1. [email protected] : admin2017 :
  2. [email protected] : Sunam Kantha : Sunam Kantha
  3. [email protected] : wp-needuser : wp-needuser
শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ০২:৩৫ পূর্বাহ্ন
ঘোষণা ::
সুনামগঞ্জ জেলার জনপ্রিয় সর্বাধিক পঠিত পত্রিকা সুনামকন্ঠে আপনাকে স্বাগতম। আমাদের পাশে থাকার জন্য সকলকে আন্তরিক অভিনন্দন। আমাদের পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দিতে যোগাযোগ করুন - 01711-368602

ক্রিকেট খেলার স্মৃতি

  • আপডেট সময় বৃহস্পতিবার, ২৯ এপ্রিল, ২০২১

:: বিকাশ রঞ্জন চৌধুরী (ভানু) ::
১৯৬৭ সালে এসএসসি পাস করে সুনামগঞ্জ সরকারি কলেজে একাদশ শ্রেণিতে ভর্তি হই। তারপর ক্রিকেটের সাথে আরও বেশি করে জড়িয়ে পড়ি। কলেজ টিমের বাইরেও সুনামগঞ্জ শহরের মোক্তারপাড়ার মৌলা বক্স করিম বক্সের বাসায় আমরা শহরের কয়েকজন মিলে একটি ক্রিকেট টিম গঠন করি। যে টিমের নাম ছিল, SPARRK CRICKET CLUB (SCC) স্পার্ক ক্রিকেট ক্লাব। সেই টিমে আমার দাদা সরকারি জুবিলী উচ্চ বিদ্যালয়ের অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক অজয় কুমার চৌধুরী (বেণু স্যার), সুনামগঞ্জ সরকারি কলেজের শিক্ষক আতিক বক্স, উত্তরা ব্যাংকের কর্মকর্তা বরুণ চন্দ, সুনামগঞ্জ সরকারি কলেজের শিক্ষক অধ্যাপক মুকুল কান্তি চৌধুরী (প্রয়াত), সুনামগঞ্জ জেলা বারের বিজ্ঞ সিনিয়র আইনজীবী অ্যাড. হুমায়ূন মঞ্জুর চৌধুরী, সুনামগঞ্জের ঐতিহ্যবাহী বামা ফার্মেসির সত্ত্বাধিকারী রজত কান্তি দাস (প্রয়াত), এছাড়াও এই মুহূর্তে অনেকের নাম মনে পড়ছে না বলে আপনাদের কাছে ক্ষমাপ্রার্থী। সেই সময় (স্বাধীনতা পূর্বকালীন এবং স্বাধীনতা উত্তর সময়) সুনামগঞ্জের ক্রিকেট অঙ্গন খুব জমজমাট ছিল। SPARK, YCC, PHANTOM এবং কলেজ টিমসহ আরও কয়েকটি ক্রিকেট টিম ছিল। তখনকার সময়ে যারা ক্রিকেট খেলেছেন তাদের মধ্যে (যাদের নাম এই মুহূর্তে স্মরণে আছে) ছিলেন- শ্রদ্ধেয় মোহাম্মদ আলী স্যার (প্রয়াত), জনাব বশির উদ্দিন (নানু মিয়া) অ্যাডভোকেট, অধ্যাপক মুকুল কান্তি চৌধুরী (প্রয়াত), তরুণ কান্তি ভদ্র (প্রয়াত), রানা চৌধুরী (প্রয়াত), শ্রদ্ধেয় শিক্ষক আছদ্দর আলী ভূঁইয়া (প্রয়াত), বীর মুক্তিযোদ্ধা আছদ্দর আলী (প্রয়াত), ছানা তালুকদার (প্রয়াত), ছবুর আহমদ, রজত কান্তি দাস (প্রয়াত), ফজলুল হক (প্রয়াত), নূরুল হক আম্বিয়া (প্রয়াত)সহ আরও অনেকে। যাদের নাম মনে করতে পারি নাই তাদের পরিবারের কাছে আমি ক্ষমাপ্রার্থী। যারা ইহজগতে আছেন তারা হলেন- অবসরপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক অজয় কুমার চৌধুরী, অ্যাড. হুমায়ূন মঞ্জুর চৌধুরী, সুশান্ত কুমার দে (যীশু), দেওয়ান শফিকুস সাবেরীন, নীরোদ রঞ্জন নাথ, সঞ্জীব কুমার, বিজিত পুরকায়স্থ, বরুণ চন্দ, অ্যাড. রবিউল লেইস রোকেশ, দিপাংকুর দাস, নূপুর চৌধুরী, অরুণ দে, অভিজিৎ চৌধুরীসহ আরও অনেকে। অনেকের নাম মনে না থাকায় আমি তাদের কাছে ক্ষমাপ্রার্থী।
আমি যাদের সাথে ক্রিকেট খেলেছি তারা কেউ প্রয়াত আবার কেউ এখনও জীবিত আছেন। যাদের কথা বিশেষভাবে মনে আছে তারা হলেন, আলীমাবাগের সবুর ভাই (প্রয়াত), নতুনপাড়ার নীরোদ দা (প্রয়াত), হাছননগরের তরুণ ভদ্র (প্রয়াত) এবং উকিলপাড়ার সঞ্জীব দা। এদের মধ্যে তরুণ ভদ্র ছিলেন ব্যাটসম্যান, বাকি তিনজনেই ছিলেন দুর্দান্ত ফাস্ট বোলার। তরুণ ভদ্র ‘আবু কাট’ নামে পরিচিত ছিলেন। জুবিলী স্কুলের হয়েও আমি এই মাঠে অনেক ম্যাচ খেলেছি। আমার এই সমস্ত কর্মকাণ্ডের সাথে যার অবদান সবচেয়ে বেশি ছিল তিনি হলেন সরকারি জুবিলী সেই সময়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক আমার শ্রদ্ধেয় ও প্রিয় শিক্ষক প্রয়াত মোহাম্মদ আলী স্যার। স্যারের জীবদ্দশায় আমি স্যারের সহিত একসাথে সুনামগঞ্জ স্টেডিয়ামে ক্রিকেট খেলেছি। স্যার ছিলেন একজন দক্ষ এবং অভিজ্ঞ ব্যাটসম্যান। স্যারকে আউট করা খুব কঠিন ও কষ্টকর ছিল। তিনি অত্যন্ত নিপুণ হস্তে দক্ষতার সহিত ব্যাট করতেন।
স্বাধীনতা পূর্ব ও উত্তর আমি সুনামগঞ্জ এবং সুনামগঞ্জের বাহিরে ক্রিকেট খেলেছি। এক সময়ে সুনামগঞ্জ কলেজের অধ্যাপক করুণাময় চৌধুরী (প্রয়াত) আমাদের কলেজ টিমকে নিয়ে আন্তঃকলেজ ক্রিকেট টুর্নামেন্টে অংশগ্রহণের উদ্দেশ্যে সিলেট নিয়ে যান। সিলেটের এমসি কলেজের মাঠে খেলা হয়। আমি সুনামগঞ্জ কলেজ ক্রিকেট দলের একজন নিয়মিত ব্যাটসম্যান ছিলাম। এরপর হবিগঞ্জের জালাল স্টেডিয়ামে সুনামগঞ্জ দলের হয়ে খেলেছি। আমি ছিলাম ব্যাটসম্যান এবং স্লিপে ফিল্ডিং করতাম। ১৯৭৭ সালের সেপ্টেম্বর মাসে আমি বাংলাদেশ কৃষিব্যাংকে চাকরিতে যোগদান করি। তারপর থেকেই আমার আর ক্রিকেট খেলা সম্ভব হয়ে উঠেনি। একরকম অঘোষিত অবসরেই চলে যেতে হয়।
তারপরও খেলার সিজনে যখন বাহির থেকে বাসায় আসতাম তখন স্টেডিয়ামে যেতাম আর খেলা উপভোগ করতাম। খুব ভালো লাগতো, কারণ ক্রিকেট আমার সবচেয়ে প্রিয় খেলা। তখনকার সময় সরাসরি খেলা দেখার সুবিধা না থাকার কারণে আমি ক্রিকেট খেলার ধারাভাষ্য রেডিওতে শুনতাম। আমার একটা পকেট রেডিও ছিল। ব্যাটারি দিয়ে চলত।
স্মরণীয় স্মৃতিকথন :
স্কুলে থাকাবস্থায় পাড়ায় পাড়ায় ক্রিকেট টিমের মধ্যে প্রতিযোগিতা হতো। স্কুলে পড়ার সময়ের কথা, সম্ভবত হাছন নগর ক্রিকেট টিমের সাথে আমাদের উকিলপাড়া ক্রিকেট দলের খেলার সময় আমি যখন ব্যাট করছিলাম তখন প্রতিপক্ষ দলের বোলারের করা একটি বল সরাসরি আমার নাকের উপরের দিকে আঘাত করে এবং তাৎক্ষণিকভাবে আমার নাক ফেটে রক্ত পড়তে থাকে। আমি তখন মাঠের বাইরে চলে যাই এবং আমাকে অন্য খেলোয়াড়গণ চিকিৎসার জন্য সদর হাসপাতালে (বর্তমানে পুরাতন হাসপাতাল) নিয়ে যান। আমার নাকে তিনটি সেলাই দিয়ে ব্যান্ডেজ করে দেয়া হয়।
চিকিৎসা শেষে মাঠে ফিরে আসার পর পুনরায় আমাকে ব্যাট করতে হয়েছিলো। আমার ক্রিকেট খেলার জীবনে এরকম ঘটনার আর পুনরাবৃত্তি হয়নি। এটি ছিলো আমার ক্রিকেট খেলার জীবনের স্মরণীয় ঘটনা। এখনও আমার নাকে এই ক্ষতচিহ্ন আছে যা দৃশ্যমান। এই ক্ষতচিহ্ন আমৃত্যু থাকবে। এই ক্ষতচিহ্নই আমাকে সবসময় ক্রিকেট জীবনের কথা মনে করিয়ে দেয়।

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর

© All rights reserved © 2016-2021
Theme Developed By ThemesBazar.Com