1. [email protected] : admin2017 :
  2. [email protected] : Sunam Kantha : Sunam Kantha
  3. [email protected] : wp-needuser : wp-needuser
বৃহস্পতিবার, ০২ মে ২০২৪, ০৯:০৬ পূর্বাহ্ন
ঘোষণা ::
সুনামগঞ্জ জেলার জনপ্রিয় সর্বাধিক পঠিত পত্রিকা সুনামকন্ঠে আপনাকে স্বাগতম। আমাদের পাশে থাকার জন্য সকলকে আন্তরিক অভিনন্দন। আমাদের পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দিতে যোগাযোগ করুন - 01711-368602

সুনামগঞ্জ-২ আসনে উপনির্বাচন : সুরঞ্জিতের পরিবার থেকেই প্রার্থী চায় তৃণমূল

  • আপডেট সময় শুক্রবার, ২৪ ফেব্রুয়ারী, ২০১৭

বিশেষ প্রতিনিধি ::
‘সুরঞ্জিত সেনগুপ্তের পরিবার থেকে উপনির্বাচনে প্রার্থী হলে দলে ঐক্য বজায় থাকবে। নইলে তৃণমূলে সংগঠিত আওয়ামী লীগ বিশৃঙ্খল হয়ে পড়বে। তাছাড়া অন্য আসনের সঙ্গে এ আসনের ভোটের হিসাব মিলবে না। এখানে একটি নির্দিষ্ট জনগোষ্ঠীর বিশাল ভোটব্যাংক রয়েছে। যাদের রয়েছে সুরঞ্জিত সেনগুপ্তের পরিবারের প্রতি বিশেষ টান। জননেতার প্রতি জনতার সেই শ্রদ্ধার কারণেই আমরা উপজেলা আওয়ামী লীগ গত ১৪ ফেব্রুয়ারি কার্যনির্বাহী কমিটির সভা করে সুরঞ্জিত সেনগুপ্তের পরিবার থেকে প্রার্থী দেওয়ার জন্য কেন্দ্রকে রেজুলেশন করে অনুরোধ জানিয়েছি।’
এভাবেই সদ্য প্রয়াত জাতীয় নেতা দিরাই-শাল্লা আসন থেকে সাতবার নির্বাচিত সংসদ সদস্য সুরঞ্জিত সেনগুপ্তের আসনে আগামী ৩০ মার্চ অনুষ্ঠেয় উপনির্বাচন প্রসঙ্গে নিজের মতামত দেন দিরাই উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি প্রবীণ আওয়ামী লীগ নেতা আছাব উদ্দিন।
তাঁর কথার সূত্র ধরেই শাল্লা উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মহিমচন্দ্র দাশ ও প্রবীণ আওয়ামী লীগ নেতা অলিউল হক বলেন, দিরাই-শাল্লার আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী সবাই সুরঞ্জিত সেনগুপ্তকে নেতা মানত। মান-অভিমান থাকলেও তাঁর নির্দেশনা অমান্য করত না কেউ। দীর্ঘদিন ধরে সংসদ সদস্য থাকায় এলাকার প্রতিটি গ্রামের দলীয় সাধারণ কর্মী পর্যন্ত তাঁর পরিচিত ছিল। সে হিসেবে তিনি সবার ভালোবাসাও পেয়েছিলেন। এসব কারণে সুরঞ্জিত সেনগুপ্তের পরিবারের প্রতিও সাধারণ মানুষের বিশেষ ভালোবাসা রয়েছে। এ আসনে উপনির্বাচনে তাঁর পরিবারের কেউ প্রার্থী হলে কোনো নেতাকর্মী দ্বিমত হবে না। বিশেষ করে সুরঞ্জিত সেনগুপ্তের স্ত্রী (যিনি তাঁর রাজনৈতিক সহচরও) জয়া সেনগুপ্তের কথাই ভাবছে নেতাকর্মীরা। তিনি বলেন, গত বুধবার শাল্লা উপজেলা আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী কমিটির সভা করে আমরা সর্বসম্মতিক্রমে নেতার পরিবার থেকে প্রার্থী দেওয়ার দাবি জানিয়েছি। এই দাবিতে আমরা দু’একদিনের মধ্যে কেন্দ্রকে রেজুলেশনের কপি সংযুক্ত করে লিখিতভাবে জানাব।
এভাবে প্রবীণ, নবীন আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীসহ সুরঞ্জিত সেনগুপ্তের রাজনৈতিক অনুসারীরা এখন তার শূন্য আসনে উপনির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করায় আলোচনায় ব্যস্ত। নেতার স্মৃতিবিজড়িত আসনে তার পরিবারের কেউ প্রার্থী হচ্ছে না অন্য কেউ তাই নিয়েই এখন দিরাই-শাল্লার সর্বত্র আলোচনা। তবে এই আলোচনার উপসংহার টানছেন নেতা-কর্মীরা নিজেরাই। শেষ পর্যন্ত নেতার আসনে তার পরিবারের সদস্যদের চান। বিশেষ করে দীর্ঘদিন ধরে সুরঞ্জিত সেনগুপ্তের সঙ্গে বিভিন্ন সময়ে রাজনৈতিক কর্মসূচিসহ নির্বাচনের গুরুত্বপূর্ণ সময়ে তার স্ত্রী জয়া সেনগুপ্ত কাজ করায় তাকেই ভাবছেন নেতাকর্মীরা। উপনির্বাচনে উচ্চশিক্ষিত ও রাজনীতি সচেতন জয়া সেনগুপ্ত প্রার্থী হলে বিপুল ভোটে পাশ করবেন এমনটাই বলছেন তারা।
স্থানীয় সূত্র মতে, গত ১৪ ফেব্রুয়ারি দিরাই উপজেলা আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী কমিটির জরুরি সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। সভায় দলীয় প্রার্থী হিসেবে সুরঞ্জিত সেনগুপ্তের পরিবারের সদস্যদের পছন্দের কথা জানানো হয়। এদিকে এ আসনটি শূন্য ঘোষণা করার পর আওয়ামী লীগের একাধিক মনোনয়নপ্রত্যাশী মাঠে নেমেছেন। মনোনয়ন পেতে তদবির শুরু করেছেন জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মতিউর রহমান, সাধারণ সম্পাদক ব্যারিস্টার এম এনামুল কবির ইমন, প্রয়াত জাতীয় নেতা স্থানীয় সাবেক সংসদ সদস্য আবদুস সামাদ আজাদের ছেলে আজিজুস সামাদ ডন, দিরাই পৌরসভার সাবেক মেয়র আজিজুর রহমান বুলবুল, সত্তরের নির্বাচনে এ আসনে আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী আলী আমজাদ চৌধুরীর ছেলে শাহরিয়ার চৌধুরী বিপ্লব, সিলেট মহানগর আওয়ামী লীগ নেতা অ্যাডভোকেট শামছুল ইসলাম, সুরঞ্জিত সেনগুপ্তের সাবেক এপিএস ডালটন চৌধুরী, শাল্লা উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান অবনী মোহন দাস প্রমুখ। তাছাড়া জাসদ থেকে সালেহীন চৌধুরী ও জাতীয় পার্টি থেকে জামিল চৌধুরীর নির্বাচন করার কথা রয়েছে। বিএনপি সরাসরি নির্বাচনে অংশ না নিলেও ওই ঘরানার একাধিক ব্যক্তি নির্বাচনে প্রার্থী হতে পারেন বলে জানা গেছে।
জানা গেছে, সম্প্রতি ঢাকায় আওয়ামী লীগের নীতিনির্ধারণী মহলের একটি ঘরোয়া বৈঠক হয়েছে। সেখানে জয়া সেন প্রার্থী না হলে তিনি কাকে সমর্থন দেবেন এমন বিষয় নিয়েও কথা হয়েছে। সূত্র জানিয়েছে, সুরঞ্জিত সেনগুপ্তের পরিবারের কেউ প্রার্থী না হলে তাঁর আসনে তাঁর পরিবার আজিজুর রহমান বুলবুলকে সমর্থন দিতে পারেন। ক্লিন ইমেজের তরুণ রাজনীতিবিদ বুলবুলের প্রতিও দিরাইয়ের মানুষের বিশেষ টান রয়েছে।
নেতাকর্মীরা জানান, স্থানীয় রাজনীতিতে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মতিউর রহমান সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত জীবিত থাকা অবস্থায় পৃথক বলয় সৃষ্টির চেষ্টা করেছেন। সুরঞ্জিত বিরোধীদের নিয়ে তিনি আলাদা বলয় তৈরির চেষ্টাও করেও ব্যর্থ হন। মতিউর রহমান প্রার্থী হলে সুরঞ্জিত পরিবারের প্রতি অসম্মান হবে বলে মনে করেন অধিকাংশ নেতাকর্মী। এতে সুরঞ্জিত অনুরাগীরা হতাশ ও ক্ষুব্ধ হয়ে অন্য কোন সিদ্ধান্ত নিতে পারেন বলে তারা অভিমত ব্যক্ত করেন।
এ আসনে মনোনয়নপ্রত্যাশী সিলেট মহানগর আওয়ামী লীগের দফতর সম্পাদক অ্যাডভোকেট শামছুল ইসলাম বলেন, ‘দাদা ছিলেন আমাদের রাজনৈতিক গুরু। তাঁর আশীর্বাদ ও ¯েœহধন্য হয়ে আমরা রাজনীতি করেছি। এখন তাঁর অসমাপ্ত স্বপ্নপূরণের দায়িত্ব আমাদের। আওয়ামী লীগ সভানেত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার কাছে আমি দলীয় সমর্থন কামনা করছি।’ তবে সুরঞ্জিত সেনগুপ্তের পরিবারের কেউ প্রার্থী হলে তিনি তাঁদের সমর্থন জানাবেন।
দিরাই উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক অভিরাম তালুকদার বলেন, ‘বুধবার আমরা ৬৭ সদস্যের মধ্যে ৫১ জন বৈঠক করে নেতার পরিবার থেকেই প্রার্থী দেওয়ার পক্ষে একমত হয়েছি।’
এ ব্যাপারে শাল্লা উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মহিমচন্দ্র দাশ বলেন, ‘আমরা বুধবার কার্যনির্বাহী কমিটির সভা ডেকে সুরঞ্জিত সেনগুপ্তের পরিবার থেকে প্রার্থী দেওয়ার সিদ্ধান্তে উপনীত হয়েছি। লিখিতভাবে বিষয়টি দু-এক দিনের মধ্যে কেন্দ্রকে জানাব।’

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর

© All rights reserved © 2016-2021
Theme Developed By ThemesBazar.Com