1. [email protected] : admin2017 :
  2. [email protected] : Sunam Kantha : Sunam Kantha
  3. [email protected] : wp-needuser : wp-needuser
শনিবার, ০৪ মে ২০২৪, ০৬:৩২ অপরাহ্ন
ঘোষণা ::
সুনামগঞ্জ জেলার জনপ্রিয় সর্বাধিক পঠিত পত্রিকা সুনামকন্ঠে আপনাকে স্বাগতম। আমাদের পাশে থাকার জন্য সকলকে আন্তরিক অভিনন্দন। আমাদের পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দিতে যোগাযোগ করুন - 01711-368602

বীরাঙ্গনা কাকন বিবিকে বীরপ্রতীক খেতাবে ভূষিত করুন

  • আপডেট সময় সোমবার, ২৪ জুলাই, ২০১৭

একাত্তরের বীরাঙ্গনা কাকন বিবি এখন জীবন সায়াহ্নে। আজো ‘বীরপ্রতীক’ খেতাব পাননি তিনি। বার্ধক্যজনিত কারণে তিনি দীর্ঘদিন ধরে ঢাকার একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকার পর বর্তমানে সিলেট এম.এ.জি ওসমানী মেডিকেল কলেজে হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন। বয়সের ভারে ন্যুব্জ এবং নানা রোগে আক্রান্ত তিনি। তাঁর বীরপ্রতীক খেতাব পাওয়া এখন প্রায় আশাহীন হয়ে পড়েছে। বীরাঙ্গনা কাকন বিবি’র শেষ প্রত্যাশাটুকু পূরণ না হলে এ বেদনা নিয়েই তাঁকে যেতে হবে না ফেরার দেশে।
বীরাঙ্গনা কাকন বিবি যুদ্ধ ক্ষেত্রে অসমসাহস নিয়ে এ দেশের স্বাধীনতা কেড়ে আনতে পাকহানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে যুদ্ধে অংশ নিয়েছিলেন। যুদ্ধে নানা ত্যাগ ও নির্যাতন সহ্য করেছেন। এটা সুনামগঞ্জের জন্য বিরল দৃষ্টান্ত।
একাত্তরে মহান মুক্তিযুদ্ধে ৫নং সেক্টরের দোয়ারাবাজার উপজেলার সেলা (বাঁশতলা) সাব-সেক্টরের প্রত্যন্ত অঞ্চলে তিনি বীরত্বের সঙ্গে যুদ্ধ করেছিলেন। একাত্তরে দোয়ারাবাজার সীমান্তে পাকবাহিনী ও মুক্তিযোদ্ধাদের মধ্যকার তুমুল লড়াইয়ে অনেকের সাথে ওই মহিয়সী নারীকেও আটক করে ক্যাম্পে নিয়ে যায় পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী। দিনের পর দিন চলতে থাকে পাকহানাদার, রাজাকার ও আলবদর কর্তৃক তাঁর ওপর নির্যাতন। ভেঙে না পড়ে প্রতিশোধের আগুনে ফুঁসে উঠেন এ বীরাঙ্গনা। এক পর্যায়ে হানাদার বাহিনীর হাত থেকে মুক্ত হয়ে তিনি চলে যান ৫নং সেক্টর কমান্ডার মীর শওকত আলীর কাছে। শুরু হয় প্রতিশোধের আরও এক নতুন অধ্যায়। জীবন বাজি রেখে কখনো পাগল, কখনো ভবঘুরের বেশে পাকবাহিনীর গতিবিধির খবর পৌঁছে দিতেন মুক্তিবাহিনীর কাছে। এসব তথ্যের ভিত্তিতে বেশ কয়েকটি অপারেশন সফল করতে সক্ষম হন মুক্তিযোদ্ধারা। গুপ্তচরবৃত্তি করতে গিয়ে একদিন বাংলাবাজারে পাকবাহিনীর হাতে আবারও ধরা পড়েন ওই বীরাঙ্গনা। শুরু হয় নির্যাতনের স্ট্রিমরোলার। একটানা চালানো হয় পাশবিক নির্যাতন। লোহার রড গরম করে তাঁর শরীরের বিভিন্ন স্পর্শকাতর স্থানে ক্ষতচিহ্ন এঁকে দেয় পাক হায়েনারা। এসব নির্যাতনের পর অজ্ঞান অবস্থায় এক সময় মৃত ভেবে পাকিস্তানিরা তাঁকে ফেলে যায়। ৭ দিন পর জ্ঞান ফিরে এলে মুমূর্ষু এই বীরাঙ্গনাকে বালাট সাব-সেক্টরে নিয়ে চিকিৎসার ব্যবস্থা করানো হয়। অসম সাহসী এই নারী সুস্থ হবার পর আমূল বদলে যান। চিকিৎসা শেষে দেশে ফিরে এসেই পাকিস্তানি বধের নেশায় আরও দৃঢ় প্রতিজ্ঞ, আরও অবিচল লক্ষ্যে প্রশিক্ষণ নেন অস্ত্র চালনার। শুরু হয় অস্ত্র হাতে জীবনের আরেক অধ্যায়। পাকিস্তানি হায়েনাদের বিরুদ্ধে সশস্ত্র সংগ্রাম। ১৯৭১ সালের নভেম্বর মাসে উপজেলার টেংরাটিলায় পাকবাহিনীর সাথে সম্মুখ যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন তিনি। বিদ্ধ হন গুলির আঘাতে। সুস্থ হয়ে আবারো অস্ত্র হাতে যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েন। মুক্তিবাহিনীর সাথে একে একে অংশগ্রহণ করতে থাকেন আমবাড়ি বাংলাবাজার টেবলাই, বালিউরা, মহব্বতপুর, বেতুরা, দূর্বীণটিলা, হায়দার টিলাসহ প্রায় ৯টি সম্মুখযুদ্ধে। খাসিয়া সম্প্রদায়ের ‘মুক্তির বেটি’ বলে পরিচিত কাকন বিবি। সেই কাকন বিবি আজ জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে। হাসপাতাল শয্যায় মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছেন। তাঁর একটাই আশা মৃত্যুর আগে ‘বীরপ্রতীক’ খেতাব সরকারিভাবে গেজেট প্রকাশ করা।
আমরা বীরাঙ্গনা কাকন বিবি’র সুস্থতা ও দীর্ঘায়ু কামনা করি এবং সরকারের কাছে দাবি জানাই তাকে ‘বীর প্রতীক’ খেতাবে ঘোষিত করা হোক।

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর

© All rights reserved © 2016-2021
Theme Developed By ThemesBazar.Com