশে থাকার জন্য সকলকে আন্তরিক অভিনন্দন। আমাদের পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দিতে যোগাযোগ করুন - 01711-368602

নদীতে বাঁধ দিয়ে প্রভাবশালীদের মাছ চাষ

  • আপডেট সময় মঙ্গলবার, ২১ মার্চ, ২০২৩

স্টাফ রিপোর্টার ::
জামালগঞ্জের পাগনার হাওরের ‘দুঃখ’ খ্যাত কানাইখালী নদীর দুঃখ ঘুচছে না। ২০১৫ সন থেকে পাগনার হাওরের অন্তত ১৫টি গ্রামের কৃষকের দুঃখ-দুর্দশা লাঘব করে হাওরের কৃষিকে আগের অবস্থায় ফিরিয়ে আনতে সরকারের একাধিক দফতর ভরাটকৃত নদীটি খনন করার উদ্যোগ নিয়েছিল। কয়েক বছর যেতে না যেতেই আবারও লক্ষ্মীপুর গ্রামের কয়েকটি প্রভাবশালী পরিবার নদীর বিভিন্ন স্থানে বাঁধ দিয়ে বহমান নদীটিকে পুকুর বানিয়ে মাছ চাষ করছে। এখন শুকিয়ে মাছ ধরতে গত শনিবার রাতে শ্যালু মেশিন লাগিয়েছে। এতে আবারও হুমকিতে পড়েছে পাগনার হাওরের বোরো ফসল। এলাকার কৃষকরা নদী দখলদারদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন।
এলাকার কৃষকরা জানান, পাগনার হাওরের প্রায় ৭ হাজার হেক্টর বোরো জমি নদীটি ভরাট হয়ে যাওয়ার কারণে একসময় স্থায়ী জলাবদ্ধতা দেখা দেয়। কানাইখালী নদীটি পলিতে ভরাট হয়ে যাওয়ায় এই সমস্যায় পড়েন কৃষকরা। ২০১৮ সনে পানিসম্পদমন্ত্রী আনোয়ার হোসেন মঞ্জু এই হাওর পরিদর্শনে গেলে কানাইখালী নদী খনন করে হাওরের কৃষিকে বাঁচানোর আকুতি জানান কৃষকরা। তিনি নদীটি খনন করে হাওরের জমি জলাবদ্ধতা থেকে রক্ষার নির্দেশনা দেন।
এলাকার কৃষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ২০১৭ সালে বিএডিসি কানাইখালি নদীর গজারিয়া অংশের ৩ কিলোমিটার ও ৭০০ মিটার অংশ খনন করেছিল। প্রতি কিলোমিটারে খনন ব্যয় হয় ১২ লাখ টাকা। ৬-৭ ফুট গভীর ও ৪০ ফুট প্রস্থের ও ১২ ফুট নদীর তলদেশ খননের কথা জানিয়েছিল তারা। ২০১৮ সনে পানি উন্নয়ন বোর্ড ২৫ লাখ টাকা ব্যয়ে আবারও কানাইখালী নদীর বিভিন্ন অংশ খনন করে নদীর বহমান ধারা স্বাভাবিক রাখে। তারা নদীর তলদেশে ৫-৭ ফুট, ওপরে ২৫ ফুট খনন করেছিল। এছাড়াও ২০১৫ সালে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের সহযোগিতায় হিলিপ ৩৫ লাখ ৫৯ হাজার ৯৫০ টাকা ব্যয়ে এই নদীর ৩ কিলোমিটার খনন কাজ করেছিল। এভাবে নদীটিকে বাঁচিয়ে রাখতে চেষ্টা করে সরকারের বিভিন্ন বিভাগ। নদীটি খননের ফলে এলাকার কৃষকের সেচ সুবিধাসহ মওসুমে পাগনার হাওরের বোরো ফসল জলাবদ্ধতা থেকেও কিছুটা রক্ষা পায়।
এভাবে বিভিন্ন সময়ে হাওরের কৃষিকে বাঁচাতে নদীটি খনন করা হলেও সম্প্রতি আবারও লক্ষ্মীপুর গ্রামের প্রভাবশালী সমাজ মিয়ার নেতৃত্বে কিছু ব্যক্তি নদীতে বাঁধ দিয়ে পুকুরের মতো করে মাছ চাষ করছে। এলাকার কৃষকরা বাধা দেওয়ায় তারা স্থানীয় মাদরাসা ও মসজিদের জন্য মাছ চাষ করছে বলে প্রচার করতে থাকে। এতে নদীর স্বাভাবিক পানিপ্রবাহ বন্ধ হয়ে গেছে। হাওরের জমিতেও আবারও পানি নিষ্কাশনে সমস্যা তৈরি করছে। বদলে যাচ্ছে নদীটির গতিপথ। আশপাশের কয়েকটি গ্রামের কৃষকরা প্রতিবাদ করলে তাদেরকে উল্টো হুমকি ধমকি দেওয়া হচ্ছে।
জানা গেছে, সম্প্রতি কানাইখালী নদী দখলের খবর পেয়ে সুনামগঞ্জ জেলা প্রশাসক দিদারে আলম মোহাম্মদ মকসুদ চৌধুরী জামালগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বিশ্বজিৎ দেবকে দখলদারদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেন। তিনি স্থানীয় মৎস্য কর্মকর্তার মাধ্যমে বাঁধগুলো অপসারণ করার নির্দেশ দেন। তবে এই নির্দেশ অমান্য করে গত শনিবার রাতে থকে শ্যালু মেশিন লাগিয়ে আবারও নদী শুকিয়ে মাছ ধরার উদ্যোগ নিয়েছে তারা।
এলাকার কৃষক দোলন বাবু বলেন, আমাদের দাবির প্রেক্ষিতে সরকার পাগনার হাওরের কৃষিকে সচল রাখতে বিভিন্ন সময়ে নদীটি খনন করেছিল। এতে আমরা কিছু উপকারও পাচ্ছি, নদীর বহমানতাও বৃদ্ধি পেয়েছে। যা কৃষিতে প্রভাব পড়েছে। কিন্তু সম্প্রতি কিছু ব্যক্তি নদীটির বিভিন্ন স্থানে বাঁধ দিয়ে পুকুর বানিয়ে নিয়েছে। এতে নদীর গতিপথ বদলে যাওয়াসহ হাওরের কৃষিতেও প্রভাব পড়েছে।
কৃষক মনা তালুকদার বলেন, জরুরি ভিত্তিতে নদীটিকে দখলমুক্ত করা না গেলে এলাকার কৃষিতে বিরাট প্রভাব পড়বে। এভাবে নদীকে পুকুর বানানো হলে নদীটি হারিয়ে যাবে। বিপরীতে আমাদের কৃষিতে সর্বনাশ ডেকে আনবে।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে সমাজ মিয়ার মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করলে তিনি কল রিসিভ করেননি।
জামালগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বিশ্বজিৎ দেব বলেন, জেলা প্রশাসক মহোদয়ের নির্দেশে নদীতে যারা বাঁধ দিয়ে মৎস্য আহরণ করেছিল বাঁধগুলো অপসারণ করা হয়েছে। তারা নদীকে পুকুর বানিয়ে শুকিয়ে মাছ আহরণ করার কথা না। যদি এরকম আবারও করে থাকে তাহলে আমি ব্যবস্থা নিচ্ছি।

 

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর

© All rights reserved © 2016-2021
Theme Developed By ThemesBazar.Com