ধর্মপাশা প্রতিনিধি ::
ধর্মপাশা উপজেলার সুখাইড় রাজাপুর উত্তর ইউনিয়নের বাবুপুর বাজার সংলগ্ন জমিতে প্যান্ডেল করে গত রোববার রাতে যাত্রানুষ্ঠানের নামে জমজমাট জুয়ার আসর অনুষ্ঠিত হয়েছে। অভিযোগ রয়েছে, স্থানীয় ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের নেতৃত্বে এই যাত্রানুষ্ঠানের নামের জুয়ার আসরের আয়োজন করা হয়। কিন্তু সোমবার বিকেলে ধর্মপাশা থানা পুলিশ সরেজমিনে ঘটনাস্থলে গিয়ে ওই যাত্রানুষ্ঠানের প্যান্ডেল অপসারণ করতে আয়োজক কমিটি বললে তারা সঙ্গে সঙ্গে এটি অপসারণ করার ব্যবস্থা করেন।
এলাকাবাসী, প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার বাবুপুর বাজারের পশ্চিম পাশে তিন একর জায়গাজুড়ে যাত্রানুষ্ঠানের জন্য প্যান্ডেল তৈরি করে গত রোববার ও গত সোমবার দুই দিনব্যাপী যাত্রানুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছিল। গত রোববার রাত দুইটার দিকে জেনারেটরের আলোতে যাত্রা অনুষ্ঠান শুরু হওয়ার আগেই রাত দশটার দিকে প্যান্ডেলের এক পাশে পিনবোর্ড, ওয়ানটেন, চড়কাসহ নানা রকমের জমজমাট জুয়ার আসর শুরু হয় এবং তা চলে ভোররাত পর্যন্ত। যাত্রা ও জুয়ার পাশাপাশি চলে অশ্লীল নৃত্য। মঙ্গলবারও একই কায়দায় অসামাজিক কার্যক্রম শুরু হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু ধর্মপাশা থানার একদল পুলিশ বাবুপুর এলাকায় যান এবং আয়োজক কমিটিকে দ্রুত যাত্রার প্যান্ডেল অপসারণ করার ব্যবস্থা করতে বলা হলে আয়োজকরা তা সরিয়ে নেন।
সুখাইড় রাজাপুর উত্তর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক রফিকুল বারী চৌধুরী দাবি করেন, এটি যাত্রানুষ্ঠান নয় নাটক ছিল। স্থানীয় আওয়ামী লীগ, যুবলীগসহ স্থানীয় নেতৃবৃন্দের সঙ্গে পরামর্শ করে এলাকাবাসীর বিনোদনের জন্য প্রশাসনের অনুমতি না নিয়ে দুইদিন ব্যাপী নাটকের আয়োজন করেছিলাম। সেখানে কোনো জুয়ার আসর হয়নি। তিনি বলেন, থানা পুলিশ প্যান্ডেল অপসারণ করতে বলায় আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হয়ে আমরা তা সরানোর ব্যবস্থা করেছি এবং নাটক অনুষ্ঠানের সিদ্ধান্ত বাতিল করেছি। এর সঙ্গে সম্পৃক্ত অন্যান্য নেতা কর্মীরাও এই অভিযোগ অস্বীকার করেন।
উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি আলমগীর কবীর বলেন, আওয়ামী লীগ নেতা রফিকুল বারী চৌধুরী নেতৃত্বে স্থানীয় কিছুসংখ্যক নেতাকর্মী বাবুপুর বাজারে যাত্রানুষ্ঠান ও জুয়ার আসরের আয়োজন করার বিষয়টি আমি স্বাভাবিকভাবে মেনে নিতে পারছি না। এ ধরনের অসামাজিক কার্যক্রমের আয়োজন করায় সংগঠনের সুনাম বিনষ্ট হয়েছে।
ধর্মপাশা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) গোলাম কিবরিয়া বলেন, রোববার আমি ছুটিতে ছিলাম। যাত্রানুষ্ঠান আয়োজনে কোনো অনুমতি নেওয়া হয়নি। সোমবার কর্মস্থলে এসে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে ওইদিন বিকেলে থানা পুলিশ পাঠিয়ে ওই যাত্রানুষ্ঠানের প্যান্ডেল অপসারণের ব্যবস্থা করা হয়েছে। পুলিশের এতে কোনো সম্পৃক্ততা ছিল না। অনুমতি না নিয়ে যাত্রানুষ্ঠানের আয়োজন ও জুয়ার আসর পরিচালনার সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।