গত বুধবার পত্রিকায় (দৈনিক সুনামকণ্ঠ, ২৯ ডিসেম্বর ২০২২) প্রকাশিত সংবাদ থেকে জানাযায় যে, বিগত বোরো মৌসুমে ২০২১-২০২২ অর্থ বছরের তুলনায় এবারে হাওরের ফসলরক্ষাবাঁধ নির্মাণে অতিরিক্ত ৪৪ কোটি টাকা বরাদ্দ বাড়ানো হয়েছে। এই বর্ধিত বরাদ্দকে হাওর বাঁচাও আন্দোলন অসঙ্গত বলে মন্তব্য করেছেন। বলা হয়েছে, ‘তাঁদের মতে অন্যান্য বারের মতো এবারও অনেক অপ্রয়োজনীয় প্রকল্প গ্রহণ করে সরকারি টাকা লুটপাটের পাঁয়তারা করছে একটি মহল। গেল বছরের অনেক বাঁধ অক্ষত থাকলেও সেসব বাঁধে প্রকল্প গ্রহণ করে বেশি বরাদ্দ বাগিয়ে আনার অভিযোগ করা হয় সংগঠনের পক্ষ থেকে।’
এরপর যা বলতে হয় বা বলা উচিত তা অনেকের পক্ষ থেকে অনেকবার বলা হয়ে গেছে ভিন্ন ভিন্ন পরিপ্রেক্ষিতে ও পরিবেশনায়। এই ‘অনেকের পক্ষ থেকে অনেকবার বলা’ বিষয়টিকে লোকেরা ‘দুর্নীতি’ বলেন। এই দুর্নীতির অনেক রকমফের। তার বহুবিধ ধরণ প্রকরণের ফিরিস্তি টানাও একটা ঝকমারি বিষয়। পাউবো’র (পানি উন্নয়ন বোর্ডের) নিয়ন্ত্রণাধীন হাওরের ফসলরক্ষা বাঁধের ক্ষেত্রে বিভিন্নরূপে প্রকরণে এই দুর্নীতির আবির্ভাব ঘটে থাকে। লোকেরা প্রতিবাদ করেন এবং প্রতিরোধের চেষ্টারও ত্রুটি করেন না, এমনকি প্রতিবাদ করার পরিপ্রেক্ষিতে সুনামগঞ্জের একজন আন্দোলক আজাদ মিয়াকে হত্যা পর্যন্ত করা হয়েছে। কিন্তু পাউবোকে ঠেকানো যায়না কীছুতেই। পাউবো বারবার ভোল পাল্টে দুর্নীতির অপকর্মটি ঠিকই করে। কেউ ঠেকাতে পারে না। ঠেকানোর প্রধান কা-ারি প্রশাসন সে-টা কখনওই করেনা বরং স্বভাব নিয়মে নির্বিকার থাকে। এবারও সেই নির্বিকারত্বের মওকায় পাউবো অপ্রয়োজনীয় প্রকল্প বাড়িয়েছে এবং তার চেয়েও বেশি বাড়িয়ে এনেছে বরাদ্দ। এই প্রচেষ্টা প্রকরণ বরাদ্দের টাকা নয়ছয় করার পাঁয়তারাকেই প্রতিপন্ন করে।
আমাদের বক্তব্য একটাই, এটা হতে পারে না। যথাযথ কর্তৃপক্ষের বরাবরে ভাটিবাংলার কৃষকশ্রেণির পক্ষ থেকে আমাদের দাবি এই যে. এই দুর্নীতিকে প্রশাসনের পক্ষ থেকে প্রতিহত করা হোক। এই মওকায় বলে রাখি, কেউ হয় তো ভাবতে পারেন যে, এটাকে (ফসলরক্ষা বাঁধ নিয়ে দুর্নীতিকে) প্রতিরোধ করা যায় না। আসলে যায়, অসম্ভব কোনও ব্যাপার নয় এবং সম্ভব করে দেখিয়েছিলেন সুনামগঞ্জের সাবেক জেলা প্রশাসক মো. সাবরিুল ইসলাম। আমরা প্রশাসনের পক্ষ থেকে আবারও দৃষ্টান্ত স্থাপনার্থে তাঁর পদাঙ্ক অনুসরণের অপেক্ষায় আছি।