১ আগস্ট থেকে ৭ আগস্ট পর্যন্ত বিশ্ব মাতৃদুগ্ধ সপ্তাহ। এ উপলক্ষে বাংলাদেশসহ বিশ্বের ১৭০টি দেশে নেয়া হয়েছে নানা কর্মসূচি। এবারের প্রতিপাদ্য হলÑ মাতৃদুগ্ধপান টেকসই করতে – আসুন ঐক্যবদ্ধ হই।
আমরা জানি, মায়ের দুধ নবজাতকের জন্য আদর্শ পুষ্টিকর খাবার। এতে সংক্রামক ব্যাধির আক্রমণ অনেক কমে যায়। মাতৃদুগ্ধ পানকারী শিশুদের মানসিক ও শারীরিক বিকাশ ঘটে পরিপূর্ণভাবে। মায়েদের স্তন ও ডিম্বাশয়ের ক্যান্সারের ঝুঁকি কমে। মাতৃদুগ্ধ পানের মধ্যদিয়ে সন্তান ও মায়ের মধ্যে তৈরি হয় এক অবিচ্ছেদ্য স¤পর্ক।
জন্মের এক ঘণ্টার মধ্যে শিশুকে মায়ের দুধ খাওয়ানো হলে নবজাতক মৃত্যুর হার ২২ শতাংশ কমানো সম্ভব। শুধু মায়ের দুধ খাওয়ানোর মাধ্যমে বছরে ৩৭ হাজার নবজাতকের জীবন রক্ষা পাবে। মাত্র ৪৩ শতাংশ নবজাতক জন্মের এক ঘণ্টার মধ্যে মায়ের দুধ পায়।
মায়ের দুধের খাদ্য উপাদানে বিশেষ ফ্যাটি এসিড আছে, যা শিশুর বুদ্ধিমত্তা ও চোখের জ্যোতি বাড়ায়। মায়ের দুধে প্রায় ১০০ উপাদান রয়েছে, যার প্রতিটি উপাদানই শিশুর জন্য একান্ত প্রয়োজনীয়।
মায়ের দুধে ৮৬ ক্যালরি শক্তি বেশি অছে। সন্তান জন্মদানের পর হলুদাভ ঘন যে দুধ বের হয়, একে শালদুধ বা কোলাস্ট্রাম বলে। পরিমাণ কম হলেও এটি নবজাতকের জন্য যথেষ্ট। শালদুধে অনেক বেশি রোগ প্রতিরোধক উপাদান ও শ্বেতকণিকা থাকে। এ উপাদান শিশুকে বিভিন্ন রোগ-জীবাণু থেকে রক্ষা করে। এ দুধ শিশুর অপরিণত অন্ত্রকে পরিপক্ক করে। শালদুধ শিশুর পেটের প্রথম কালো পায়খানা বা মিকোনিয়াম বের করে দিতে সাহায্য করে। মিকোনিয়াম পেটে বেশি থাকলে নবজাতকের জন্ডিস হওয়ার আশঙ্কা থাকে। মায়ের দুধ খাওয়ানো অবশ্যই একটি অপরিহার্য জরুরি উদ্যোগ।
জন্মের পর পর শিশুকে বুকের দুধ খাওয়ালে মায়ের জরায়ু খুব দ্রুত সেরে ওঠে এবং মায়ের মৃত্যুঝুঁঁকিও কমে যায়। শিশুর পরিপূর্ণ শারীরিক বৃদ্ধি ও সুস্থ থাকার জন্য মাতৃদুগ্ধের বিকল্প নেই। মা ও শিশুর সুস্থ ও সুন্দর জীবন গড়ার স্বার্থে বুকের দুধ পানে উদ্বুদ্ধ করতে হবে।