বিশেষ প্রতিনিধি ::
১৫ দিন সময় বাড়ানোর পর তিনদিনে ফসলরক্ষা বাঁধের কাজে ৩ ভাগ উন্নতি হয়েছে। গতকাল ৩ মার্চ পর্যন্ত পানি উন্নয়ন বোর্ডের মতে জেলায় গড়ে ৮৯ ভাগ কাজ শেষ হয়েছে। সংশ্লিষ্ট সূত্রে ৫৬৭ প্রকল্পের সবগুলোতে মাটির কাজ শেষ হয়েছে দাবি করা হলেও কৃষকরা বলছেন এখনো বেশিরভাগ বাঁধে ৪০ ভাগ মাটির কাজ বাকি আছে। তাদের মতে সবগুলো বাঁধে এখনো কমপেকশন ও ঘাস লাগানো বাকি রয়ে গেছে।
পাউবো সূত্রে জানিয়েছে, গত ২৮ ফেব্রুয়ারি ফসলরক্ষা বাঁধের কাজ শেষ হওয়ার নির্ধারিত দিনে গড়ে ৮৬ ভাগ কাজ হয়েছিল। ওই সময় বলা হয় বাঁধে ঘাস লাগানো ও কমপেকশন বাকি আছে। তিন দিন পরেও একই কথা বলা হচ্ছে। গত তিনদিনে কাজের তিন ভাগ অগ্রগতি হয়েছে সরকারি প্রতিবেদনে।
এদিকে হাওর বাঁচাও সুনামগঞ্জ বাঁচাও আন্দোলন দাবি করেছে এখনো ৪০ ভাগের বেশি কাজ বাকি আছে। সরকারি প্রতিবেদনের সঙ্গে মাঠের প্রতিবেদনে যথেষ্ট ফারাক আছে। কিছু বাঁধে ৪০ ভাগ কাজ হয়নি বলেও সংগঠনের তৃণমূল কর্মীরা অভিযোগ করেছেন। সংগঠনের মতে বেশির ভাগ বাঁধেই মাটির কাজ বাকি। এখনো স্লোপের কাজ শেষ করা হয়নি। কমপেকশন করা হয়নি। লাগানো হয়নি ঘাস। তবে সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন মাটির কাজ শেষ হওয়ায় এখন প্রতিদিনই কমপেকশন করে ঘাস লাগানো হবে।
সুখাইড় রাজাপুর দক্ষিণ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আমানুর রাজা চৌধুরী বলেন, আমার ইউনিয়নে প্রকল্প নেওয়া হয়েছে। আমাকে জানানো হয়নি। কিন্তু জনপ্রতিনিধির দায়বদ্ধতা থেকেই আমি আমার ইউনিয়নের একাধিক বাঁধ ঘুরে দেখেছি এখনো মাটির কাজ বাকি আছে। দুর্মুজ করলে ২-৩ ফুট দেবে যায়। বৃষ্টি হলে এই বাঁধ টিকবেনা। তিনি বলেন, এখনো বেশির ভাগ বাঁধে মাটির কাজ শেষ হয়নি। বাঁধের কাজে কোথাও কমপেকশন করতে দেখিনি। ঘাসও লাগানো হচ্ছেনা।
হাওরের কৃষি ও কৃষক রক্ষা সংগ্রাম পরিষদের সভাপতি অবসরপ্রাপ্ত সহযোগী অধ্যাপক চিত্তরঞ্জন তালুকদার বলেন, পরিকল্পনা ও জনসম্পৃক্ততা ছাড়াই বাঁধের কাজের প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছিল। নীতিমালাও মানা হয়নি। যেভাবে প্রাক্কলন করা হয়েছে সেভাবেই এখনো কাজ শেষ করা যায়নি। এখন আবার সময় বাড়ানো হয়েছে। এই সময়ে এসেও তাদের নিজস্ব প্রাক্কলনের কাজ শেষ হবে কি না আমরা জানিনা। তাই আমাদের ফসলহানির শঙ্কা রয়েই যাচ্ছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আবু বকর সিদ্দিক ভূইয়া বলেন, গতকাল রবিবার পর্যন্ত ৮৯ ভাগ কাজ শেষ হয়েছে। সব উপজেলায়ই মাটির কাজ শেষ হয়ে গেছে। এখন কমপেকশনের সঙ্গে ঘাস লাগানোও চলবে। আগামী ১৫ মার্চের মধ্যে সম্পূর্ণ কাজ শেষ হবে বলে জানান তিনি।