বিশেষ প্রতিনিধি ::
দৈনিক সুনামকণ্ঠে সংবাদ প্রকাশের পর জেলা প্রশাসন সুরমা নদী থেকে অবৈধভাবে মাটি উত্তোলনে নিয়োজিত ড্রেজার সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে অ্যাকশনে নেমেছে। ইতোমধ্যে সুরমা নদীর বিভিন্ন পয়েন্টে একাধিক অভিযান পরিচালিত হয়েছে। গত মঙ্গলবার ও বুধবার প্রভাবশালী সিন্ডিকেটের দুটি ড্রেজার মেশিনের সংশ্লিষ্টদের দেড় লক্ষ টাকা জরিমানা করা হয়েছে। এভাবে অবৈধভাবে নদী থেকে মাটি উত্তোলন করা হলে প্রশাসন খবর পেলে অভিযান পরিচালনা করবে বলে জানাগেছে। তবে অভিযান ব্যাহত করতে সিন্ডিকেট নানাভাবে প্রভাব বিস্তারের পাশাপাশি তদবির করছে বলে জানা গেছে।
জানা গেছে, দীর্ঘদিন ধরে কয়েকটি প্রভাবশালী সিন্ডিকেট সুনামগঞ্জের সুরমা নদীর বিভিন্ন পয়েন্টে অবৈধভাবে ড্রেজার মেশিন দিয়ে মাটি উত্তোলন করছে। হাইড্রোলিক চার্ট ব্যতিত ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা থেকে মাটি উত্তোলন করায় আরো ঝুঁকির মুখে পড়েছে সুরমা নদী তীরবর্তী বিভিন্ন এলাকা। এ নিয়ে দৈনিক সুনামকণ্ঠে সংবাদ প্রকাশিত হলে জেলা প্রশাসন সংশ্লিষ্টদের অবৈধ ড্রেজার মেশিন সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনার নির্দেশ দেন। সংবাদ প্রকাশের দিন এক ইউনিয়ন ভূমি কর্মকর্তাকেও তার এলাকায় অবৈধভাবে সুরমা নদী থেকে ড্রেজার মেশিন দিয়ে সিন্ডিকেট মাটি উত্তোলন করায় শোকজ করে প্রশাসন। ওইদিনই সুরমা নদীর বিভিন্ন পয়েন্টে অবৈধ ড্রেজারের বিরুদ্ধে অভিযানে নামে সদর উপজেলা ভূমি অফিস।
গত মঙ্গলবার সদর উপজেলা ভূমি কর্মকর্তা (এসিল্যান্ড) সোনিয়া সুলতানার নেতৃত্বে সুরমা নদীতে ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযান পরিচালিত হয়। ওইদিন শহরতলির বৈঠাখালি থেকে একটি ড্রেজার মেশিন জব্দ করে কথিত মালিক জাকিরকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। পরদিন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও উপজেলা ভূমি কর্মকর্তা সোনিয়া সুলতানা সুরমা নদীতে ফের ভ্রাম্যমাণ অভিযান পরিচালনা করেন। এসময় তিনি ব্রাহ্মণগাঁও-বল্লভপুর এলাকা থেকে আরেক প্রভাবশালী ড্রেজার সিন্ডিকেটের একটি মেশিন আটক করে এনামুলসহ ৭জনকে দেড় লাখ টাকা জরিমানা করেন।
জানা গেছে, এই জরিমানার সময় ড্রেজার সিন্ডিকেট তৎপর হয়ে ওঠে। তারা নানা মহল থেকে প্রশাসনের কাছে তদবির করে জরিমানা না করার জন্য। কিন্তু সংশ্লিষ্ট ভ্রাম্যমাণ আদালতের বিচারক এই প্রভাবশালীদের তদবির তোয়াক্কা না করেই প্রচলিত আইনে তিনি দেড় লাখ টাকা জরিমানা করেন। জানা গেছে, ঘটনাস্থল থেকে ড্রেজার মেশিন আটকের সময় স্থানীয় জনতা আদালতকে জানান, এই ড্রেজারের প্রকৃত মালিক জেলা শহরে অবস্থানরত একজন আইনজীবী। যিনি দীর্ঘদিন ধরে এই অবৈধ কারবারের সঙ্গে জড়িত।
সদর উপজেলা ভূমি কর্মকর্তা সোনিয়া সুলতানা বলেন, গত দুইদিন আমি সুরমা নদীর বিভিন্ন পয়েন্টে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে দুটি ড্রেজার মেশিন পেয়েছি। তখন সংশ্লিষ্টদের দেড় লাখ টাকা জরিমানা করেছি। নদীতে অবৈধ ড্রেজার মেশিনের বিরুদ্ধে অভিযান চলবে বলে তিনি জানান।