স্টাফ রিপোর্টার ::
সুনামগঞ্জের বিভিন্ন এলাকায় গত ইউপি নির্বাচনে নৌকা প্রতীকের বিরোধিতাকারী নেতাকর্মীরা এবার নিজেরাই নৌকার মনোনয়নের জন্য মাঠে নেমেছেন। এর মধ্যে অনেকে ওইসময় নৌকার বিরোধিতা করে অব্যাহতি পেলেও তাদেরকেও নৌকা প্রতীকের জন্য মাঠে নির্বাচনী প্রচারণা শুরু করতে দেখা গেছে। এ নিয়ে স্থানীয় নেতাকর্মীদের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে।
সুনামগঞ্জের বিভিন্ন ইউনিয়নের তৃণমূল নেতাকর্মীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ইউনিয়ন নির্বাচনের ডামাঢোল শুরু হয়ে যাওয়ায় সম্ভাব্য প্রার্থীরা মাঠে প্রচারণা শুরু করেছেন। দলীয় প্রতীকের জন্য চেষ্টা তদবিরসহ প্রচারণায় দলীয় পরিচয়ও দিচ্ছেন। তাই গতবার যারা নৌকা পেয়েও এদের বিরোধিতার কারণে বিজয়ী হতে পারেননি তারা ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। তারা নৌকার বিরোধিতাকারীদের বদলে নৌকার পক্ষের ত্যাগী ও নিবেদিতপ্রাণদের মনোনয়নদানের দাবি জানিয়েছেন।
জানা গেছে, লক্ষণশ্রী ইউনিয়নে নৌকার প্রার্থী ইয়াকুব বখত বহলুলের বিরুদ্ধে গিয়ে লক্ষণশ্রী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি আফতাব উদ্দিন কার্যক্রম চালান। এবার তিনিই সেই নৌকা প্রতীকের জন্য প্রচারণা শুরু করেছেন। নৌকার বিরুদ্ধে কাজ করায় গত ২৫/০৮/২০১৬ সনে তাকেসহ তিন নেতাকে বহিষ্কার করে সদর উপজেলা আওয়ামী লীগ। দলীয় প্রার্থীর পরাজয়ে তার ভূমিকা রয়েছে বলে মনে করেন নেতাকর্মীরা। ওই সময় তার বহিষ্কার নিয়ে সুনামগঞ্জের সবগুলো পত্রিকায় সংবাদও প্রকাশিত হয়েছিল।
এদিকে একই উপজেলার কাঠইর ইউনিয়নে নৌকার প্রার্থী এডভোকেট বুরহান উদ্দিনের বিরুদ্ধে গিয়ে বিদ্রোহী প্রার্থী আব্দুল মতিনের পক্ষে প্রচারণা চালান হারুনুর রশিদ। এবার এই হারুনুর রশিদ নিজেই নৌকা প্রতীকের জন্য প্রচারণায় নেমেছেন।
জামালগঞ্জ সদর ইউনিয়নেও একাধিক প্রার্থী নৌকার বিরোধিতা করেছিলেন। তাদের কেন্দ্রে ভরাডুবি ঘটেছিল নৌকার। কিন্তু এবছর তারা নিজেরাই নৌকা প্রতীকে নির্বাচন করার জন্য আগাম প্রচারণা শুরু করেছেন।
আওয়ামী লীগ নেতা অ্যাডভোকেট মিজানুর রহমান বলেন, আমাদের লক্ষণশ্রী ইউনিয়নে কয়েকজন আওয়ামী লীগ নেতা নৌকার প্রার্থী ইয়াকুব বখত বহলুলের বিরোধিতা করেছিলেন। তাদেরকে সদর উপজেলা আওয়ামী লীগ বহিষ্কার করেছিল। এবার তাদের কেউ কেউ সেই নৌকা প্রতীকের জন্য নিজেরাই প্রচারণায় নেমেছেন। তিনি বলেন, দলীয় শৃঙ্খলা রক্ষার স্বার্থে নৌকাবিরোধীদের চিহ্নিত করে নৌকার পক্ষের ত্যাগীদেরই মূল্যায়ন করতে হবে।
অ্যাডভোকেট বুরহান উদ্দিন বলেন, উন্নয়নের প্রতীক নৌকার বিরোধিতা করে যারা এখন নৌকা প্রতীকে নিজেরাই সওয়ার হতে চায় তাদেরকে চিহ্নিত করতে হবে। কারণ তারা তৃণমূলের ঐক্য বিনষ্টই নয় আওয়ামী লীগকেও শক্তিহীন করতে চায়।
জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ব্যারিস্টার এম. এনামুল কবির ইমন বলেন, সম্প্রতি জেলা কমিটির জরুরি বৈঠকেও এ বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। আমরা নৌকার ত্যাগীদেরই মূল্যায়ন করতে চাই।