এস ডি সুব্রত ::
কমরেড প্রসূন কান্তি বরুণ রায় এক মৃত্যুঞ্জয়ী নাম, এক কিংবদন্তির নাম, একটি ইতিহাসের নাম। এই ইতিহাস হচ্ছে মানুষের মৌলিক অধিকারের, আন্দোলন ও সংগ্রামের ইতিহাস। মাটি ও মানুষের কল্যাণের জন্য তিনি ছিলেন নিবেদিত প্রাণ। তিনি ছিলেন একজন সংস্কারমুক্ত অসাম্প্রদায়িক মানুষ। তাঁর আজীবনের স্বপ্ন ছিল শোষণহীন অসাম্প্রদায়িক সমাজ প্রতিষ্ঠা। সুবিধাবঞ্চিত মানুষের জন্য তিনি লড়াই করে গেছেন। বারবার সুযোগ পেয়েও তিনি লোভ-লালসা থেকে দূরে ছিলেন। কোন কালিমা তাকে ¯পর্শ করতে পারেনি। তাঁর জীবনযাপন ছিল সাধারণ মানুষের মতো অত্যন্ত সহজ ও সরল। তিনি ছিলেন বামপন্থি আদর্শের এক অকুতোভয় সৈনিক। তিনি ছিলেন মহান মুক্তিযুদ্ধের এক সফল সংগঠক। তিনি ভাসানপানিতে মাছ ধরার আন্দোলনে নেতৃত্ব দিয়েছেন। বরুণ রায় আজীবন মানুষের অধিকার আদায়ের জন্য রাজনীতি করেছেন। সৎ, নির্লোভ আর নির্মোহ রাজনীতির প্রবাদপুরুষ বরুণ রায়। সা¤্রাজ্যবাদ আর পুঁজিবাদের বিরুদ্ধে ছিলেন সর্বদা সোচ্চার। দুই বার সংসদ সদস্য হয়েও নিজের জন্য কিছু করেননি।
ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলন, পাকিস্তানবিরোধী আন্দোলন, ঊনসত্তরের গণঅভ্যুত্থান, মুক্তিযুদ্ধে অগ্রপথিক ছিলেন বরুণ রায়। ক্ষমতার সাথে কখনো আঁতাত করেননি, অন্যায়ের সাথে আপোষ করেননি। ১৯৪৮ ও ১৯৫৮ সালে দুবার ১০ বছর জেল খেটেছেন। আরও বিভিন্ন সময়ে ২/৩ বছর জেল খেটেছেন। মহান মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক, সাবেক দুইবারের সংসদ সদস্য, ভাসানপানি আন্দোলনের প্রবক্তা, কৃষক ও গণমানুষের ত্যাগী নেতা, প্রয়াত সুরঞ্জিত সেন গুপ্ত’র মতো বহু জাতীয় নেতার রাজনৈতিক দীক্ষাগুরু প্রয়াত কমরেড বরুণ রায়।
সুনামগঞ্জ জেলা তথা বাংলাদেশের গর্বিত সন্তান কমরেড বরুণ রায়। বরুণ রায়ের জীবদ্দশায় তাকে ঘিরে স্বপ্ন দেখতেন এ যুগের বিপ্লবীরা। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, সরদার ফজলুল করিম, মণি সিংহ, প্রফেসর মোজাফফর আহমদ, তাজউদ্দীন আহমদ, আব্দুস সামাদ আজাদ, পীর হাবিবুর রহমানসহ জাতীয় নেতাদের সাথে জেল খেটেছেন।