বিভিন্ন হাওরের ধানি জমিতে মারাত্মকভাবে পোকার আক্রমণে কৃষকদের এখন মাথায় হাত। পোকার আক্রমণে জমিতে রোপণ করা ধানেগাছের গোড়া পচে যাচ্ছে। ধানের গাছ ছাই রং ধারণ করছে। ধান গাছের মড়ক প্রতিরোধে কৃষক বিভিন্ন প্রকার ওষুধ প্রয়োগ করেও সুফল পাচ্ছেন না। এখন পর্যন্ত এর কারণ নির্ণয় বা প্রতিরোধে কৃষি কর্মকর্তা বা এদের মাঠ কর্মীদের দেখা পাওয়া যায়নি। সদর উপজেলার সুরমা, জাহাঙ্গীরনগর, রঙ্গারচর, কুরবাননগর ও মোল্লাপাড়া ইউনিয়নের ফসলি জমিতে এ রোগের প্রাদুর্ভাব দেখা দিয়েছে। বিশেষ করে কাংলার হাওরের ও ছোট হাওরের জমিতে ঊনত্রিশ জাতীয় ধান গাছের গোড়ায় পচন রোগে আক্রমণ হচ্ছে।
কৃষি অফিস থেকে জানা গেছে এ রোগের নাম ‘ভার্টাজি’। কৃষকদের বিস্তর অভিযোগ ইউনিয়নের দায়িত্বপ্রাপ্ত মাঠ সুপারভাইজারদের ওপর। দায়িত্বে থাকা সুপারভাইজাররা কোনদিন জমি পরিদর্শন করে আসেননি এমনকি ওই সকল এলাকায় সুপারভাইজার কে তাও জানেন না কৃষকরা।
কৃষকরা স্থানীয় বাজার থেকে ওষুধ কিনে তা প্রয়োগ করেছেন কিন্তু পোকা দমন করতে পারছেন না। স্থানীয় কৃষকরা আরো জানান, দুই মাস বা তারও আগে রোপণ করা জমিতে ধান গাছের গোড়া মরে যাচ্ছে। প্রথমে ধানগাছের গোছা কালো রং ধরে, পরে পাতাগুলো লাল হয়ে যায়। অধিকাংশ ধান ক্ষেতে মাজরা পোকার আক্রমণ মনে করে ওষুধ প্রয়োগ করে আসছেন কৃষকরা। কিন্তু কোনো ফল পাচ্ছেন না।
কৃষকরা আক্ষেপ করে বলেন, ভাল বীজ জেনে তারা সরকারি অফিস থেকেই প্রতি প্যাকেট ৩৬০ দরে ক্রয় করেছিলেন। কিন্তু চারা রোপণের ২-৩ মাসের মধ্যে এই অজানা রোগে তাদের সর্বনাশ হচ্ছে। জমিতে ধানের পুরো গোছা মরে শুকিয়ে যাচ্ছে। জমিগুলো ফাঁকা হয়ে গেছে।
কৃষকরা বলছেন এই ধরনের রোগ তারা এই প্রথম দেখেছেন। কিন্তু এই রোগ প্রতিরোধ, কিংবা কৃষকদের পরামর্শ দিতে কৃষি অফিসের কোন কর্মকর্তা এগিয়ে আসছেন না। ফলে কৃষকরা হতাশায় দিন কাটাছেন। দিন দিন এই রোগের বিস্তার ঘটছে।
আমরা আশা করবো কৃষি কর্মকর্তাসহ মাঠকর্মীরা জরুরিভিত্তিতে কৃষকদের পাশে দাঁড়াবেন এবং এই রোগ প্রতিরোধে কৃষকদের করণীয় কি এবং প্রতিরোধে সকল প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।