1. [email protected] : admin2017 :
  2. [email protected] : Sunam Kantha : Sunam Kantha
  3. [email protected] : wp-needuser : wp-needuser
শনিবার, ০৪ মে ২০২৪, ০২:৪৭ অপরাহ্ন
ঘোষণা ::
সুনামগঞ্জ জেলার জনপ্রিয় সর্বাধিক পঠিত পত্রিকা সুনামকন্ঠে আপনাকে স্বাগতম। আমাদের পাশে থাকার জন্য সকলকে আন্তরিক অভিনন্দন। আমাদের পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দিতে যোগাযোগ করুন - 01711-368602

ইয়াবার ভয়াল ছোবল : আতঙ্কিত অভিভাবক

  • আপডেট সময় বুধবার, ৯ আগস্ট, ২০১৭

বিশেষ প্রতিনিধি ::
জেলাজুড়ে ইয়াবার রমরমা ব্যবসা। শহর ছাড়িয়ে এখন গ্রামে গ্রামে অনেকটা সহজলভ্য হয়ে পড়েছে ‘বাবা’, ‘গুটি’, ‘পিল’, ‘ভল্টার’ হিসেবে পরিচিত মাদক ইয়াবা। পুলিশি অভিযানে গুটি কয়েক ছোট ছোট ইয়াবা ব্যবসায়ী গ্রেফতার হলেও ধরাছোঁয়ার বাইরেই রয়েছে ডিলাররা। মরণঘাতি ইয়াবার এমন ভয়াবহ বিস্তারে অভিভাবকরা চিন্তিত হয়ে পড়েছেন।
গত ঈদুল ফিতরের পর থেকেই আলোচনায় আসে শহরে ইয়াবায় আসক্ত তরুণদের বিষয়টি। সদর থানার পুলিশের একটি দল নতুন কোর্ট এলাকা থেকে তেঘরিয়ার রাব্বী ও বিলপাড়ের অপুকে ইয়াবাসহ গ্রেফতার করে। এর কয়েকদিন পরই বাঁধনপাড়ার সাঈদকে ইয়াবাসহ গ্রেফতার করা হয়। গোপন সংবাদের ভিত্তিতেই তাদের গ্রেফতার করা হয় বলে পুলিশ জানিয়েছিল। গত বৃহস্পতিবার শহরের তেঘরিয়া লম্বাহাটি এলাকা থেকে পুলিশি অভিযানে ইয়াবাসহ এলাকার মৃত রইছ আলীর ছেলে আব্দুল মালেক (৩৫)-কে গ্রেফতার করা হয়। এসময় তার দেহ তল্লাশী করে ৭ পিস ইয়াবা উদ্ধার করে পুলিশ। পুলিশ জানায়, গ্রেফতারকৃত আব্দুল মালেক দীর্ঘদিন ধরেই মাদক ব্যবসার সঙ্গে জড়িত। তার বিরুদ্ধে সুনামগঞ্জ সদর মডেল থানায় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইন ও মারামারির আরো ২টি মামলা রয়েছে।
এর আগের দিন দক্ষিণ সুনামগঞ্জ উপজেলার শান্তিগঞ্জ বাজারে ইয়াবাসহ দুই জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। বুধবার বিকেলে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে শান্তিগঞ্জ বাজার সমবায় মার্কেটের দ্বিতীয় তলায় সৌখিন থাই অ্যালুমোনিয়াম দোকানে অভিযান চালিয়ে শান্তিগঞ্জ বাজার কমিটির সাংগঠনিক স¤পাদক ও ডুংরিয়া শিবপুর গ্রামের তেরাই মিয়ার ছেলে আমিরুল ইসলাম (৩৩) ও ময়মনসিংহ জেলার হালুয়াঘাট থানার বড়দাসপাড়া গ্রামের হাফিজুর রহমানের ছেলে হামিদুর রহমান রানা (২৮)কে গ্রেফতার করে পুলিশ। দক্ষিণ সুনামগঞ্জ পুলিশ জানায়, তাদের বিরুদ্ধে সুনামগঞ্জ সদর থানায় একাধিক মামলা রয়েছে।
সর্বশেষ শুক্রবার সন্ধ্যায় তাহিরপুর সীমান্তে ৩৫ পিস ইয়াবা ট্যাবলেট, মোটরসাইকেলসহ একজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। গ্রেফতারকৃত রইসুল ইসলাম (২০) উপজেলার শ্রীপুর (উত্তর) ইউনিয়নের সীমান্তবর্তী কলাগাঁও গ্রামের মাইজহাটি মোড়ের পল্লী চিকিৎসক আবদুল মান্নানের ছেলে।
অনুসন্ধানে জানা যায়, গত বছর থেকেই সুনামগঞ্জে ইয়াবার বিস্তার ঘটতে থাকে। পরিবহন সহজলভ্য হওয়ায় দ্রুত মাদক হিসেবে ইয়াবা জনপ্রিয় হয়ে উঠে যুব সমাজের কাছে। সেবন ছাড়া বিক্রিতে লাভ হওয়ায় অনেক তরুণ এই ব্যবসায় জড়িয়ে পড়ে।
সুনামগঞ্জ সদর ও তাহিরপুর উপজেলায় ইয়াবার বিস্তার বেশি ঘটেছে। এসব ইয়াবা আবার ‘সেভেন’ ও ‘চম্পা’ হিসেবে পরিচিত। সুনামগঞ্জ সদরে সিলেট থেকে ও তাহিরপুর উপজেলায় ভৈরব থেকে ইয়াবা ঢুকছে। জেলার বাইরের কিছু মাদক ব্যবসায়ী সুনামগঞ্জে ইয়াবা ঢুকিয়ে লাখ লাখ আয় করছে। এই দুই উপজেলায় আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে সবচেয়ে বেশি ইয়াবাসেবী ও বিক্রেতা আটক হচ্ছে। তবে ইয়াবার বড় ডিলারদের ধরতে পারছে না পুলিশ।
শহরের ষোলঘর এলাকার অভিভাবক সাজিনুর আহমদ বলেন, পুলিশ যেসব ছেলেদের ইয়াবাসহ আটক করছে, তা দেখে আমি আতঙ্কিত। ভাল ঘরের ছেলেরা মাদকাসক্ত হয়ে পড়ছে। যা আমাদের অভিভাবকদের জন্য অশনিসংকেত।
আরেক অভিভাবক আমিনুর রহমান বলেন, পুলিশের পাশাপাশি আমাদের অভিভাবকদেরও সচেতন হতে হবে। ছেলেরা কোথায় যায়, কি করে, কাদের সঙ্গে মেলামেশা করছে সব বিষয়ে খোঁজ রাখতে হবে।
এ ব্যাপারে পুলিশ সুপার মো. বরকতুল্লাহ খান বলেন, জেলা পুলিশ সুপার মো. বরকতুল্লাহ খান বলেন, ইয়াবার মূল হোতাদের ধরতে পুলিশ কাজ করছে। আমাদের গোয়েন্দারা ছোট ছোট চালান আটক করছে। তবে এ মাদকটা আকারে ছোট হওয়ায় পরিবহনে সুবিধা পাচ্ছে মাদক ব্যবসায়ীরা। সুনামগঞ্জ জেলা পুলিশ মাদক প্রতিরোধে জিরো টলারেন্সে কাজ করছে। আমাদের কোন পুলিশ সদস্যও যদি ইয়াবা ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কোনরূপ জড়িত থাকে তাহলে তার বিরুদ্ধেও কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে। ইয়াবা যাতে ছড়িয়ে না পড়ে সেজন্য সুনামগঞ্জের সম্মানিত জনসাধারণের সকলের সহযোগিতা কামনা করি। কারণ জনতাই পুলিশ-পুলিশই জনতা। আমরা জনগণের সহযোগিতায় মাদকমুক্ত সুনামগঞ্জ গড়ে তোলতে চাই।’

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর

© All rights reserved © 2016-2021
Theme Developed By ThemesBazar.Com