হাওরের ফসল রক্ষা বাঁধের কাজে অনিয়ম-দুর্নীতির সাথে জড়িত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) মামলা দায়ের করেছে। সংবাদটি জানাজানির পর ফসলহারা ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকরা সুবিচার পাওয়ার আশায় সামান্য হলেও স্বস্তি পেয়েছেন। কৃষকদের দাবি দুর্নীতিবাজদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হোক। যাতে আগামীতে এমন দুর্নীতির পুনরাবৃত্তি না ঘটে।
গত রোববার বিকেলে সুনামগঞ্জ সদর মডেল থানায় দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)-এর সহকারী পরিচালক ফারুক আহমদ বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেন। সদর থানার মামলা নম্বর-২ এ লিপিবদ্ধ হয় মামলাটি। এতে পানি উন্নয়ন বোর্ড ও সুনামগঞ্জ অফিসের বরখাস্তকৃত নির্বাহী প্রকৌশলী আফসার উদ্দিনসহ পাউবো’র ১৪ জন কর্মকর্তা এবং ৪৬ জন ঠিকাদারকে আসামি করা হয়েছে। ওইদিনই সুনামগঞ্জ পাউবো’র বরখাস্তকৃত নির্বাহী প্রকৌশলী আফসার উদ্দিন ও ঠিকাদার বাচ্চু মিয়াকে ঢাকায় গ্রেফতার করা হয়।
ফসল রক্ষা বাঁধের কাজে অনিয়ম-দুর্নীতির জন্য এবার বাঁধ ভেঙে ফসলহানির ঘটনা ঘটে। মহাবিপর্যয় নেমে আসে হাওর এলাকায়। যার প্রভাব এখনো বিদ্যমান। ফসলহানির ঘটনার পর সুনামগঞ্জের কৃষক-জনতা দুর্নীতিবাজদের শাস্তির দাবিতে সোচ্চার হন, প্রতিবাদের ঝড় উঠে জেলাজুড়ে। ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনে নামেন জনতা। হাওরবাসীর দুঃখের ভাগিদার হতে সুনামগঞ্জ আসেন রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী। তারা ক্ষতিগ্রস্ত হাওরবাসীর পাশে দাঁড়ান। হাওরবাসীকে আশ্বস্ত করেন। পরবর্তীতে দুর্নীতি দমন কমিশন দুদক তদন্ত কমিটি গঠন করে। তদন্তে হাওরের ফসল তলিয়ে যাওয়ার কারণ হিসাবে বাঁধ নির্মাণে পাউবো কর্মকর্তা ও ঠিকাদারদের দুর্নীতির বিষয়ে নানা তথ্য পায় তদন্ত কমিটি। রোববার ৬১ জনকে আসামি করে দুদক মামলা দায়ের করে। এ পর্যন্ত দুই জন আসামিকে গ্রেফতার করা হয়েছে। আমরা দাবি জানাই, বাকি ৫৯ আসামিদের অবিলম্বে গ্রেফতার করে আইনের আওতায় নিয়ে আসা হোক। যাদের জন্য হাওরবাসী মহাসংকটে পড়েছেন তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হওয়াই কাম্য।