সুনামকণ্ঠ ডেস্ক ::
আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে আওয়ামী লীগের সভানেত্রী শেখ হাসিনা সম্প্রতি দেশের বিভিন্ন জেলায় নৌকা মার্কায় ভোট চেয়ে প্রচার প্রচারণা চালালেও, মাঠে নামছে না বিএনপি। তবে বিএনপি হাইকমান্ড দল গুছিয়ে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রস্তুতি জোরদার করছে।
গত ২ মাস ধরে আওয়ামী লীগের সভানেত্রী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বগুড়া, লক্ষ্মীপুর, মাগুরা, ফরিদপুরসহ বিভিন্ন জেলায় জনসভা করে জাতীয় সংসদের জন্য নৌকা মার্কায় ভোট চাইছেন। অপরদিকে বিএনপি আগামী নির্বাচনে বিপুল ভোটে বিজয়ী হওয়ার জন্য দলে নেতাকর্মীদের কোন্দল মিটিয়ে বিএনপিকে শক্তিশালী করতে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছে।
দলীয় সূত্রে জানা যায়, বিএনপি চেয়ারপার্সন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া ৫ জানুয়ারি নির্বাচনের ভুলত্রুটি সংশোধন করে দলের সকল নেতাকর্মীদেরকে একত্র করে কাক্সিক্ষত ফলাফল অর্জন করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। দল গোছানোর বেলায় বিএনপি সম্প্রতি বেশ অগ্রসর হয়েছে। ইতোমধ্যে যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল ও মহিলা দলের নতুন কমিটি ঘোষণা করা হয়েছে। অধিকাংশ জেলা কমিটি পুনর্গঠনের কাজ শেষ করে জেলায় জেলায় চলছে বিএনপির সম্মেলন।
বিএনপির শীষ পর্যায়ের এক নেতা জানান, বর্তমানে দল গোছানোর কাজ চালিয়ে যাওয়ার পাশাপাশি নির্বাচন কমিশনকে নিরপেক্ষ রাখার দাবিতেও সোচ্চার বিএনপি। নির্বাচনকালীন সরকারের বিষয়ে প্রস্তাব তৈরির জন্য বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া কয়েকজন নেতাকে দায়িত্ব দিয়েছেন। নতুন নির্বাচন কমিশন গঠিত হয়ে যাওয়ায় এখন বিএনপি নির্বাচনকালীন সরকারের বিষয়েও দলীয় প্রস্তাব তুলে ধরবে। এ জন্য একটি কর্মকৌশলও হাতে নেয়া হয়েছে। আর আগে ভাগে একটি খসড়া নির্বাচনী ইশতেহার তৈরি করে পরে যাছাই-বাছাই শেষে তৈরি করা হবে চূড়ান্ত ইশতেহার। এ ইশতেহারে যেন চমক থাকে সে ধরনের পরিকল্পনা নিয়ে ইশতেহার তৈরি করা হচ্ছে। তবে ইতোপূর্বে বিএনপি ঘোষিত ‘ভিশন ২০৩০’ এর আলোকেই নির্বাচনী ইশতেহার তৈরি করা হবে।
অপর এক নেতা জানান, কুমিল্লা সিটি করর্পোরেশন নির্বাচনে বিএনপির প্রার্থী মেয়র মনিরুল ইসলাম সাক্কু ধানের শীষ প্রতীকে জয় লাভ করেছে। নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে মেয়র পদে বিএনপির প্রার্থীর পরাজয় হলেও আওয়ামী লীগের চেয়ে বিএনপির বেশি কাউন্সিলর পদে বিজয়ী হয়েছে। এতে আমরা একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ব্যাপারে আশাবাদী হয়ে উঠছি।
আরেকটি সূত্র জানায়, নির্বাচনকালীন সহায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন হলে বিএনপি জয়লাভ করবে। দলীয় ভোটের পাশাপাশি সরকার বিরোধী বড় একটি অংশের ভোটও বিএনপির পক্ষে আসবে। তার আগে খালেদা জিয়া চান দলকে আরও শক্তিশালী করতে হবে।
এ বিষয়ে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য লে. জেনারেল (অব.) মাহবুবুর রহমান গণমাধ্যমকে বলেন, আগামী নির্বাচন ২০১৮ কিংবা ১৯ সালের যেকোনো সময় হোক। নির্বাচন করার পরিবশে সৃষ্টি করা হলে বিএনপি ভোট চাইবে। আগে আমাদের দলের নেতাকর্মীদের একত্র করে দলীয় কোন্দল মিটিয়ে একসঙ্গে মাঠে নামব। সর্বস্তরে দলকে ঢেলে সাজিয়ে সাংগঠনিক কার্যক্রম আরও গতিশীল করার মধ্য দিয়ে নির্বাচনের প্রস্তুতি আরও জোরদার করা হবে। আমরা চাই একটি নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশন ও নির্বাচনকালীন সহায়ক সরকার। আর তা হলে জনপ্রিয় দল বিএনপি জনগণের ভোট পেয়ে ক্ষমতায় আসবে।