স্টাফ রিপোর্টার ::
বাস মালিক-শ্রমিকরা সিলেট-সুনামগঞ্জ মহাসড়কের ডাবর পয়েন্ট এলাকায় সোয়া দুই ঘণ্টা অবরোধ কর্মসূচি পালন করেছেন। মঙ্গলবার সকাল ১০টা ৪৫মিনিট থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত এ অবরোধ করে আঞ্চলিক মহাসড়কে চলাচলকারী বাস-মিনিবাস মালিক শ্রমিক সংগঠনের লোকজন। অবরোধের ফলে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হাজারো যাত্রীকে। অবরোধকালে সড়কের উভয় দিকে প্রায় দুই কিলোমিটারজুড়ে যানজটের সৃষ্টি হয়। পরে দক্ষিণ সুনামগঞ্জ থানা পুলিশ ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আলমগীর কবীর ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে অবরোধকারীদের অবরোধ তুলে নেওয়ার আহ্বান জানান। সমস্যা-সমাধানের আশ্বাস পেয়ে তারা অবরোধ তুলে নেন।
সকাল সাড়ে ১১টায় সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, উপজেলার ডাবর পয়েন্ট এলাকায় কয়েক শতাধিক যানবাহন অবরোধের কারণে দুই দিকে আটকা পড়েছে। আটকাপড়া পরিবহনের যাত্রীরা এ সময় চরম ক্ষোভ প্রকাশ করেন। তবে এসময় একাধিক রোগীবাহী অ্যাম্বুলেন্স, বৃদ্ধ পুরুষ মহিলা ও নারী যাত্রীরা চরম দুর্ভোগ পোহান।
জানা গেছে, বাস মিনিবাস মালিক শ্রমিকদের দাবি লেগুনা যেন তাদের দূরত্বসীমা মেনে ১৪ কিলোমিটারে ভিতরে চলাচল করে। তাদের দূরত্বসীমা সুনামগঞ্জ থেকে জয়কলস এলাকা পর্যন্ত। কিন্তু পাগলা থেকে ছয়হারা পর্যন্ত যাতায়াত করছে লেগুনা পরিবহন। এখন লেগুনা শ্রমিকরা জাউয়াবাজার পর্যন্ত চলতে চাইছে। এটা বাস মালিক-শ্রমিকরা মানতে পারছেন না। যার ফলে লেগুনা মালিক-শ্রমিকদের সঙ্গে তাদের বিরোধ চলছে।
লেগুনা শ্রমিকদের সাথে আলাপ করে জানা যায়, দীর্ঘদিন ধরে লেগুনাগুলো সুনামগঞ্জ-সিলেট সড়কসহ আভ্যন্তরীণ সকল সড়কেই চলাচল করছে। তারা জাউয়াবাজার পর্যন্ত নিয়মিত যাতায়াত করে। প্রশাসন যানবাহনের অপ্রতুলতা ও মানবিক কারণে লেগুনাকে চলতে দিচ্ছে। সংশ্লিষ্টরা জানান, সুনামগঞ্জ থেকে দিরাই-জামালগঞ্জ, গোবিন্দগঞ্জ থেকে সিলেটের বন্দর বাজার নিয়মিত যাচ্ছে। কিন্তু পাগলা বাজার থেকে জাউয়াবাজার যেতে বাধা দিচ্ছেন বাস-মিনিবাস মালিক-শ্রমিকরা। যাত্রীদের অভিযোগ কম দূরত্বের পথে যাত্রীদের নিতে চায় না বাসগুলো। ফলে যাত্রীরা বাধ্য হয়েই লেগুনায় যাতায়াত করছেন।
সুনামগঞ্জ জেলা বাস, মিনিবাস, মাইক্রোবাস মালিক গ্রুপের সভাপতি মো. মোজাম্মেল হক বলেন, ‘জেলা প্রশাসক শেখ রফিকুল ইসলাম আমাদের আশ্বস্ত করেছেন যে, সপ্তাহের মধ্যে সবার সাথে আলাপ করে সমস্যা সমাধান করা হবে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে আমরা অবরোধ তুলে নিয়েছি।’
লেগুনা শ্রমিক সমিতির সভাপতি সাঞ্জু মিয়া বলেন, ‘সুনামগঞ্জ থেকে জামালগঞ্জ, দিরাই লেগুনা চলছে। পাগলাবাজার থেকে জাউয়াবাজার যেতে বাধা দিচ্ছে আমাদের। কিন্তু এই দূরত্ব পথে বাসগুলো যাত্রীদের নিতে চায়না। আবার আমাদেরও যেতে বাধা দিচ্ছে। এটা হতে পারেনা। যাত্রীদের উন্নত সেবা দিতেই আমরা পাগলাবাজার-জাউয়াবাজার যাতায়াত করতে চাই।’
দক্ষিণ সুনামগঞ্জ থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আল আমিন বলেন, অবরোধের খবর পেয়ে আমরা ঘটনাস্থলে চলে যাই। কোন অপ্রীতিকর ঘটনা দিতে দেইনি। দুই পক্ষকে বুঝিয়ে আমরা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনি। প্রশাসন এই সমস্যা সমাধানে দুই পক্ষকে নিয়ে বসবে।
উল্লেখ্য, গত ১৮ জানুয়ারি একই ইস্যুতে পাগলাবাজার এলাকায় এক ঘণ্টা রাস্তা অবরোধ করেছিল উভয় দলের শ্রমিকবৃন্দ।