দলের ভেতরে বিরোধ থাকতেই পারে, থাকাই স্বাভাবিক বরং না থাকাটাই অস্বাভাবিক এবং সে-বিরোধকে অবশ্য অবশ্যই আদর্শিক হতে হবে, আদর্শিকতা বিবর্জিত কোনও বিরোধই কোনও রাজনীতিক দলের পক্ষে রাজনীতির নিয়মানুসারে কাম্য হতে পারে না। কিন্তু সে-বিরোধ যদি আদর্শিকতা বির্জিত হয়ে একেবারে সহিংসতা পর্যন্ত গড়ায়, তবে বলতেই হয় ওই রাজনীতিক দলের দলীয় পরিসরে রাজনীতি বলে কীছু অবশিষ্ট নেই বরং যদি কীছু থাকে সেই থাকাকে রাজনীতি বলে অভিহিত করা যায়না বা করার সর্বার্থে কোনও সার্থকতা নেই। দলের ভেতরে কোনও ব্যক্তিবিশেষ বা ব্যক্তিযূথের আধিপত্য বিস্তারের রাজনীতি আদর্শিকতার অনুকূল না হয়ে বৈষয়িক স্বার্থনুকূল হয়ে পড়লে সেটা কোনও রাজনীতিক দলের জন্য কোনও যুক্তিতেই মঙ্গলজনক নয়। গত সোমবার (১৪ নভেম্বর ২০২২) দিরাই উপজেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলনে সম্মেলন মঞ্চে কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দের উপস্থিতিতে বিবদমান দুই উপদলের সংঘর্ষে অনেকে আহত হয়েছেন। দৈনিক সুনামকণ্ঠের প্রতিবেদন থেকে ৫০ জন আহত হয়েছেন বলে জানাযায়।
এই ঘটনা কেবল দিরাইয়ের নয় বোধকরি সারা দেশেরই রাজনীতির চালচিত্রের খবর পরিবেশন করছে। বিগত জাতীয় ও স্থানীয় নির্বাচনে দলের প্রার্থী মনোনয়ন পাওয়া ও না পাওয়ার জের ধরে দলের ভেতরে বিরোধ-বিভক্তির দ্বন্দ্বিকতা চলছে এবং প্রতিনিয়ত বাড়ছে। দিরাইয়ে এই বিরোধ সংঘর্ষে রূপ নিয়ে দলীয় রাজনীতির ভেতরে আধিপত্যধর্মী অরাজনীতিক নৈরাজ্যিকতার ব্যাপক বিস্তার ঘটেছে, এই সত্যকে জনসমক্ষে প্রতিপন্ন করছে। এরকম আদর্শবিবর্জিত রাজনীতি কোনও কোনও ব্যক্তি বিশেষ বা ব্যক্তিযূথের বৈষয়িক মঙ্গলসাধন করতে পারলেও সাধারণ মানুষের জন্য অকল্যাণ বয়ে আনতেই ব্যাপক ভূমিকা রাখবে, তাতে কোনও সন্দেহ নেই এবং ইতোমধ্যে দেশের আর্থসামাজিক ব্যবস্থা কাঠামোর বাস্তবতার পরিসরে তার ব্যাপক প্রভাব পরিলক্ষিত হচ্ছে। গণমাধ্যমে পরিবেশিত হাজার হাজার প্রতিবেদন দেশের সে-বাস্তবতাকেই তোলে ধরছে। কোনও রাজনীতিক দলের এমন পরিণতি দেশের জনগণ আশা করেন না। আমরা আশা করছি আওয়ামী লীগ দলীয় পর্যায়ে এই রাজনীতিক নৈরাজ্যিকতাকে নির্মূল করে দেশের ভেতরে নৈরাজ্য বিস্তারের পথ রুদ্ধ করে দিতে সক্ষম হবে।