1. [email protected] : admin2017 :
  2. [email protected] : Sunam Kantha : Sunam Kantha
  3. [email protected] : wp-needuser : wp-needuser
শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১২:৫৩ অপরাহ্ন
ঘোষণা ::
সুনামগঞ্জ জেলার জনপ্রিয় সর্বাধিক পঠিত পত্রিকা সুনামকন্ঠে আপনাকে স্বাগতম। আমাদের পাশে থাকার জন্য সকলকে আন্তরিক অভিনন্দন। আমাদের পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দিতে যোগাযোগ করুন - 01711-368602

নিজেদের খেলার মাঠ ফিরে পেল গারোরা

  • আপডেট সময় রবিবার, ২০ সেপ্টেম্বর, ২০২০

স্টাফ রিপোর্টার ::
নানা জটিলতা শেষে সামাজিক সালিশ ও প্রশাসনের হস্তক্ষেপে নিজেদের প্রতিষ্ঠিত খেলার মাঠ ফিরে পেয়েছে তাহিরপুর সীমান্তের উত্তর বড়দল ইউনিয়নের গারো সম্প্রদায়ের লোকজন। বড়গোপটিলায় ৭২ বছর আগে প্রতিষ্ঠিত গারো মাঠটি গারোদেরই থাকবে বলে ঘোষণা দিলেন তাহিরপুর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা। শনিবার দুপুরে গারো মাঠে গিয়ে উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান করুণা সিন্ধু চৌধুরী বাবুল ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা পদ্মাসন সিংহ এ ঘোষণা দেন। তবে মাঠে আগের মতো পরিচালনা কমিটির নির্দেশনায় আদিবাসী-বাঙালি দুই পক্ষই খেলাধুলা করবে। সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বজায় রেখে আগের মতো খেলাধুলাসহ সামাজিক অনুষ্ঠানে দুই পক্ষকেই যুক্ত থাকার আহ্বান জানিয়েছেন তারা। সাম্প্রদায়িক দাঙ্গার সৃষ্টি করা হলে প্রশাসন কঠোর হাতে দমন করবে বলেও ঘোষণা দেন উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা।
শনিবার দুপুরে গারো মাঠে তৃতীয় বারের মতো মাঠ নিয়ে সালিশ বসে। বৈঠকে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিসহ গণ্যমান্যরা উপস্থিত ছিলেন। বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন- ওসি তদন্ত মিজানুর রহমান, আওয়ামী লীগ নেতা সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান নিজাম উদ্দিন, স্থানীয় উত্তর বড়দল ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আবুল কাশেম, সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান জামাল উদ্দিন, আওয়ামী লীগ নেতা আলমগীর খোকন, এন্ড্রু সলোমার, যুবলীগ নেতা মাসুক মিয়া, শঙ্কর মারাক, রমেশ জুয়েল সলোমার, যতিন্দ্র মারাক, পরিতোষ চাম্বুগং, সুনীল দাজেল, যুবলীগ নেতা আব্দুল মোতালেব প্রমুখ।
বৈঠক শেষে সকলের মতামতের ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত পড়ে শোনান উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান করুণাসিন্ধু চৌধুরী বাবুল। তিনি মাঠ পরিচালনায় গঠিত ৯ সদস্যের কমিটির নাম প্রকাশ করেন। ৯ জনের মধ্যে ৭জন থাকেব গারো সম্প্রদায়ের লোকজন এবং ২জন থাকবে সম্প্রতি টিলায় বসতি স্থাপনকারী বাঙালি। সপ্তাহের ৫ দিন মাঠে গারোরা খেলবে, ২ দিন অন্যরা। এরপর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা গারোদের মাঠ ফিরিয়ে দেবার ঘোষণা দেন। তিনি বলেন, সালিশে এবং স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে আমরা জানতে পেরেছি এই মাঠ প্রতিষ্ঠাকারী গারো সম্প্রদায়ের লোকজন। তাই এই মাঠ আপনাদের ফিরিয়ে দেওয়া হলো। এখন থেকে আপনারা সবাইকে নিয়ে মিলেমিশে আগের মতো খেলাধুলা করবেন। সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বজায় রেখে খেলাধুলাসহ সামাজিক ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিচালনার আহ্বান জানান তিনি। উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও ইউএনও’র সিদ্ধান্তে গারোরা খুশি হন। সিদ্ধান্ত মেনে নেন অন্যরাও।
তাহিরপুর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান করুণা সিন্ধু চৌধুরী বাবুল বলেন, গারোদের প্রতিষ্ঠিত এই মাঠে কৈশোরে আমিও এসে খেলেছি। মাঠটি আগেও গারোদের ছিল। এখনো তাদেরই আছে মাঠটি। সম্প্রতি যে ভুল বুঝাবুঝি হয়েছিল মাঠ বুঝিয়ে দিয়ে আমরা ভুলের অবসান ঘটিয়েছি। আগের মতো সবাই মিলেমিশে খেলবে। আমরা উপজেলা প্রশাসন মাঠের রক্ষণাবেক্ষণের জন্য সহযোগিতা করব।
প্রসঙ্গত ১৯৪৮ সনে জঙ্গল কেটে মাঠ প্রতিষ্ঠা করে খেলাধুলা, আদিবাসী দিবসসহ নানা কর্মসূচি পালন করে আসছিলেন কড়ইগড়া, চানপুর, রাজাইরসহ সীমান্তের কয়েকটি গ্রামের ক্ষুদ্র নৃতাত্বিক গোষ্ঠীর লোকজন। গত তিনমাস ধরে হঠাৎ করে মাঠ দখলের চেষ্টা চালায় বড়গোপটিলার কিছু যুবক। তারা গারো যুবকদের হুমকি ধমকিসহ সাম্প্রদায়িক কথাবার্তা বলে আসছিল। এ নিয়ে গত ১৩ সেপ্টেম্বর বড়গোপটিলা গারো মাঠে সালিশ বসে। ওই বৈঠকেও গারোদের মাঠ প্রতিষ্ঠার অবদানের কথা স্বীকার করেন সালিশকারীরা। সালিশে বিষয়টি নিষ্পত্তি না হওয়ায় জেলা প্রশাসকের নির্দেশে বৃহস্পতিবার দুপুরে ঘটনাস্থলে গিয়েছিলেন তাহিরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা পদ্মাসন সিংহ। ওই দিনও কোন নিষ্পত্তি হয় নি।
মাঠ পরিচালনাকারী সুনীল দাজেল বলেন, আমরা উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাসহ গণ্যমান্যদের সিদ্ধান্তে খুশি।
উল্লেখ্য, বড়গোপটিলার কতিপয় যুবক মাঠ দখলের চেষ্টা করলে এ নিয়ে উত্তেজনা দেখা দেয়। ক্ষুদ্র নৃতাত্বিক গোষ্ঠীর লোকজন মাঠ হারানো নিয়ে উদ্বিগ্ন ছিলেন। এলাকাবাসীর কাছ থেকে নিরপেক্ষভাবে খোঁজ নিয়ে স্থানীয় সংসদ সদস্য ইঞ্জিনিয়ার মোয়াজ্জেম হোসেন রতন এবং জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আব্দুল আহাদ গারোদের প্রতিষ্ঠিত মাঠটি তাদের বুঝিয়ে দিতে নির্দেশ দেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে।

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর

© All rights reserved © 2016-2021
Theme Developed By ThemesBazar.Com