মো. শাহজাহান মিয়া ::
জগন্নাথপুরে আরেকটি ব্রিজ দেবে গেছে। ভেঙে গেছে ব্রিজের দুই পাশের অ্যাপ্রোচ। এতে সরাসরি যোগাযোগ ব্যবস্থা বিচ্ছিন্ন রয়েছে। সেই সাথে ব্রিজটি বিপজ্জনকভাবে হেলে থাকায় দুর্ঘটনার আশঙ্কায় ব্রিজের নিচ দিয়ে নৌকা চলাচল বন্ধ রয়েছে। এতে জন ভোগান্তি বেড়েছে। তবে স্থানীয় জনগণের উদ্যোগে দেবে যাওয়া ব্রিজের পাশ দিয়ে বাঁশের সাঁকো তৈরি করা হয়েছে। বর্তমানে বিকল্প হিসেবে দীর্ঘ সাঁকো দিয়ে স্থানীয় জনগণ জীবনের ঝুঁকি চলাচল করছেন।
জানাগেছে, ২০১৪ সালে ত্রাণ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালয়ের অধীনে ২০ লক্ষ টাকা ব্যয়ে জগন্নাথপুর উপজেলার চিলাউড়া-হলদিপুর ইউনিয়নের গোলাপাড়া-নতুন পুঞ্জি গ্রামের বাইশাখালি খালের উপর নতুন ব্রিজ নির্মাণ করা হয়। তখন উদ্বোধনের আগেই নবনির্মিত ব্রিজে ফাটল দেখা দেয়। ব্রিজে ফাটল দেখা দেয়ায় উদ্বোধনের কথা থাকলেও অর্থ ও পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী এমএ মান্নান ব্রিজটি উদ্বোধন করেননি। এরপর ক্রমান্বয়ে ব্রিজের দুই পাশের অ্যাপ্রোচের মাটি সরে গিয়ে বড়-বড় গর্তের সৃষ্টি হয়। এ সময় স্থানীয় জনগণের উদ্যোগে ব্রিজের দুই পাশের অ্যাপ্রোচের ভাঙনে ছোট-ছোট বাঁশের সাঁকো তৈরি করা হয়। এভাবেই কয়েক বছর ধরে স্থানীয় জনতা চলাচল করে আসছিলেন।
হঠাৎ করে গত প্রায় দুই সপ্তাহ আগে ব্রিজটি খালের পশ্চিম দিকে দেবে যায়। ব্রিজটি দেবে যাওয়ায় যোগাযোগ ব্যবস্থা বন্ধ হয়ে পড়ে। অবশেষে স্থানীয় জনতা ও চিলাউড়া-হলদিপুর ইউনিয়ন পরিষদের উদ্যোগে দেবে যাওয়া ব্রিজের পাশে নতুন বাঁশের দীর্ঘ সাঁকো তৈরি করা হয়।
শনিবার সরেজমিনে দেখা যায়, ব্রিজটি দেবে গিয়ে বিপজ্জনকভাবে ঝুলে আছে। সময় স্থানীয় ইউপি সদস্য ও চিলাউড়া-হলদিপুর ইউনিয়নের প্যানেল চেয়ারম্যান বাবুল মাহমুদসহ ভুক্তভোগীদের মধ্যে অনেকে অভিযোগ করে জানান, ব্রিজটি নির্মাণের সময় অনেক অনিয়ম হয়েছিল। যে কারণে এ রাস্তায় যানবাহন চলাচলের আগেই নতুন ব্রিজে ফাটল দেখা দিয়েছিল। ফলে উদ্বোধনের কথা থাকলেও অর্থ ও পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী ব্রিজটি উদ্বোধন করেননি। পরে ব্রিজের দুই পাশের অ্যাপ্রোচের মাটি সরে যায়। আমরা ছোট সাঁকো দিয়ে কোন রকমে চলাচল করে আসছিলাম। তবে এখন ব্রিজটি হেলে দেবে যাওয়ায় আর চলাচল করা সম্ভব হচ্ছে না। বর্তমানে বাঁশের সাঁকো দিয়ে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে এ অঞ্চলের জনসাধারণ চলাচল করছেন। এছাড়া ব্রিজটি হেলে গিয়ে ধসে পড়ার আশঙ্কায় ব্রিজের নিচ দিয়ে নৌকা চলাচল বন্ধ রয়েছে। এতে জনগণের ভোগান্তি আরো বেড়েছে। তবে এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন দপ্তরে লিখিতভাবে বারবার আবেদন-নিবেদন করেও কোন কাজ হচ্ছে না। তাই জরুরি ভিত্তিতে এ ব্রিজটি ভেঙে ফেলে এখানে একটি নতুন ব্রিজ নির্মাণ করতে তারা সরকারের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের প্রতি আহবান জানান।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে জগন্নাথপুর উপজেলা ত্রাণ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) শহিদুজ্জামান জানান, এ ব্রিজের বিষয়ে অনেক আগেই সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে তদন্ত প্রতিবেদন পাঠানো হয়েছে। এখন পর্যন্ত কোন নির্দেশনা আসেনি। পরবর্তী নির্দেশনা আসলে অবশ্যই ব্যবস্থা নেয়া হবে।