হাওরের ফসলহানির প্রভাব পড়ছে বিভিন্ন সেক্টরে। হাওর এলাকার এসএসসি উত্তীর্ণ প্রায় ২০ হাজার শিক্ষার্থীর উচ্চশিক্ষা নিয়ে শঙ্কিত হয়ে পড়েছেন তাদের অভিভাবকগণ। তাদের উচ্চশিক্ষা লাভের সুযোগ তৈরিতে সরকারের সহায়তা এখন জরুরি হয়ে পড়েছে। এসব শিক্ষার্থীদের এ মুহূর্তে কলেজে ভর্তি ফি, কলেজের নতুন পোষাক, নতুন বই কেনা নিয়ে দুশ্চিন্তা পিছু ছাড়ছেনা অভিভাবকদের।
জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা গেছে, এসএসসি, দাখিল ও টেকনিক্যাল মিলিয়ে এবার সুনামগঞ্জের প্রায় ২০ হাজার শিক্ষার্থী এসএসসি উত্তীর্ণ হয়েছে। এর বেশিরভাগই দুর্গত হাওরের ফসলহারা কৃষকের সন্তান। ফসলহারা কৃষকরা যখন দু’বেলা ভাতের জন্য প্রতিদিন নতুন নতুন সংকটে হাবুডুবু খাচ্ছে তখন সন্তানের উচ্চশিক্ষা নিয়ে চরম উৎকণ্ঠায় আছেন কৃষকরা। কোথাও কোথাও দুর্গত কৃষক সরকারি যৎসামান্য ত্রাণ পেলেও সন্তানের জন্য শিক্ষা সহায়তা পাচ্ছেন না। আদৌ এসএসসি উত্তীর্ণ সন্তানদের কলেজে ভর্তি করাতে পারবেন কি না তা নিয়ে সন্দিহান তারা।
জানা গেছে, এসএসসি উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীদের উচ্চশিক্ষা নিয়ে হাওর পরিদর্শনে এসে এই উদ্বেগের কথা জানিয়েছেন বিভিন্ন বেসরকারি সংগঠনের নেতৃবৃন্দ। এদিকে সম্প্রতি তাহিরপুর, জামালগঞ্জ ও ধর্মপাশার মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিকের প্রায় ৩৫ হাজার শিক্ষার্থীর বেতন নিজস্ব তহবিল থেকে দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন স্থানীয় সাংসদ ইঞ্জিনিয়ার মোয়াজ্জেম হোসেন রতন। তিনি ইতোমধ্যে ডিও লেটারের মাধ্য শিক্ষা বিভাগের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা ও প্রতিষ্ঠানের প্রধানদের এই পত্র দিয়েছেন। তার এই উদ্যোগকে আমরা সাধুবাদ জানাই।
জানাগেছে, এ বছর মাধ্যমিকে প্রায় ১০ ভাগ শিক্ষার্থী ঝরে গেছে। বিষয়টি উদ্বেগজনক। এই ঝরেপড়ার হার আরও বাড়তে পারে এই আশঙ্কা অমূলক নয়। এক্ষেত্রে সরকার এগিয়ে আসতে হবে জরুরি ভিত্তিতে। আমরা সরকারের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে হাওরের শিক্ষার্থীদের এক বছরের জন্য শিক্ষাবৃত্তি প্রদানের জন্য অনুরোধ জানাই। পাশাপাশি এক বছরের ভর্তি ফি মওকুফের আবেদন জানাই।