সুনামকণ্ঠ ডেস্ক ::
নিজের ব্যবহৃত হেলমেট দিয়ে এলোপাতাড়ি আঘাত করে, কিল-ঘুষি ও লাথি মেরে অমিত দাস শিবুকে হত্যা করা হয়। অমানুষিক কায়দায় হত্যার পর অপরাধীরা তার নিথর দেহ অন্যত্র টেনে নিয়ে ফেলে রাখেন। আর এই হত্যাকা-ে এক নারীসহ অংশ নেন আটজন। হত্যাকা-ে সরাসরি জড়িত ফয়সল আহমদ (৩২) নামে এক যুবককে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। তিনি নগরের এয়ারপোর্ট থানার শাহী ঈদগাহ হাজারীবাগ ৪৮ নম্বর বাসার মৃত আব্দুল মুকিতের ছেলে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তিনি পুলিশের কাছে অমিতকে হত্যার এমন বর্ণনা দিয়েছেন।
ফয়সলের দেওয়া বর্ণনা মতে ও হত্যাকা-ের ক্লু উদঘাটনের দাবি করে সিলেট মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (মিডিয়া) মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানান, প্রাথমিক তদন্তে ও গ্রেপ্তার ফয়সল আহমদকে জিজ্ঞাসাবাদে হত্যাকা-ে আরও কয়েকজন জড়িত থাকার প্রমাণ মিলেছে। ফয়সল ও তার সহযোগী আরও কয়েকজন অমিত দাস শিবুকে গত বৃহ¯পতিবার (২৫ এপ্রিল) রাত আনুমানিক সাড়ে ৯টা থেকে সাড়ে ১০টার মধ্যে হত্যা করা হয়। অমিতের মাথাসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে এলোপাথাড়ি কিল, ঘুষি ও লাথি মারা হয়। হত্যাকারীদের একজন অমিতের ব্যবহৃত হেলমেট দিয়ে তার শরীরের বিভিন্নস্থানে উপর্যুপরি আঘাত করে। মারপিটের এক পর্যায়ে অমিত অচেতন হয়ে মাটিতে পড়েন। মৃত্যু নিশ্চিত করেই তারা ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন। পরে শুক্রবার (২৬ এপ্রিল) ভোর পৌনে ৪টার দিকে নগরের শাহী ঈদগাহ হাজারিবাগ এলাকার পেছন থেকে অমিতের মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।
নিহত অমিত দাস শিবু (৩৬) সুনামগঞ্জ জেলার দিরাই উপজেলার এলেংজুড়ি গ্রামের মৃত গৌর চাঁদ দাসের ছেলে। দুই সন্তানের জনক অমিত সপরিবারে নগরের কানিশাইল এলাকায় বসবাস করতেন। তিনি সিলেটের স্থানীয় পত্রিকা দৈনিক উত্তরপূর্বর ক¤িপউটার ইনচার্জ ছিলেন।
বৃহ¯পতিবার (২৫ এপ্রিল) দিনগত রাত পৌনে ৪টার দিকে মরদেহ উদ্ধারকালে সুরতহালেও পুলিশ আঘাতের চিহ্ন পায়। সে সময় তার কান দিয়ে রক্ত ঝরছিলে এবং মাথায় আঘাতের চিহ্ন ছিল। মরদেহ উদ্ধারের পর ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ময়নাতদন্ত শেষে নগরের চালিবন্দর মহাশশ্মানে তার মরদেহ দাহ করা হয়।
এরপর শনিবার (২৭ এপ্রিল) দুপুরে অমিত দাসের বড় ভাই অনুকূল দাস বাদী হয়ে সিলেট এয়ারপোর্ট থানায় অজ্ঞাতদের নামে একটি হত্যা মামলা করেন। এরপর অভিযান চালিয়ে ফয়সল আহমদকে গ্রেপ্তার করে এয়ারপোর্ট থানা পুলিশ।
মহানগর পুলিশের মুখপাত্র মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম আরও জানান, গ্রেপ্তার ফয়সল দুর্ধর্ষ সন্ত্রাসী। তার বিরুদ্ধে চুরি, ছিনতাই, ডাকাতিসহ এসএমপির কোতোয়ালি থানায় চারটি এবং এয়ারপোর্ট একটি মামলা আছে। গ্রেপ্তার ফয়সলকে সোমবার (২৯ এপ্রিল) আদালতে হাজির করে ৭ দিনের রিমান্ডে নেওয়ার আবেদন করেছে পুলিশ। হত্যাকা-ের পূর্ণাঙ্গ রহস্য উদ্ঘাটন করা হবে বলেও আশাবাদী তিনি। এছাড়া জড়িত অন্য অভিযুক্তদের গ্রেপ্তার অভিযান অব্যাহত আছে।