বিস্তৃতি ও সংস্কারের সুযোগ থাকার পরও অবহেলা-অনাদরে রয়েছে শহরের ডিএস রোডস্থ সুনামগঞ্জ কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার। এই শহীদ মিনারটি সংস্কারে কোনো উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে না। বরং এই শহীদ মিনারটি অন্যত্র সরানোর চেষ্টা হয়েছে বেশ কয়েক বার। তবে যখনই একটি মহল কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারটি অন্যত্র সরানোর চেষ্টা করেছে তখনই রাজপথে নেমে প্রতিবাদ জানিয়েছেন মুক্তিযোদ্ধা-জনতা। প্রতিবাদের মুখে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার স্থানান্তরে ব্যর্থ হয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
জানা যায়, মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন সুনামগঞ্জ মুক্তদিবসের পরে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার নির্মাণ করেন মুক্তিযোদ্ধারা। বিশিষ্ট সাংবাদিক ও হাওরাঞ্চলের মুক্তিযুদ্ধের আঞ্চলিক অধিনায়ক সালেহ চৌধুরী এর নকশা করে দেন। বালাট সাব সেক্টরের অধিনায়ক মেজর মোতালিব ঐতিহ্যবাহী এই শহীদ মিনারটি উদ্বোধন করেন। ১৯৭১ সনের ১৬ ডিসেম্বর প্রথম বিজয় দিবসে শহীদদের স্মরণে শ্রদ্ধা জানান মুক্তিযোদ্ধা-জনতা। এভাবেই সুনামগঞ্জ ডিএস রোডের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারটি ঐতিহ্যের অংশ হয়ে যায়। পরবর্তীতে জাতীয় দিবসগুলোতে শহীদদের স্মরণসহ সামাজিক বিভিন্ন নিপীড়ন-সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে জনতার প্রতিবাদের প্লাটফর্মে পরিণত হয় শহীদ মিনারটি।
জানা গেছে চারদলীয় জোট সরকার প্রথমে সুনামগঞ্জ কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারটি অন্যত্র স্থানান্তরের উদ্যোগ নিয়ে নতুন কোর্ট চত্বরে নিয়ে যায়। এরপর থেকেই অবহেলা শুরু হয় ঐতিহ্যের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের প্রতি। এ সময় প্রগতিশীল ও মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের সংগঠনগুলো প্রতিবাদ করে তারা জাতীয় দিবসগুলোতে ডিএস রোডস্থ কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারেই শহীদদের শ্রদ্ধা জানায়। যা এখন পর্যন্ত বলবৎ রয়েছে।
সুনামগঞ্জ কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার সংস্কার ও সম্প্রসারণে মুক্তিযোদ্ধা-জনতার দাবির সাথে একাত্ম হয়েছিলেন অনেক জনপ্রতিনিধি। তবে শহীদ মিনারটি সংস্কার ও বর্ধিতকরণে আজো নেয়া হয়নি কোনো উদ্যোগ। ইতিহাস-ঐতিহ্যের অনন্য নিদর্শন, আমাদের আবেগের জায়গা কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারটি সংস্কার ও সম্প্রসারণে দ্রুত উদ্যোগ নেয়ার জন্য আমরা আবারো দাবি জানাই।