জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী ::
ছাতকের হাওরপাড়ে চলছে ফসলহারা কৃষকদের আহাজারি। বোরো ধান কাটার মৌসুমে হাওরে বইছে জলতরঙ্গ। ধান পাকার আগেই পাহাড়ি ঢল ও টানা বর্ষণে বাঁধ ভেঙে তলিয়ে গেছে সোনাধান। ফসলহারা কৃষকের অভিযোগ হাওর রক্ষা বাঁধ নির্মাণে পানি উন্নয়ন বোর্ড কর্মকর্তা, ঠিকাদারদের অনিয়ম-দুর্নীতির কারণেই ফসলহানির ঘটনা ঘটেছে। সঠিক সময়ে, সঠিকভাবে বাঁধগুলো নির্মাণ করা হলে এমন অবস্থার সৃষ্টি হতো না।
ছাতক উপজেলার জল্লার হাওর, ঝাওয়ার হাওর, দেখার হাওর, নাইন্দার হাওর, ডেকার হাওর, চাতলির হাওর, রাঙ্গা-ডিঙ্গা হাওর, চাউলীর হাওর, ফাটার হাওর, ইন্দুরার হাওর, সুরিগাঁও হাওর, ডিমকা, বাড়–কা, গয়ার, রুকুর হাওরসহ অন্তত ৩০টি হাওরের বোরো ফসল বৃষ্টির পানিতে নিমজ্জিত। হাওর জল আর কৃষকের কান্না এখানে একাকার হয়ে গেছে। তারা আজ দিশেহারা।
উপজেলা কৃষি বিভাগের দেয়া তথ্য অনুযায়ী, চলতি ২০১৬-১৭ বোরো মৌসুমে উপজেলায় ১২ হাজার ৭২৫ হেক্টর জমিতে বোরো চাষাবাদ করা হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে উচ্চ ফলনশীল ১১ হাজার ৬১০ হেক্টর, হাউব্রিড ৩৩০ হেক্টর ও স্থানীয় জাতের ৭৮৫ হেক্টর। এর মধ্যে ৯৮০ হেক্টর জমির ফসল গত ক’দিনের পাহাড়ি ঢল ও বৃষ্টির পানিতে তলিয়ে গেছে।
নোয়ারাই ইউনিয়নের নাইন্দার হাওরপাড়ের ফসলহারা কৃষকরা জানান, উপজেলার মধ্যে সবচেয়ে বড় নোয়ারাই ইউনিয়নের নাইন্দার হাওরের বোরো ফসল গত বছরের ন্যায় এবারো তলিয়ে গেছে। এ হাওরের ফসল দিয়ে নোয়ারাই ইউনিয়নসহ দোয়ারাবাজার উপজেলার আরো ক’টি ইউনিয়নের মানুষের বছরের খাবার আসতো। টানা দু’বছর একই কারণে ফসল হারিয়ে নিঃস্ব হয়ে গেছে নাইন্দা হাওরপাড়ের মানুষ। এছাড়া শিলাবৃষ্টিতে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে শাক-সবজি ক্ষেত।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ কে.এম বদরুল হক জানান, প্রতিদিনই ফসলহানির খবর আসছে। জরিপের মাধ্যমে সর্বশেষ তথ্য লিপিবদ্ধ করা হচ্ছে। ইতিমধ্যে পাওয়া খবরে প্রায় ১ হাজার ২৮০ হেক্টর জমির বোরো ফসল তলিয়ে গেছে।