গত রোববার (৬ নভেম্বর ২০২২) দৈনিক সুনামকণ্ঠের এক সংবাদ প্রতিবেদনে প্রকাশ যে, শান্তিগঞ্জ উপজেলার পিঠাপশী গ্রামের পশ্চিমে জাইর হাওরের বনহাইর বাঁধ কেটে দিয়ে পানি শুকিয়ে হাওরের মাছ মারার জন্যে প্রভাবশালীরা কেটে দিয়েছে। এতে করে পানির অভাবে বোরোধানের চাষ ব্যাহত হবে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট কৃষকরা। এই অন্যায়ের প্রতিকার চাইছেন তাঁরা।
বিশেষভাবে কাউকে বলে বুঝিয়ে দেওয়ার দরকার নেই যে, এবার ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের কারণে বিশ্বজুড়ে মন্দা দেখা দেবে এবং ইতোমধ্যেই বিশ্বের সকল দেশেই দুর্ভিক্ষের পদধ্বনি শোনা যাচ্ছে, বাংলাদেশও তার ব্যতিক্রম নয় এবং সে-টা দেশে ইতোমধ্যেই ব্যাপক মূল্যস্ফীতির আকারে প্রকটিত হচ্ছেÑ বলতে গেলেÑ দুর্ভিক্ষের পূর্বাভাস দেশের ঘাড়ে এক রকম হামলে পড়েছে এবং দেশ পরিচালকরা দেশে খাদ্যোৎপাদনের প্রতি বিশেষ জোর দিয়েছেন, কৃষকদেরকে বেশি করে ধান উৎপাদনে উৎসাহী করতে বিভিন্ন ধরণের প্রচারণা-প্রণোদনা চলছে। আর এদিকে শান্তিগঞ্জের প্রভাবশালীরা ধানচাষের কাজে ব্যবহারের প্রয়োজনে বাঁধ দিয়ে ধরে রাখা জল শুকিয়ে মৎস্য শিকারের ওসিলায় জল সংরক্ষণ বাঁধ কেটে দিয়ে ফসলী জমি পতিত রাখার ব্যবস্থা করছেন এবং প্রকারান্তরে সরকারকে জানিয়ে দিয়েছেন যে, আমরা সরকারের দুর্র্ভিক্ষ মোকাবেলার জন্যে বেশি করে ধান ফলানোর নীতি সমর্থন করি না, বরং সে – নীতি বাস্তবায়নের চেয়ে জল সংরক্ষণের বাঁধ কেটে দিয়ে জল শুকিয়ে মাছ শিকার করে অধিক ধান ফলানোর নীতিকে ব্যর্থ করে দিয়ে নিশ্চিত দুর্ভিক্ষকে ডেকে আনাই আমাদের নীতি। এর বিপরীতে আমরা বলতে বাধ্য যে, এভাবে বাঁধ কেটে দেওয়ার কাজ দেশের বর্তমান ক্রান্তিলগ্নে অন্তর্ঘাত ভিন্ন অন্য কোনও কীছু বলে বিবেচিত হতে পারেনা এবং অপরাধ হিসেবে অন্তর্ঘাত অবশ্যই ক্ষমাহীন দেশদ্রোহিতার পর্যায়ে পড়ে। দুর্ভোগে পড়া কৃষকরা এর প্রতিকার প্রত্যাশা করে এই অন্যায়ের সুষ্ঠু বিচার চাইছেন। তদুপরি এইরূপ অন্তর্ঘাতমূলক কার্যকলাপের প্রতিকার করতে প্রশাসনিক পর্যায়ে সরকারি ইতিকর্তব্য কী হবে, সে-বিষয়ে কোনও বক্তব্য বিস্তারের প্রয়োজন পড়ে না। কেবল বলি, এইসব দেশদ্রোহী প্রভাবশালীদের প্রতি নজর দিন, এদের যথোপযুক্ত দ- বিধান করে দেশকে রক্ষা করুন এবং এই পরিপ্রেক্ষিতে পরিকল্পনামন্ত্রীর প্রতিকার প্রচেষ্টার প্রত্যাশা করছেন ভুক্তভোগীরা।