আয়োডিন মানব দেহের জন্য অতিপ্রয়োজনীয় একটি খাদ্য উপাদান। এটি মানব দেহে থাইরয়েড হরমোন তৈরি করতে সহায়তা করে। আয়োডিনের অভাবে নানাবিধ শারীরিক ও মানসিক সমস্যা দেখা দেয়।
এক সমীক্ষায় দেখা গেছে, বাংলাদেশের শতকরা প্রায় ৪৭ ভাগ লোক আয়োডিনের অভাবজনিত সমস্যায় আক্রান্ত। আয়োডিনের অভাবজনিত প্রতিবন্ধী দেশের মোট জনসংখ্যার প্রায় ১০ ভাগ লোক। দেশের কোনো অঞ্চলই আয়োডিনের অভাবজনিত সমস্যামুক্ত নয়। ক্রমাগতভাবে আয়োডিনবিহীন খাবার খেয়ে আয়োডিনের অভাবজনিত সমস্যায় আক্রান্ত হয়।
আয়োডিনের অভাবে শুধুমাত্র ঘ্যাগ বা গলগ- রোগ হয়ে থাকে। প্রকৃতপক্ষে আয়োডিনের অভাবজনিত সমস্যার ব্যাপকতা অনেক বিস্তৃত। আয়োডিনের অভাবে ঘ্যাগ বা গলগ- ছাড়াও মায়ের বিকলাঙ্গ সন্তান প্রসব, স্নায়ুবিক দুর্বলতা, বধিরতা, বাকশক্তিহীনতা, বিভিন্ন রকম দৈহিক ত্রুটি, মানসিক প্রতিবন্ধকতা বা হাবা-গোবা হওয়া, বামন হওয়া, শিশুর মস্তিষ্ক গঠনে বাধাপ্রাপ্ত হওয়ার মত মারাত্মক সমস্যা দেখা দিতে পারে। একজন প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের প্রতিদিন গড়ে ১৫০ মাইক্রোগ্রাম আয়োডিনের প্রয়োজন। স্বাভাবিকভাবে পানি এবং দৈনন্দিন খাবার থেকেই এ পরিমাণ আয়োডিন পাওয়া যেতে পারে।
আয়োডিনের অভাবজনিত সমস্যা প্রতিরোধের অন্যতম সহজ ও কার্যকরী উপায় হচ্ছে আয়োডিনযুক্ত লবণ ব্যবহার করা। সঠিক মাত্রায় আয়োডিনমিশ্রিত লবণ বাজারজাত করে তা ব্যবহারে জনগণকে উদ্বুদ্ধ করতে হবে।
আয়োডিনের ঘাটতি পূরণে আয়োডিন যুক্ত লবণের বিকল্প নেই। আয়োডিনযুক্ত লবণ ব্যবহারে জনসচেতনতা গড়ে তুলতে হবে। এ ব্যাপারে উঠান বৈঠক, প্রচার-প্রচারণা ব্যাপক হারে বৃদ্ধি করার পাশাপাশি সমাজের দায়িত্বশীল ব্যক্তিবর্গ, স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন, জনপ্রতিনিধি, এনজিও কর্মী, সমাজের সচেতন নাগরিককে অগ্রণী ভূমিকা পালন করতে হবে।
আমরা মনে করি, ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়তে হলে সবার আগে দরকার বুদ্ধিমান প্রজন্ম। আর বুদ্ধিমান প্রজন্মের জন্য প্রয়োজন সুস্থ মা, যিনি আয়োডিন স্বল্পতায় থাকবেন না। তাহলেই আমরা ডিজিটাল বাংলাদেশ গঠনের ক্ষেত্রে আমাদের অভীষ্ট লক্ষ্যে পৌঁছুতে পারবো। এ বিষয়ে সরকারকে বিশেষ ভূমিকা পালন করতে হবে।