1. [email protected] : admin2017 :
  2. [email protected] : Sunam Kantha : Sunam Kantha
  3. [email protected] : wp-needuser : wp-needuser
শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১২:৫৬ অপরাহ্ন
ঘোষণা ::
সুনামগঞ্জ জেলার জনপ্রিয় সর্বাধিক পঠিত পত্রিকা সুনামকন্ঠে আপনাকে স্বাগতম। আমাদের পাশে থাকার জন্য সকলকে আন্তরিক অভিনন্দন। আমাদের পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দিতে যোগাযোগ করুন - 01711-368602

শিক্ষকের পায়ে ধরেও নির্যাতন থেকে রেহাই পায়নি এতিম শিশুটি

  • আপডেট সময় বুধবার, ১৭ নভেম্বর, ২০২১

বিশেষ প্রতিনিধি ::
ছাতকে এতিম শিশুকে বেধড়ক পেটানোর লোমহর্ষক একটি ভিডিও ভাইরাল হয়েছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। দুই মিনিট ৬ সেকেন্ডের ওই ভিডিওতে দেখা গেছে শ্রেণিকক্ষে স্টিলের স্কেল দিয়ে ৮-৯ বছর বয়সী এক শিশুকে বেধড়ক পেটাচ্ছেন প্রতিষ্ঠান প্রধান মাওলানা আব্দুল মুকিত। তার কবল থেকে রক্ষা পেতে ওই শিক্ষকের পায়ে ধরেও রেহাই পায়নি কোমলমতি শিশুটি।
কয়েক মাস আগে নির্যাতনের দৃশ্যটি ধারণ করা হলেও দু’দিন আগে এটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শেয়ার করেছেন স্থানীয় নেটিজেনরা। মুহূর্তেই ভিডিও ভাইরাল হলে ওই এই ঘটনায় নিন্দার ঝড় বাইতে শুরু করে। সংশ্লিষ্ট শিক্ষককে বিচার দাবি করেন সর্বস্তরের মানুষ।
শিশু নির্যাতনকারী মাওলানা মো. আব্দুল মুকিত ছাতক উপজেলার হাজি ইউসুফ আলী এতিমখানা হাফিজিয়া দাখিল মাদরাসার সুপার পদে ছিলেন। দীর্ঘদিন ধরে কারণে-অকারণে এতিম শিশুদের নির্যাতন তার অভ্যাসে পরিণত হয়েছে বলে জানান স্থানীয়রা। এর আগে কর্তৃপক্ষ বিষয়টি জানলেও তার বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেননি।
শিশু নির্যাতনের লোমহর্ষক ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ার পর ব্যাপক প্রতিক্রিয়া দেখা দিলে সুপার মো. আব্দুল মুকিতকে চাকরি থেকে অব্যাহতি দিয়ে দায় সেরেছে কর্তৃপক্ষ। রহস্যজনক কারণে তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের কোনও উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। মুকিত ইতোমধ্যে অন্য একটি মাদ্রাসায় চাকরি নিয়েছেন বলে জানা গেছে।
ভাইরাল ভিডিওতে দেখা গেছে, পাজামা-পাঞ্জাবি পরিহিত তিনজন এতিম শিশু রাজাপুর গ্রামের আবু তাহের, শফিউর রহমান ও নিলয় মিয়া জরোসরো হয়ে সুপার মুুকিতের সম্মুুখে দাঁড়িয়ে আছে। জানা গেছে, শফিউর ও নিলয়কে এর আগে পিটিয়েছেন ওই শিক্ষক। এরপর ৮-৯ বছরের আবু তাহেরকে দুই হাত এগিয়ে দিতে বলেন। নির্দেশ পেয়ে শিশুটি হাত এগিয়ে দিলে স্টিলের স্কেল দিয়ে বেধড়ক পেটাতে শুরু করেন তিনি। এক পর্যায়ে সহ্য করতে না সুপারের পায়ে জড়িয়ে ধরে শিশুটি। এতেও মন গলেনি ওই শিক্ষকের। মাত্রা বাড়ি দিয়ে শরীরের বিভিন্ন স্থানে স্টিলের স্কেল দিয়ে একের পর এক আঘাত করতে থাকেন। সহ্য করতে না পেরে ‘হুজুর আফনার ফা’ত ধরি, হুজুর। আফনার ফা’ত ধরি। ও মাই গো। হুজুর আফনার ফা’ত ধরি। আল্লা গো আর জীবনে ইতা খরতাম না’ আর্র্তচিৎকার করতে থাকে শিশুটি। সর্বশক্তি দিয়ে দুই মিনিটের বেশি সময় ধরে দানবীয় ভঙ্গিতে শিশুটিকে পেটাতে থাকেন ওই শিক্ষক। নির্যাতন অব্যাহত থাকা অবস্থায় গোপন ক্যামেরা বন্ধ হয়ে গেলে শিশুটির পরিণতি দেখা যায়নি।
জানা গেছে, কয়েক মাস আগে গোপন ক্যামেরায় ধারণ করাও শিশু নির্যাতনের ওই ভিডিওটি এতিমখানার যুক্তরাজ্য প্রবাসী পরিচালকদের দৃষ্টিগোচর হলে তারা তাকে শাস্তির না দিয়ে মাদ্র্রাসা থেকে অব্যাহতি দেন। গত ৬ নভেম্বর প্রতিষ্ঠানের পরিচালনা কমিটির সভাপতি কমর উদ্দিন স্বাক্ষরিত অব্যাহতিপত্রে উল্লেখ করা হয়েছে, এর আগেও এতিম শিশুদের পেটানোর কথা কর্তৃপক্ষের কাছে স্বীকার করেছেন সুপার মুকিত। পরিচালনা কমিটি বারবার সতর্ক করার পরও এতিম শিক্ষার্থীদের গালাগালি, শারীরিক ও মানসিক প্রহার পরিত্যাগ না করায় তাকে প্রতিষ্ঠান থেকে অব্যাহতি প্রদান করা হয়েছে।
ছাতক থানার অফিসার ইনচার্জ মো. মিজানুর রহমান বলেন, নির্যাতনের ভিডিওটি পুরনো। সম্প্রতি ভাইরাল হয়েছে। আমাদেরও দৃষ্টিগোচর হয়েছে। আমরা এ নিয়ে কাজ করছি। অভিযুক্ত শিক্ষকের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর

© All rights reserved © 2016-2021
Theme Developed By ThemesBazar.Com