জাহাঙ্গীর আলম ::
ছাতকে আমনের মাঠে এখন দোলা দিচ্ছে পাকা-আধাপাকা সোনালী ধান। দিগন্ত জোড়া সোনালী ফসলের মাঠ প্রাকৃতিক সৌন্দর্যকে আরও বিকশিত করে তুলেছে। মাঠের পর মাঠ ছড়ানো পাকা-আধাপাকা ধানের সোনালী আভা ও মনমাতানো মৌ মৌ গন্ধে যেন দিগন্ত ছেঁয়ে গেছে। সৃষ্টির অপরূপ সুন্দর্য্যের সবটুকুই যেন আমনের মাঠে বিছিয়ে রাখা হয়েছে। মাঠে হাওয়ার তালে তালে দোলছে কাঁচা সোনায় রাঙ্গানো আমন ধানের শীষ। কবি যথার্থই বলে গেছেন, আমন ধানের উপর ঢেউ খেলে যায় বাতাস কাহার দেশে।
আর কদিন পরেই গ্রামে-গ্রামে চলবে স্বপ্নের সোনালী ফসল ঘরে তোলার কাজ। সেই লক্ষ্যে ফসল কেটে ঘরে তোলতে কৃষকদের মধ্যে চলছে ব্যাপক প্রস্তুতি। ধান রোপনের শুরুর দিকে পোকামাকড় ও বিভিন্ন ধরনের রোগ-বালাইয়ে ধানের কিছুটা ক্ষতি হলেও বিগত কয়েক বছরের মধ্যে এ বছর কাঙ্খিত ফসল উৎপাদন হয়েছে বলে কৃষকরা দাবী করছেন।
কৃষি অফিস সূত্র জানায়, ১৩টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভা নিয়ে গঠিত এ উপজেলায় চলতি মৌসুমে আমন ধান চাষাবাদের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল ১২ হাজার ৪শ ৯০ হেক্টর জমিতে। আবহাওয়া পক্ষে থাকায় এ বছর লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে প্রায় ১৩হাজার হেক্টর জমিতে চাষাবাদ হয়েছে।
সরজমিনে বিভিন্ন হাওর ঘুরে দেখা যায়, উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নের গ্রামের মাঠ এখন সোনালী আমন ধানে ভরে গেছে। মাঠজুড়ে যে দিকে চোখ যায় সে দিকেই দেখা যায় শুধুই সোনালী ধানের শীষ। মাঠজুড়ে এখন দোল দিচ্ছে সোনালী ধান। ধানের নাচন দেখে কৃষকদের মুখে ফুটে উঠেছে । তবে ধান কেটে ঘরে তোলার পূর্বক্ষণে শেষবারের মতো ধান ক্ষেত পরিচর্চায় কোথাও কোথাও কৃষকদের মাঝেও দেখা মিলেছে ব্যস্ততার। পাকা-আধাপাকা ধানকে ইঁদুরের আক্রমন থেকে বাঁচাতে ধানক্ষেত পরিচর্চায় কৃষকরা কাটাচ্ছেন ব্যস্ত সময়।
ভাতগাঁও ইউনিয়নের একাধিক কৃষক জানান, চারা রোপনের পর পোকা-মাকড়, শীষ ও পাতা মরা রোগে ধানের কিছুটা ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। এরজন্য কৃষি অফিসের আশানুরূপ সহযোগিতা বা পরামর্শ পাননি। তবে মৌসুমের শুরু থেকে এখন পর্যন্ত আবহাওয়া পক্ষে থাকায় এবার চাষাবাদকৃত আমন ধান বিগত বছরের চেয়ে ভালো হয়েছে।
কৃষকরা আরো জানান, ইতোমধ্যে ধান পাকতে শুরু করেছে। আর কয়েকদিন পর ধান কাটা শুরু করা যাবে। বিগত বছরের চেয়ে এবার অধিক ফসল ঘরে উঠবে বলেও কৃষকরা জানান।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কেএম বদরুল হক জানান, বর্তমান কৃষিবান্ধব সরকার কৃষি ও কৃষকের কল্যাণে সময় উপযোগী পদক্ষেপ নিচ্ছে। তারই ধারাবাহিকতায় আমন ধানের বা¤পার ফলন ও উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ্যে আমরা মাঠ পর্যায়ে বিভিন্ন ধরণের কাজ করেছি। কৃষকরাও তা মাঠে কাজে লাগিছেন বলে চলতি রোপা-আমন ধানের ফসল খুবই সন্তোষজনক। স্বাধীনতার পর এবারই প্রথম এ উপজেলা খাদ্যে স্বয়ং স¤পূর্ন হবে বলে তিনি জানান।