1. [email protected] : admin2017 :
  2. [email protected] : Sunam Kantha : Sunam Kantha
  3. [email protected] : wp-needuser : wp-needuser
বৃহস্পতিবার, ০২ মে ২০২৪, ০৮:৫৫ পূর্বাহ্ন
ঘোষণা ::
সুনামগঞ্জ জেলার জনপ্রিয় সর্বাধিক পঠিত পত্রিকা সুনামকন্ঠে আপনাকে স্বাগতম। আমাদের পাশে থাকার জন্য সকলকে আন্তরিক অভিনন্দন। আমাদের পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দিতে যোগাযোগ করুন - 01711-368602

দুদকের ফাঁদ পদ্ধতিতে আতঙ্কে দুর্নীতিবাজরা

  • আপডেট সময় সোমবার, ১৩ ফেব্রুয়ারী, ২০১৭

সুনামকণ্ঠ ডেস্ক ::
দুদক ফাঁদ পেতে দুর্নীতিবাজ ধরতে গিয়ে গত ৯ ফেব্রুয়ারি সিলেট জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে নাজেহাল ও অবরুদ্ধ হয়েছিলেন দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। প্রায় তিন ঘণ্টা অবরুদ্ধ থাকার পর পুলিশ তাদের উদ্ধার করে। এরপরই দুদকের ‘ফাঁদ’ প্রক্রিয়ার বিষয়টি আলোচনায় উঠে আসে।
দুর্নীতিবাজ ধরার পদ্ধতিকে আইনগতভাবে সম্পূর্ণ বৈধ ও যুক্তিসংগত বলেই মনে করেন আইনজীবী ও দুদক কর্মকর্তারা। আইনজীবীদের মতে, দুদকের ‘ফাঁদ’ কার্যক্রমের ফলে দুর্নীতিতে ছেয়ে থাকা সরকারি অফিসগুলোতে ঘুষ-দুর্নীতির হার কমে আসবে এবং কর্মকর্তা-কর্মচারীরা সাবধান হয়ে যাবে।
দেশের বিভিন্ন স্থানে দুদক কর্মকর্তারা ‘ফাঁদ’ পদ্ধতির মাধ্যমে গত এক মাসে তিনজন সরকারি কর্মকর্তাকে ঘুষসহ হাতেনাতে গ্রেফতার করেছেন। পরে তাদের বিরুদ্ধে ঘুষ নেওয়ার অভিযোগে মামলা দায়ের করা হয় থানায়। এসব মামলায় তারা এখনও কারাগারেই আছেন বলে জানা গেছে। তবে ঘুষসহ গ্রেফতার হওয়া কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ কোনও ব্যবস্থা নিয়েছেন কিনা জানা যায়নি।
গত ১৯ জানুয়ারি মাদারীপুর থেকে ফায়ার সার্ভিসের উপ-সহকারি পরিচালক মজুমদার মো. মাহফজুর রহমানকে ঘুষ নেওয়ার সময় হাতেনাতে গ্রেফতার করেন দুদক কর্মকর্তারা। ১ ফেব্রুয়ারি রাজধানীর তেজগাঁও থেকে গ্রেফতার করা হয় কেন্দ্রীয় খাদ্য গুদামের রেশনিং কর্মকর্তা বিউটি বেগমকে। ৭ ফেব্রুয়ারি চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের (রাজস্ব সার্কেল-২) উপ-কর কর্মকর্তা আলী আকবরকে ঘুষসহ হাতেনাতে গ্রেফতার করেন দুদক কর্মকর্তারা।
সংশ্লিষ্টরা জানান, দুর্নীতি প্রতিরোধে দুদকের ‘ফাঁদ’ কার্যক্রম শুরু হয় ২০০৭ সালে। ওই বছরই এটি দুদকের ১৬ নম্বর বিধিতে সংযুক্ত করা হয়। এতে বলা হয়, ‘দুর্নীতি প্রতিরোধের নিমিত্তে আইনের তফসিলভুক্ত অপরাধে জড়িত কোনও ব্যক্তি বা ব্যক্তিবর্গকে হাতেনাতে ধরার উদ্দেশ্যে তদন্তের দায়িত্বপ্রাপ্ত কমিশনারের অনুমোদনক্রমে তৎকর্তৃক ক্ষমতাপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ফাঁদ মামলা (ট্র্যাপ কেস) প্রস্তুত করতে বা পরিচালনা করতে পারবেন।’ এছাড়া বলা হয়, ‘ফাঁদ মামলা তদন্ত কার্যক্রম কেবল তদন্তের দায়িত্বপ্রাপ্ত কমিশনার বা তদকর্তৃক ক্ষমতাপ্রাপ্ত কমিশনের পরিচালক পদমর্যাদার নিচে নয় এমন একজন কর্মকর্তা দিয়ে স¤পন্ন করতে হবে।’
ফাঁদ মামলা নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী আমিনুল ইসলাম গণমাধ্যমকে বলেন, ‘দুদকের ট্র্যাপ কেসের ক্ষেত্রে ঘুষ দিতে যাওয়া ব্যক্তি তিনি ঘুষদাতা হিসেবে বিবেচিত হবেন না। কারণ তিনি ঘুষের শিকার হওয়ার সময় ট্র্যাপটা হয়েছে। অর্থাৎ তার কাজটা সংশ্লিষ্ট সরকারি কর্মকর্তা করে দিচ্ছেন না। তখন ঘুষখোরকে ধরার জন্য ঘুষদাতা দুদকের কাছে গিয়ে অভিযোগ করেন। এরপর দুদক থেকে তাকে বলা হয়- আপনি আবার তার সঙ্গে কথা বলেন। তখন তিনি আপনার কাছে ঘুষ চাইলে আমাদের জানাবেন। আমরা গিয়ে তাকে ধরে ফেলবো।’ যোগ করে তিনি জানান, এ পদ্ধতি যুক্তিসংগত এবং আইনগত কোনও সমস্যা নেই। তাছাড়া দ-বিধির ১৬১ ধারায় ঘুষ দেওয়া-নেওয়াসহ সরকারি কর্মচারিদের অপরাধ সম্পর্কে আইনই আছে।
সুপ্রিম কোর্টের আরেক আইনজীবী শামীম সরদারও বললেন একই কথা। তিনি বলেন, ‘ট্র্যাপ কেস দুদকের ভালো উদ্যোগগুলোর একটি। এতে দুর্নীতিতে নিমজ্জিত সরকারি দফতরগুলোর কর্মকর্তা-কর্মচারিরা একটু হলেও সাবধান হবে।’ শামীম সরদার আরও বলেন, ‘গত ৯ ফেব্রুয়ারি সিলেটে দুদকের কর্মকর্তা-কর্মচারিদের আটক করে মারধরের ঘটনা ঘটেছে। এটা খুবই দুঃখজনক। তার মানে দুদকের কর্মকর্তারা দুর্নীতির মৌচাকে হাত দিয়েছে। দুর্নীতিগ্রস্ত গোষ্ঠীগুলো মনে করছে, দুদকের এ ধরনের কর্মকা- অব্যাহত থাকলে দুর্নীতিবাজরা তাদের কার্যক্রম সম্পন্ন করতে পারবে না। এ কারণে দুদকের সদস্যদের ওপর হামলা চালানো হয়েছে। এ ঘটনা মাথায় রেখে দুদককে সাবধানী হয়ে পদক্ষেপ নিতে হবে।’
দুদকের জনসংযোগ কর্মকর্তা প্রণব কুমার ভট্টাচার্য্য বলেন, ‘দুদক নিজে থেকে কাউকে লোভে ফেলে কিংবা ঘুষ দেওয়ার ফাঁদে ফেলে গ্রেফতার করে না কিংবা ফাঁদ তৈরি করে না। যদি কারও কাছে কেউ ঘুষ চায় আর ওই ব্যক্তি যদি দুদকের কাছে অভিযোগ করেন, তখন দুদক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করে। দুদক স্বপ্রণোদিত হয়ে কিছু করে না।’
ট্র্যাপ প্রসঙ্গে প্রণব কুমার ভট্টাচার্য্য বলেন, ‘আপনি ঘুষ ধরবেন কীভাবে? তাই ঘুষ তো কেউ দিতে হবে। যিনি ঘুষ দেবেন তাকে দুদকে আসতে হবে। যিনি আসবেন এবং অভিযোগ করবেন তখন তারটা ধরা হবে। দুদক কর্মকর্তারা তো অফিসে অফিসে গিয়ে কে ঘুষ খাচ্ছে সেটা দেখে না।’
দুদকের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মোশাররফ হোসেন কাজল বলেন, ‘বিধি অনুযায়ী দুদকের ট্র্যাপ কেস সম্পূর্ণ বৈধ ও যুক্তিসংগত। ঘুষখোরদের ধরতে এর কোনও বিকল্প নেই।’ সিলেটের ঘটনাটি খুবই ন্যাক্কারজনক উল্লেখ করে তিনি সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার কথাও বলেন।

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর

© All rights reserved © 2016-2021
Theme Developed By ThemesBazar.Com