স্টাফ রিপোর্টার ::
সুনামগঞ্জ-১ আসনের সংসদ সদস্য ইঞ্জিনিয়ার মোয়াজ্জেম হোসেন রতনের বাসায় হামলার ঘটনায় দায়ের করা মামলার এক আসামির বিরুদ্ধে স্বাক্ষর জাল করে হলফনামা (এফিডেভিট) তৈরির অভিযোগ উঠেছে। মামলার আসামি তালিকা থেকে বাদ দেয়া সংক্রান্ত এফিডেভিটটি (স্বাক্ষর জাল করে) ছাত্রলীগের কেন্দ্রে জমা দেয়া হয়েছে বলে জানাগেছে। মামলার বাদী ও সাংসদ রতনের বাসার কেয়ারকেটার বলেছেন, এ ব্যাপারে তিনি আইনের আশ্রয় নিচ্ছেন।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, চলতি বছরের মার্চ মাসের ২ তারিখে সুনামগঞ্জ-১ আসনের এমপি ইঞ্জিনিয়ার মোয়াজ্জেম হোসেন রতনের বাসভবনে হামলা হয়। এ ঘটনায় ছাত্রলীগ নেতা দিপংকর কান্তি দে-সহ বেশ কয়েকজনকে আসামি করা হয়। আসামিদের মধ্যে বেশ কয়েকজন কারাগারে ও পুলিশের রিমান্ডে ছিলেন। কেউ কেউ আদালত থেকে জামিনও নেন।
মাসখানেক আগে পূর্বের কমিটি বিলুপ্ত হওয়ার পর সুনামগঞ্জ জেলা ছাত্রলীগের নতুন কমিটি গঠনের তোড়জোড় শুরু হয়। সাংসদ রতনের বাসায় হামলা ঘটনায় দায়েরকৃত মামলার আসামি দিপংকর কান্তি দেও সম্ভাব্য পদপ্রত্যাশী।
গত ৭ মে মামলার বাদী সৈয়দ সুজন আহমদের স্বাক্ষর জাল করে ১০০টাকা মূল্যমানের ৩টি স্ট্যাম্পে নোটারি পাবলিকের ‘ভুয়া কাগজপত্র’ কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ নেতৃবৃন্দের কাছে জমা দেয়া হয়। মামলার বাদী সৈয়দ সুজন আহমদের স্বাক্ষর জাল করে নোটারি পাবলিকের কাগজে লেখা হয়, ‘মামলার ১১নং আসামি দিপংকর কান্তি দে, বয়স ৩০ বৎসর, পিতা- দিপাল কান্তি দে, সাং- নতুনপাড়া, থানা ও জেলা- সুনামগঞ্জ। আমার এজহারে বর্ণিত ঘটনাস্থলে সে ছিল না। কিন্তু অপ্রণিধান বশতঃ বর্ণিত দিপংকর কান্তি দে-কে আসামি শ্রেণিভুক্ত করা হয়েছে।’ এতে দু’জনকে সাক্ষী ও একজন আইনজীবীর শনাক্তকারী হিসেবে স্বাক্ষর রয়েছে।
মামলার বাদী সৈয়দ সুজন আহমদ বলেন, আমি কোন এফিডেভিটে স্বাক্ষর করিনি। এফিডেভিটে যে স্বাক্ষর আছে এটা আমার নয়। আমি এ ব্যাপারে আইনানুগ ব্যবস্থা নেব।
সাংসদ ইঞ্জিনিয়ার মোয়াজ্জেম হোসেন রতন বলেন, কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক আমাকে জানান আমার বাসায় হামলার ঘটনায় দায়েরকৃত মামলার আসামি দিপংকরকে তালিকা থেকে বাদ দেয়া হয়েছে এবং কাগজপত্র (এফিডেভিট) দেখানো হয়। পরে আমি তাদের জানাই বিষয়টি সঠিক নয় এবং মামলার বাদীর স্বাক্ষর জাল করে হলফনামা তৈরি করা হয়েছে। এমপি রতন বলেন, বিষয়টি খুবই ন্যাক্কারজনক। যে কাজটি করেছে তার শাস্তি হওয়া উচিত।
সুনামগঞ্জের নোটারি পাবলিক অ্যাড. মোহাম্মদ আবুল আশরাফ জানান, নোটারি পাবলিক এফিডেভিটকারীকে শনাক্ত করে না। আইনজীবীকে শনাক্ত করে। অ্যাড. মো. মিজানুর রহমানই এফিডেভিটটির শনাক্তকারী। তার শনাক্ত মোতাবেক হলফনামাটি সম্পাদন করা হয়েছে।
অ্যাড. মো. মিজানুর রহমান জানান, ‘আমার সামনেই দস্তখত দিয়েছে, সাক্ষীও আছে। এফিডেভিটের পাশে সাক্ষীর স্বাক্ষরও আছে।’ সৈয়দ সুজন আহমদ এফিডেভিটের বিষয়টি অস্বীকার করছেন এ বিষয়ে বলা হলে তিনি বলেন, ‘সে তার প্যাঁচে পড়বে। আমার তো কিছু করার নাই।’
এ ব্যাপারে ছাত্রলীগ নেতা দিপংকর কান্তি দে বলেন, ‘এফিডেভিট এটা সত্য। বাদী এফিডেভিট করে দিয়েছে। বাদীর সিগনেচার-টিগনেচার এফিডেভিটে সবই আছে। এটাতো লিগ্যাল। এখন হয়তো কোনো চাপে পড়ে বাদী অস্বীকার করছে। এটা কোনো প্রতারণা নয়। সবই ঠিক আছে।’ কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের কাছে এফিডেভিটের কপি জমা দিয়েছেন কিনা জানতে চাইলে বলেন, ‘আমি এটা জানি না।’