স্টাফ রিপোর্টার ::
‘হাওর মন্ত্রণালয় চাই, ফসল রক্ষার টেকসই পরিকল্পনা চাই’ এই প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে এবং আসন্ন বাজেট ২০১৭-২০১৮ উপলক্ষে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। শনিবার সকালে শহরের হাছননগর এলাকায় সুজন কার্যালয়ে এ আলোচনা সভার আয়োজন করে গণতান্ত্রিক বাজেট আন্দোলন জেলা শাখা। আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন শিক্ষাবিদ ধূর্জটি কুমার বসু।
বিভিন্ন বিষয়ে ১১টি দাবি উত্থাপন করে সভায় বক্তারা বলেন, ‘বালি-পলিতে ভরাট হয়ে যাওয়া বিল-নদী সমূহ মেঘনা মোহনা পর্যন্ত ক্যাপিটাল ড্রেজিংয়ের উদ্যোগ ও প্রয়োজনীয় বাজেট বরাদ্দ দিতে হবে, ব্রিজ এবং উফসি জাতের ধান সমূহের মেয়াদকাল কমিয়ে আনা ও স্থানীয় আগাম জাতের ফসলের উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধিতে গবেষণার জন্য প্রয়োজনীয় বাজেট বরাদ্দ করতে হবে, হাওর অঞ্চলে সহজ ও সুলভে উচ্চশিক্ষা গ্রহণের সুযোগ সৃষ্টির জন্য মেডিকেল কলেজ, পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন করতে হবে ও আগামী ফসল ঘরে উঠা না পর্যন্ত ছাত্র-ছাত্রীদের বেতন ও অন্যান্য খরচ মওকুফ করতে হবে, বিশেষ নীতিমালা মাধ্যমে ভ্যাট ট্যক্সের বোঝা থেকে জনসাধারণ থেকে মুক্তি দিতে হবে, সুনামগঞ্জের ২৫০ শয্যা সদর হাসপাতালসহ প্রতিটি স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, কমিউনিটি হাসপাতাল ও অন্যান্য স্বাস্থ্যকেন্দ্রসমূহে প্রয়োজনীয় ঔষধ সরঞ্জাম ও লোকবল জরুরিভিত্তিতে নিয়োগ করতে হবে। বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি সংস্থা থেকে কৃষক মৎস্যজীবীদের প্রদত্ত ঋণ আদায় এক বছরের জন্য স্থগিত এবং এর উপর যাবতীয় সুদ পুরোপুরি মওকুফ করতে হবে এবং নতুন ঋণ দিতে হবে। অভিবাসন ঠেকানোর লক্ষ্যে হাওরাঞ্চলে বিকল্প কর্মসংস্থানের ক্ষেত্র তৈরি করতে হবে। হাওর অঞ্চলের জন্য পৃথক মন্ত্রণালয় এবং ফসল রক্ষার জন্য টেকসই পরিকল্পনা ও বাজেট বরাদ্দ দিতে হবে। স্থানীয় সরকারের সংস্থাসমূহ সকল উন্নয়নের কেন্দ্রবিন্দু হিসেবে গড়ে তুলার জন্য এর অবকাঠামো, যথাপ্রয়োজনীয় জনবল ও ক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত ও বাজেট বরাদ্দ করতে হবে। উন্নয়ন পরিকল্পনা গ্রহণ ও বাস্তবায়নের আমলা শ্রেণির একচেটিয়া আধিপত্য বাতিল করে পর্যবেক্ষণ মনিটরিংসহ বাস্তবায়নের সকল স্তরে জনগণের অংশগ্রহণ করতে হবে।
অব্যাহত বেতন বৃদ্ধির ফলে আয়ের পর্বতসমান বৈষম্য সৃষ্টি হয়েছে, মূল্যস্ফীতির লাগাম টেনে ধরা যাচ্ছে না। ফলে মানুষ ক্রয় ক্ষমতা হারাচ্ছে, সাধারণ মানুষের জীবনযাপনের মৌলিক অধিকার ক্ষুণ্ন হচ্ছে। সুতরাং সম্পদের সুষম বণ্টন রাজস্ব তহবিলের উপর চাপ কমানোর লক্ষ্যে বেতন বৃদ্ধির প্রবণতা ও সিদ্ধান্ত বাতিল করতে হবে।
সভায় বক্তব্য রাখেন সাবেক অধ্যক্ষ পরিমল কান্তি দে, নারীনেত্রী শীলা রায়, সদর উপজেলা পরিষদের মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান নিগার সুলতানা কেয়া, দৈনিক সুনামকণ্ঠ সম্পাদক ও প্রকাশক বিজন সেন রায়, জেলা কমিউনিস্ট পার্টির সভাপতি চিত্তরঞ্জন তালুকদার, সরকারি মহিলা কলেজের সহকারি অধ্যাপক শাহাদাৎ হোসেন, জেলা উদীচী’র সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম, সালেহীন শুভ, রমেন্দ্র কুমার দে মিন্টু প্রমুখ। সভা পরিচালনা করেন নির্মল ভট্টাচার্য্য।