স্টাফ রিপোর্টার ::
সুনামগঞ্জ-৪ আসনের দুটি উপজেলায় সদ্য সমাপ্ত উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে নৌকা প্রতীকে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক ভোট পড়েছে। দুটি উপজেলায় আ.লীগের বিদ্রোহী প্রার্থীসহ নৌকার প্রার্থীরা বিপুল ভোট পাওয়ার বিষয়টি আ.লীগ নেতাকর্মীদের মধ্যে আলোচনার খোরাক যুগিয়েছে। অন্যদিকে এই দুটি উপজেলা পরিষদের ছয়টি পদে কোনো প্রার্থীই দিতে পারেনি জাতীয় পার্টি (জাপা)।
সুনামগঞ্জ সদর উপজেলায় নৌকা প্রতীক নিয়ে জয়ী হয়েছেন জেলা যুবলীগের আহ্বায়ক খায়রুল হুদা চপল। তিনি নৌকা প্রতীকে ভোট পেয়েছেন ৪০ হাজার ৯৭টি। অন্যদিকে তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী সরকারি কলেজের সাবেক ভিপি অ্যাড. মনিষ কান্তি দে মিন্টু পেয়েছেন ২৭ হাজার ৩৭৬ ভোট। দুই প্রার্থীর মোট ভোট ৬৭ হাজার ৪৩৩টি।
বিশ্বম্ভরপুর উপজেলায় জয়ী হয়েছেন উপজেলা যুবলীগের সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক সফর উদ্দিন। নির্বাচনে সফর উদ্দিনের পক্ষে ছিলেন উপজেলা আ.লীগের সাধারণ সম্পাদক দিলীপ বর্মণসহ অধিকাংশ নেতাকর্মী। বিজয়ী সফর উদ্দিন পেয়েছেন ২৩ হাজার ২৫২ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী আ.লীগের রফিকুল ইসলাম তালুকদার পেয়েছেন ১৭ হাজার ৬০১ ভোট। দুই প্রার্থীর মিলিত ভোট ৪০ হাজার ৮৫৩টি।
বিশ্বম্ভরপুর উপজেলায় বিএনপি’র এক বহিষ্কৃত প্রার্থী থাকলেও তিনি মূল লড়াইয়ে আসতে পারেন নি। আ.লীগের প্রার্থী এবং বিদ্রোহীর মধ্যেই মূল লড়াই ছিল। দুই প্রার্থীর মিলিত ভোটের অর্ধেকও পাননি বিএনপি ঘরানার মোহাম্মদ হারুনুর রশিদ।
দুই উপজেলায় আ.লীগ এবং আ.লীগের বিদ্রোহী ভোটের হিসাব নেতাকর্মীদের কাছে আলোচনার খোরাক যুগিয়েছে। তারা বলছেন, দুটি উপজেলায় নৌকা প্রতীকে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক ভোট পড়েছে। আ.লীগের নেতাকর্মীরা বিভক্ত হয়েই চার প্রার্থীকে ভোট দিয়েছেন।
অন্যদিকে সুনামগঞ্জ-৪ (সুনামগঞ্জ সদর-বিশ্বম্ভরপুর) সংসদীয় আসনটি দীর্ঘদিন ধরেই জাপা’র দখলে। ২০০৮ সাল থেকে শুরু করে ২০১৮ সাল পর্যন্ত মহাজোটের শরীক হিসেবে জাপা আসনটি পায়। আ.লীগ এ আসনটি তিনটি জাতীয় নির্বাচনে জাপাকে ছাড় দেয়। সংসদীয় আসনের এমপি জাতীয় পাটির থাকার পরও সদ্য সমাপ্ত নির্বাচনে দুটি উপজেলায় কোনো প্রার্থীই দিতে পারেনি তারা। সদর ও বিশ্বম্ভরপুরে চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান এবং মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে কোন প্রার্থী ছিল না জাপা’র। সদরে ভাইস চেয়ারম্যান এবং নারী ভাইস চেয়ারম্যান পদে সব প্রার্থীই ছিল আ.লীগ ও অঙ্গ সংগঠনের। অন্যদিকে বিশ্বম্ভরপুর উপজেলায় ভাইস চেয়ারম্যান ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে ক্ষমতাসীন আ.লীগ ছাড়াও বিএনপি’র নেতা-নেত্রীরাও নির্বাচন করেছেন। উল্টো বিশ্বম্ভরপুর উপজেলায় নৌকার প্রার্থী রফিকুল ইসলামের পক্ষে সংসদ সদস্য অ্যাড. পীর মিসবাহ প্রচারণা চালালেও জয়ী হন বিদ্রোহী প্রার্থী সফর উদ্দিন।
আ.লীগ নেতাকর্মীরা বলছেন, দীর্ঘদিন ধরেই সুনামগঞ্জ-৪ আসনটি জাপার দখলে। আ.লীগ জাপাকে আসনটি বার বার ছাড় দিয়েছে। অথচ এখানে ভোটব্যাংক নৌকার। অন্যদিকে জাপা দুটি উপজেলায় ছয়টি পদে কোনো প্রার্থীই দিতে পারেনি।
জেলা আ.লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক জুনেদ আহমদ বলেন, সুনামগঞ্জ-৪ আসনটি বরাবরই আ.লীগের ঘাঁটি। সদ্য সমাপ্ত উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে তা প্রমাণ হয়ে গেছে। দুটি উপজেলায় ছয়টি পদেই আ.লীগ পরিবারের জয়জয়কার। এটা আমাদের জন্য আশা জাগানিয়া ব্যাপার।