মাহমুদুর রহমান তারেক ::
সরকারি ঘোষণা অনুযায়ী ৫ মে থেকে সারাদেশে কৃষকদের কাছ থেকে সরাসরি ধান-চাল ক্রয় কার্যক্রম শুরু হওয়ার কথা ছিল। ৫দিন পেরিয়ে গেলেও সুনামগঞ্জ জেলার কোথাও সরকারিভাবে ধান ক্রয় শুরু করেনি কর্তৃপক্ষ। এক ছটাক ধান-চালও সরকারি খাদ্যগুদামে জমা হয়নি। এদিকে এ বছর ফসলহানির কারণে ধান-চাল বিক্রি করতে আগ্রহ দেখাচ্ছেন না কৃষকরা। এমন অবস্থায় ধান-চাল সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হবে কিনা এনিয়ে সংশয় দেখা দিয়েছে।
সদর উপজেলার কোরবান নগর ইউনিয়নের লালারচর গ্রামের কৃষক শৈলেন চন্দ্র পাল বলেন, ৬ কিয়ার বোরো ক্ষেত করেছিলাম। ক্ষেতের ফসল অর্ধেক পানিতে তলিয়ে গেছে। যে ধান আছে ইতাদি তো বছর যাইতো না, ধান বেচমু কিলা।
একই উপজেলার মোল্লাপাড়া ইউনিয়নের বুড়িস্থল গ্রামের কৃষক আব্দুর রকিব জানান, প্রায় ৪৫ কিয়ার বোরো জমি চাষ করেছিলাম। প্রায় সব ক্ষেত পানির তলে, কিছু ধান পানির তল থাকি আনছিলাম। বেচার মত ধান নাই।
একই গ্রামের কৃষক আব্দুল কায়ূম বলেন, আগে খুড়াকির চিন্তা কররাম ভাই, পরে বেচার চিন্তা।
দেখার হাওরের কৃষক হালিম মিয়া বলেন, যে ধান হাওর থাকি কাটছি, ই ধানও গ্যারা উঠি গেছে। ইতা ধান গুদামও কিনতো না।
এদিকে ধান-চাল ক্রয় তো দূরের কথা সরকারি সিদ্ধান্ত অনুযায়ী এখন পর্যন্ত কৃষকদের তালিকাও করতে পারেনি কৃষি বিভাগ। কৃষি বিভাগ থেকে তালিকা সরবরাহ করার পর ধান-চাল কেনার প্রক্রিয়া শুরু করবে জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক অফিস। এছাড়া তালিকা অনুযায়ী কৃষকদের ব্যাংক অ্যাকাউন্টও থাকতে হবে।
জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, এবার ২৩টাকা দরে ৯২০ টাকা মণ ধান ও ৩২ টাকা দরে ১২৮০ টাকা মণ চাল কৃষকদের কাছ থেকে সরাসরি ক্রয় করা হবে। জেলার ১১টি উপজেলায় মোট ৩০ হাজার ৯৬৯ মেট্রিক টন ধান ক্রয়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। তবে চাল ক্রয়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়নি।
জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক আবু নঈম মোহাম্মদ শফিউল আলম জানান, যথাসময়ে লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী ধান-চাল সংগ্রহ করতে পারবো বলে আশা করছি। আমরা সংগ্রহ অভিযানের নির্দেশনাপত্র উপজেলা পর্যায়ে পৌঁছে দিয়েছি। আশা করছি খুব দ্রুত সময়ের মধ্যে ধান-চাল ক্রয় শুরু করতে পারবো। আর কৃষকদের তালিকা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর আমাদের সরবরাহ করবে, সেই তালিকা দেখে আমরা কৃষকদের কাছ থেকে ধান-চাল সংগ্রহ করবো।