০১. গাড়ি চাপায় মোটরসাইকেল আরোহীর মৃত্যু ॥ নিহতের তিন ভাইসহ ১২জনের বিরুদ্ধে মামলা, ০২. মুক্তিযোদ্ধাকে পেটালো প্রভাবশালীরা ॥ মামলা নিতে ঘুষ দাবির অভিযোগ, ০৩. বিশ্বম্ভরপুরে ৪ ছেলে মিলে পেটালো বৃদ্ধ মাকে, ০৪. ছাতক-গোবিন্দগঞ্জ সড়ক ॥ ঝুঁকিপূর্ণ ব্রিজগুলো নতুন করে নির্মাণ, ০৫. ড. ইউনূসের বিরুদ্ধে আরো ১১ মামলা এবং ০৬. শত বছর মেয়াদী ডেল্টা প্ল্যান অনুমোদন। গতকালের দৈনিক সুনামকণ্ঠের প্রথম পৃষ্ঠায় পরিবেশিত মোট ১৩টি সংবাদপ্রতিবেদনের মধ্যে ৬টির শিরোনাম তুলে দিলাম। এই ৬টি শিরোনাম পাঠ করার পর বাংলাদেশ কোথায় কী পর্যায়ে আছে তা বুঝে নিতে বোধ করি সচেতনজনের খুব বেশি একটা বেগ পেতে হবে না। সর্বশেষে উদ্ধৃত শিরোনামটি বাদে আর বাকি সবকটি শিরোনামই দেশের সার্বিক পরিপ্রেক্ষিতে একটা সর্বাত্মক নেতিবাচক পরিস্থিতির উপস্থিতি আছে, প্রকারান্তরে সেটাই প্রতিপন্ন করে।
‘নেতিবাচক পরিস্থিতি’ বলতে অনেক কীছুকেই বুঝাতে পারে। তার বিস্তৃত ব্যাখ্যায় যাবো না। নেতিবাচক ৫টি সংবাদশিরোনাম নিয়ে বিস্তর আলোচনার এখানে কোনও অবকাশও নেই, তার বিস্তৃতি বিশাল। কেবল এই বলতে চাই যে, আইন অমান্য হচ্ছে, আইন কার্যকর হচ্ছে না, সুশাসন প্রতিষ্ঠার জন্য একজন শেখ হাসিনা প্রাণান্ত চেষ্টা করে যাচ্ছেন, যাঁরা বহুদলীয় গণতন্ত্রের নামে বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করে দেশে কার্যত দুর্নীতিতন্ত্র ও দুর্বৃত্তায়ন কায়েম করে ভুঁয়া উন্নয়নের জিগির তুলেছিলেন, তারা এখন আবার ক্ষমতায় যাওয়ার পথের সন্ধানে ব্যস্ত আছেন এবং এই পরিস্থিতিতে শেখ হাসিনা তাঁর প্রণীত বদ্বীপ পরিকল্পনা প্রকাশ করেছেন। সংক্ষেপে বলতে গেলে বলতে হয়, ৭৫-য়ের বিপর্যয়ের পর লাগাতার বিপর্যয়ের সম্মুখিন হতে হতে, মৌলবাদী সন্ত্রাসের বিস্তার ও স্বাধীনতাবিরোধী প্রতিক্রিয়াশীলতার সঙ্গে লড়াই করে করে, দেশ এখন শরণার্থী রোহিঙ্গাসংকটকে ঘাড়ে নিয়ে আর একটি জাতীয় নির্বাচনের দিকে যাত্রাপর। এই নির্বাচন জাতির ভাগ্যনির্ধারণের নির্বাচন। এই নির্বাচন জাতিকে নিয়ে যাবে নিশ্চিত মুক্তি অথবা দাসত্বের দিকে। মনে হচ্ছে এবারের নির্বাচনটা হবে অশুভ ও শুভর মধ্যে। সভ্যতার শুরু থেকে মানুষ এই দুই সামাজিক শক্তির পক্ষে কিংবা বিপক্ষে দাঁড়িয়ে নিজেরা মানবিক কিংবা দানবিক হয়ে ওঠেছে। শান্তি অথবা যুদ্ধ চেয়ে সংগ্রাম করেছে। এবারের নির্বাচনও একটা সংগ্রাম, এই সংগ্রাম একটি যুদ্ধর চেয়ে বড় এবং তাৎপর্যম-িত। যুদ্ধ কিংবা সংগ্রাম যা-ই বলি, সেটা শান্তি ও অশান্তির। এদিক থেকে বিবেচনায়, এবারের নির্বাচনে মানুষ দাঁড়াবে তার ব্যক্তিগত মঙ্গল অথবা অমঙ্গলের দিকে। এবারের নির্বাচনে রাজনীতিবিজ্ঞানের নিয়মানুসারে তাই কোনও জটিলতা নেই। মানুষ এবার ভোট দেবে নিজের পক্ষে, এর কোনও বিকল্প নেই। এই নির্বাচন মানুষের নিজের নির্বাচন, সাধারণ নাগরিকের রাষ্ট্রের নায়ক হয়ে ওঠার নির্বাচন।