1. [email protected] : admin2017 :
  2. [email protected] : Sunam Kantha : Sunam Kantha
  3. [email protected] : wp-needuser : wp-needuser
শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ০৮:৫৬ অপরাহ্ন
ঘোষণা ::
সুনামগঞ্জ জেলার জনপ্রিয় সর্বাধিক পঠিত পত্রিকা সুনামকন্ঠে আপনাকে স্বাগতম। আমাদের পাশে থাকার জন্য সকলকে আন্তরিক অভিনন্দন। আমাদের পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দিতে যোগাযোগ করুন - 01711-368602

আজ পণাতীর্থে গঙ্গাস্নান

  • আপডেট সময় রবিবার, ১৯ মার্চ, ২০২৩

স্টাফ রিপোর্টার ::
আজ রবিবার থেকে তাহিরপুর উপজেলা সীমান্তে শুরু হচ্ছে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির এক অনন্য নিদর্শন পণাতীর্থ (মহাবারুণী) গঙ্গাস্নান ও শাহ আরেফিন (র.) এর ওরস মাহফিল। ৭০০ বছরের ঐতিহ্যবাহী এ দুটি অনুষ্ঠান ঘিরে সনাতন ও ইসলাম ধর্মাবলম্বী লক্ষাধিক ভক্ত-আশেকান ও দশনার্থীর সমাগম ঘটে যাদুকাটা নদীর দুই পার ও সীমান্তবর্তী লাউড়েগড় এলাকায়।

পণাতীর্থ ধামে গঙ্গাস্নান আজ ১৯ মার্চ রবিবার রাত ৯টা ১৪ মিনিট ১৫ সেকেন্ড থেকে শুরু হয়ে ভোর ৪টা ৬মিনিট ৫০ সেকেন্ড পর্যন্ত (মধুকৃষ্ণা ত্রয়োদশী তিথিতে) মহাবারুণী তাহিরপুরের যাদুকাটা নদীতে অনুষ্ঠিত হবে। এ উপলক্ষে যাদুকাটা নদী তীরের বালুচরে বারুনীমেলা রবিবার সকাল থেকে শুরু হয়ে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় সমাপ্ত হবে। অন্যদিকে ১৯ মার্চ রবিবার সন্ধ্যা থেকে থেকে শুরু হয়ে ২২ মার্চ বুধবার সকালে আখেরী মোনাজাতের মধ্যদিয়ে উপজেলার লাউড়েরগড় সীমান্তে ৩৬০ আউলিয়ার অন্যতম সফরসঙ্গী হযরত শাহ্ আরেফিন (র.)-এর বার্ষিক ওরস সমাপ্ত হবে।
ওরস উদযাপন কমিটির সহ-সভাপতি বাদাঘাট ইউপি চেয়ারম্যান মো. নিজাম উদ্দিন ও শাহ্ আরেফীন আস্তানার খাদেম আলহাজ্ব নুরুল আমিন চিশতী জানিয়েছেন, ওরস ও স্নানযাত্রা উপলক্ষে দেশ-বিদেশের কমপক্ষে ৪ লক্ষাধিক মানুষের সমাগম ঘটবে। ওরসের প্রথম দিন থেকে শেষ দিন পর্যন্ত কোরআন তেলাওয়াত, হালকা জিকির, মুর্শিদী, ভান্ডারী, পল্লীগীতি, লালনগীতি, বাউল সঙ্গীত, জেলার মরমী কবি ও সাধক পুরুষ হাসন রাজার গানে ওরস ও মেলাস্থল মাতিয়ে রাখার আয়োজন করা হয়েছে।
তাহিরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সুপ্রভাত চাকমা জানিয়েছেন, ৭১৮ বছরের প্রাচীন ঐতিহ্যবাহী মিলনমেলাকে শান্তিপূর্ণভাবে সম্পন্ন করার লক্ষ্যে সংসদ সদস্য ইঞ্জিনিয়ার মোয়াজ্জেম হোসেন রতন, জেলা প্রশাসক দিদারে আলম মোহাম্মদ মাকসুদ চৌধুরী, পুলিশ সুপার মোহাম্মদ এহসান শাহ্, তাহিরপুর উপজেলার ৭ ইউপি চেয়ারম্যানকে উপদেষ্টা ও তাহিরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে সভাপতি করে পৃথকভাবে আইনশৃঙ্খলা রক্ষা, উৎসব উদযাপন ও মেডিকেল টিম গঠন করা হয়েছে।
উৎসবের সার্বিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা ও প্রস্তুতি প্রসঙ্গে তাহিরপুর থানার অফিসার ইনচার্জ সৈয়দ মোহাম্মদ ইফতেখার হোসেন জানান, আখড়াবাড়ি, পণাতীর্থ ধামে গঙ্গাস্নান, গড়কাটি ইসকন মন্দির, বারুণী মেলা ও ওরস মোবারক আস্তানায় পুলিশ, বিজিবি, আনসার সদস্যদের সমন্বয়ে গঠিত যৌথবাহিনীর ৪টি অস্থায়ী ক্যাম্প বসানো হয়েছে। এছাড়াও ২জন ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে ২টি ভ্রাম্যমাণ আদালতের পাশাপাশি মেটাল ডিটেক্টর দ্বারা আগতদের দেহ, ব্যাগ তল্লাশীসহ ডিএসবি, সাদা পোশাকধারী পুলিশ, গোয়েন্দা সংস্থার বিশেষ নজরদারি এবং ঝুঁকিপূর্ণ সড়কগুলোতে দিবারাত্রি যাতায়াতকারীদের নিরাপত্তার স্বার্থে পুলিশ ও বিজিবি টহল দল মোতায়েন করা হয়েছে।
প্রসঙ্গত, প্রায় ৭১৮ বছর পূর্বে প্রাচীন হাবেলী রাজ্যের পুরোহিত শ্রী শ্রী অদ্বৈত মহাপ্রভুর বয়োবৃদ্ধ মা অসুস্থ হয়ে শয্যাশায়ী হয়ে পড়েন। এমতাবস্থায় অদ্বৈত মহাপ্রভু তার মায়ের কাছে তার শেষ ইচ্ছের কথা জানতে চাইলে তিনি গঙ্গা¯œানের কথা জানান। এতে চিন্তায় পড়েন প্রভু। মায়ের শারীরিক অবস্থা ভাল না থাকায় তিনি ধ্যানে বসে আরাধনা করে সপ্তগঙ্গার জল একত্র করে এনে সীমান্ত নদী যাদুকাটায় তার মাকে গঙ্গাস্নান করান। সেই থেকে সনাতন ধর্মাবলম্বীরা প্রতি বছর মধুকৃষ্ণা তিথিতে যাদুকাটা নদীতে পুণ্য¯স্নান করে আসছেন। তারা বিশ্বাস করেন যাদুকাটা নদীতে মধুকৃষ্ণা তিথিতে ¯œান করলে অতীতের সকল পাপ মোচন হয়।
অপরদিকে, ৩৬০ আউলিয়ার অন্যতম সফরসঙ্গী ছিলেন হযরত শাহ্ আরেফিন (র.)। তাঁর মৃত্যু কোথায় হয়েছে তার কোন সঠিক ইতিহাস খুঁজে পাওয়া যায়নি। অনেকেই তাঁকে জিন্দাঅলি বলে থাকেন। তাহিরপুরের লাউড়েরগড় সীমান্তের ওপারে ভারতের মেঘালয় রাজ্যের ঘোমাঘাট এলাকায় পাহাড়ের গুহায়ও তার আস্তানা রয়েছে। জানা যায়, তিনি সেখানে পাহাড়ের গুহায় বসে নীরবে সৃষ্টিকর্তার নৈকট্য লাভের আশায় ইবাদত বন্দেগী করতেন। সেখানে ওনার নামাজ পড়ার স্থানে দাগ ও ৭টি ছোট ছোট কূপ রয়েছে। প্রাচীনকাল থেকে উনার নামে মানত করে অনেকে অনেক রোগ-বালাই ও বিপদ-আপদ থেকে মুক্তি পেয়েছেন বলে কথিত রয়েছে। সেই থেকে প্রতি বছরের চৈত্র মাসে ভারতের ঘোমাঘাট ও বাংলাদেশের লাউড়েরগড় সীমান্তবর্তী আস্তানায় তার ওরস পালন করে আসছেন মুসলমান ধর্মানুসারীরা।
প্রায় দেড় যুগ পূর্বে ওরসকালীন ভারতের সীমান্ত খুলে দেয়া হতো। উভয় দেশের লোকজন ওরস ও মেলাস্থলে আসা-যাওয়া করতেন নির্বিঘেœ। এরপর এক বছর একটি অপ্রীতিকর ঘটনার পর থেকে সীমান্ত বন্ধ করে দেয় ভারতীয় কর্তৃপক্ষ। এরপর থেকে ওরস চলাকালীন উভয় দেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনী সীমান্তে কড়া নজরদারি করে আসছে।

 

 

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর

© All rights reserved © 2016-2021
Theme Developed By ThemesBazar.Com