বিশেষ প্রতিনিধি ::
নির্বাচন কমিশনের ঘোষণা অনুযায়ী ডিসেম্বরেই জাতীয় সংসদ নির্বাচন। হাতে আর মাত্র দুই মাস রেখে শেষ সময়ে উন্নয়ন কর্মকাণ্ডে ব্যস্ত সুনামগঞ্জের ৫টি আসনের সংসদ সদস্যরা। সুনামগঞ্জ-৩ ও সুনামগঞ্জ-৫ আসনের সংসদ সদস্য তার মধ্যে এগিয়ে আছেন। নেতারা বলছেন, নির্বাচনে প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নে শেষ চেষ্টা করছেন সংসদ সদস্যরা। অপরদিকে, জনগণ ও তৃণমূল নেতাদের সঙ্গে যোগাযোগ বাড়িয়েছেন তারা। এলাকার মানুষকে নিয়মিত সময় দিচ্ছেন। তারা সাধারণ মানুষের দোরগোড়ায় যাচ্ছেন। যোগ দিচ্ছেন বিভিন্ন সামাজিক অনুষ্ঠানে।
সুনামগঞ্জ-১ আসনের সংসদ সদস্য ইঞ্জিনিয়ার মোয়াজ্জেম হোসেন রতনের এলাকা তিনটি উপজেলা নিয়ে গঠিত এবং ভোটারও বেশি। শেষ সময়ে তিনি উন্নয়ন বরাদ্দ আনতে মরিয়া। এ মাসের প্রথমদিকে তাহিরপুরের ট্যাকেরঘাটে শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমুকে নিয়ে বিসিআইসি’র পরিত্যক্ত খনি প্রকল্প পরিদর্শন করেছেন। সেখানে অনুষ্ঠিত জনসভায় আমির হোসেন আমু ঘোষণা দেন ট্যাকেরঘাটে আবারও কারখানা চালু করা হবে।
এদিকে দিন কয়েক আগে বাদাঘাট ডিগ্রি কলেজ সরকারিকরণ হয়েছে। ট্যাকেরঘাট স্কুল এন্ড কলেজকেও একটি ভালো প্রতিষ্ঠানে রূপ দেয়ার চেষ্টা করছেন বলে জানিয়েছেন এমপি রতন। এছাড়া যাদুকাটার নদীর উপর নির্মিত সেতুটির কাজও দ্রুত গতিতে এগিয়ে চলছে। নির্বাচনের আগে যাতে সেতুর কাজ দৃশ্যমান হয় সে ব্যাপারে তৎপরতা চালাচ্ছেন এই সংসদ সদস্য। এছাড়া জামালগঞ্জ ও ধর্মপাশা উপজেলায় শেষ মুহূর্তে অনেক অভ্যন্তরীণ সড়কের উন্নয়নের কাজ চলছে।
সুনামগঞ্জ-৩ আসনের এমপি এমএ মান্নানকে বলা হয় উন্নয়নের এমপি। গত ১০ বছরে উল্লেখযোগ্য উন্নয়ন করেছেন তিনি তার নির্বাচনী উপজেলা দক্ষিণ সুনামগঞ্জ ও জগন্নাথপুরে। উপজেলা প্রশাসন ভবন, ফায়ার সার্ভিস স্টেশনসহ জনগুরুত্বপূর্ণ কোটি কোটি টাকার কাজ করেছেন তিনি। দক্ষিণ সুনামগঞ্জ থানাও কয়েক দিনের মধ্যে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান উদ্বোধন করার কথা রয়েছে। জগন্নাথপুর উপজেলায় ২৬ কোটি টাকা ব্যয়ে ৬তলা বিশিষ্ট আরবান প্রাইমারি হেলথ কেয়ার সেন্টার, শিবগঞ্জ, বেগমপুর, পাইলগাঁও সড়কের কাজে ৫ কোটি ব্যয়ে সড়ক নির্মাণসহ কোটি কোটি টাকার উন্নয়ন কাজ চলছে এই উপজেলায়।
সুনামগঞ্জ-৪ (সদর-বিশ্বম্ভরপুর) আসনে সরকারের শেষ মুহূর্তের চমক ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট সুনামগঞ্জ সদর হাসপাতাল। মাসখানেকের মধ্যেই এই হাসপাতালের নতুন ভবন উদ্বোধন হওয়ার কথা রয়েছে। এছাড়া সুনামগঞ্জ সরকারি কলেজের পেছনে নার্সিং কলেজ, ইনস্টিটিউট অব হেলথ টেকনোলজি মাস দুয়েকের মধ্যে ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপনের কথা রয়েছে। অন্যদিকে মদনপুর এলাকায় মেডিকেল কলেজের জন্য জায়গা চিহ্নিতকরণের কাজ চলছে। এছাড়া সদর ও বিশ্বম্ভরপুর উপজেলায় গ্রামে গ্রামে সড়ক ও বিদ্যুতায়নের কাজ চলছে দ্রুতগতিতে। বিশ্বম্ভরপুর উপজেলায় শুরু হয়েছে নদী খননের কাজও।
সুনামগঞ্জ-৫ (ছাতক-দোয়ারা) আসনে শেষ মুহূর্তে ব্যাপক উন্নয়ন কাজ চলছে। সর্বশেষ দুই উপজেলায় ১০টি উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের চার তলা বিশিষ্ট ভবন নির্মাণ প্রকল্প অনুমোদন হয়েছে। এর মধ্যে ৭টি ছাতকে ও ৩টি দোয়ারাবাজার উপজেলায়। এই দুই উপজেলায় ৬টি মাদ্রাসার একাডেমিক ভবন নির্মাণ প্রকল্প সম্প্রতি অনুমোদন হয়েছে। এছাড়া দুই উপজেলায় অভ্যন্তরীণ গুরুত্বপূর্ণ অনেক সড়কের কাজ চলছে। যেগুলো কোটি কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত হচ্ছে। এছাড়া ছাতক সুরমা নদীর উপর সুরমা ব্রিজের কাজও দ্রুত গতিতে এগিয়ে চলছে। ইতিমধ্যে কাজের দৃশ্যমান অগ্রগতি হয়েছে। দোয়ারাবাজারকে সুরমা নদীর কড়াল গ্রাস থেকে রক্ষা করতেও কাজ চলছে। স্থানীয় এমপি মুহিবুর রহমান মানিকের ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় প্রকল্পগুলো অনুমোদন হয়েছে।
স্থানীয় নেতারা বলছেন, নির্বাচনে প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নে শেষ চেষ্টা করছেন সংসদ সদস্যরা। এজন্য সরকারের পক্ষ থেকেও সংসদ সদস্যদের বাড়তি বরাদ্দ দেয়া হচ্ছে। দৃশ্যমান উন্নতি দেখিয়ে আগামী সংসদ নির্বাচনে ভোট টানার চেষ্টা করবেন তাঁরা।