ইয়াবার অপব্যবহার ও অবৈধ পাচারকারীর সঙ্গে জড়িতদের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদ-ের বিধান সংযোজন করে নতুন আইন প্রণয়ন করা হচ্ছে। ইয়াবাকে ‘ক’ শ্রেণির মাদকদ্রব্যে অন্তর্ভুক্ত করে সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদ-ের বিধান এবং অন্যান্য শাস্তির বিধানের ধারাও নতুন করে সাজানো হয়েছে। মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণের জন্য প্রশাসনিক কার্যক্রম বাড়ানোর পাশাপাশি সামাজিক আন্দোলন গড়ে তোলতে গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে। তবে মরণ নেশা ইয়াবার বিস্তার এখনো বন্ধ হচ্ছে না। এই মরণ নেশা দেশের তরুণ সমাজকে এখন সবচেয়ে বেশি আকৃষ্ট করছে। তাই মাদক পাচারকারীরা ইয়াবাকে পুঁজি করে রমরমা ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে। এর ফলে ইয়াবায় ছেয়ে যাচ্ছে দেশ। বিদেশ থেকে যেসব পয়েন্ট দিয়ে বাংলাদেশে ইয়াবা প্রবেশ করে, তার মধ্যে একটি গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্ট হলো কক্সবাজারের টেকনাফ সীমান্ত। তাছাড়া মাদক চোরাচালানীরা কার্গো, গবাদিপশুর ট্রলার, ট্রানজিট ট্রলার, নাফ নদী ও সাগরে মাছ শিকারে যাওয়া নৌকার মাধ্যমে ইয়াবা এদেশে এনে থাকে। পরে বিভিন্ন এজেন্টের মাধ্যমে সেগুলো দেশের বিভিন্ন স্থানে সরবরাহ করা হয়।
একথা বলা বাহুল্য হবে না, আইন প্রয়োগকারী সংস্থার দুর্বলতার কারণে সীমান্ত দিয়ে অবাধে মাদকদ্রব্য আসছে। এই মাদক দ্রব্য তথা ইয়াবার মরণ নেশা আজ বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষের মধ্যেও ভর করছে। যারা নিয়মিতভাবে মাদক গ্রহণ করে থাকেন। এভাবে ইয়াবার মরণ ছোবলে দেশের তরুণ সমাজ আজ অধপাতে যাচ্ছে। তাই ইয়াবাসহ সব মাদকদ্রব্য পাচার বন্ধে সরকারকে কঠোর মানসিকতার পরিচয় দিতে হবে। ইয়াবা পাচারকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দানের মাধ্যমে নজির স্থাপন করতে হবে। আর স্থানীয় প্রশাসন যাতে ইয়াবা পাচারকারীদের ছাড় দিতে না পারে সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। ইতোমধ্যে যারা ইয়াবার আসক্তিতে ভুগছেন তাদের নৈতিকভাবে বুঝিয়ে স্বাভাবিক জীবনে ফিরিয়ে আনতে হবে এবং প্রয়োজনীয় চিকিৎসার ব্যবস্থা করতে হবে। বর্তমান গণতান্ত্রিক সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভাগের দায়িত্বশীলরা দেশে মাদকাসক্তিমুক্ত, সুস্থ ও সুন্দর পরিবেশ তৈরি করতে এবং মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণে প্রশাসনিক কার্যক্রম জোরদার করতে বিশেষ ব্যবস্থা নিতে হবে। পাশাপাশি সমাজের সচেতনমহলও বিভিন্ন সংগঠনের মাধ্যমে সামাজিক আন্দোলন গড়ে তোলতে হবে। সর্বস্তরের মানুষের মাদক প্রতিরোধ আন্দোলনের মাধ্যমে ইয়াবাসহ মাদকমুক্ত দেশ গড়া সম্ভব হবে।