স্টাফ রিপোর্টার ::
দিরাইয়ে জারুলিয়া জলমহাল দখল নিয়ে দু’পক্ষের সংঘর্ষে ৩জন নিহত হওয়ার ঘটনায় পৌরসভার মেয়র মোশারফ মিয়া, উপজেলা আ.লীগের সাধারণ সম্পাদক প্রদীপ রায় ও উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান হাফিজুর রহমানসহ ৩৯ জনের বিরুদ্ধে থানায় হত্যা মামলা দায়ের হয়েছে। বৃহস্পতিবার এ মামলা দায়ের করেন যুবলীগ নেতা একরার হোসেন।
অপরদিকে দক্ষিণ নাগেরগাঁও মৎস্যজীবী সমবায় সমিতির সাধারণ স¤পাদক ধনঞ্জয় দাস বাদী হয়ে ২৯ জনের বিরুদ্ধে লুটপাট, অগ্নিসংযোগ ও হত্যাচেষ্টার মামলা দায়ের করেছেন। মামলায় একরার হোসেনকে প্রধান আসামি করা হয়েছে।
মেয়র মোশারফ হোসেন দিরাই উপজেলা আ.লীগের যুগ্ম সম্পাদক ও হাফিজুর রহমান দিরাই উপজেলা আ.লীগ নেতা।
এদিকে চাঞ্চল্যকর তিন খুনের মামলায় গতকাল বৃহস্পতিবার পর্যন্ত কোন আসামিকে গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ। জারুলিয়া জলমহালে গতকাল পুলিশ মোতায়েন ছিল।
হত্যা মামলায় বলা হয়, দীর্ঘদিন ধরে দিরাই পৌরসভার মেয়র মোশারফ মিয়া, উপজেলা আ.লীগের সাধারণ সম্পাদক প্রদীপ রায় ও উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান হাফিজুর রহমানসহ আসামিরা জারুলিয়া জলমহাল জোরপূর্বক দখলের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছিলেন। গত মঙ্গলবার তারা বন্দুক, রামদাসহ অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে জলমহালের পাহারাদারদের উপর হামলা চালায়। এতে গুলিবিদ্ধ হয়ে ঘটনাস্থলেই তাজুল ইসলাম, সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শাহারুল ইসলাম ও উজ্জ্বল মিয়ার মৃত্যু হয়।
মামলার অন্যান্য আসামিরা হলেন হাতিয়া গ্রামের মৃত তোতা মিয়ার ছেলে আহাদ মিয়া, আহাদ মিয়ার ছেলে আমীর হোসেন, কুলঞ্জ এলাকার মৃত জামাল উদ্দিনের ছেলে মাসুক মিয়া, মাসুক মিয়ার ছেলে এমাদ মিয়া, খালেকুজ্জামান চৌধুরীর ছেলে সোহেল মিয়া চৌধুরী, সুজা চৌধুরীর ছেলে ছয়ফুল মিয়া, বারইল এলাকার মৃত মটাই মিয়ার ছেলে কাদির মিয়া, মৃত নূর মোহাম্মদের ছেলে তহুর মিয়া, টংগড় এলাকার মৃত আলতাব মিয়ার ছেলে মোস্তফা মিয়া, মোস্তফা মিয়ার ছেলে কাওছার মিয়া, আনহার মিয়া, সানোয়ার মিয়া, মৃত আলতাব মিয়ার ছেলে নওশাদ মিয়া, নওশাদ মিয়ার ছেলে সাদ্দাম মিয়া, হাতিয়া এলাকার মৃত তোতা মিয়ার ছেলে আশিক মিয়া, হারুক মিয়ার ছেলে কাওছার, আফরোজের ছেলে আলকু মিয়া, কুলঞ্জ এলাকার মৃত কামরুজ্জামান চৌধুরীর ছেলে এহিয়া চৌধুরী, এহিয়া চৌধুরীর ছেলে অভি চৌধুরী, হাতিয়া এলাকার আ. সত্তারের ছেলে লেবাছ মিয়া, আব্দুল লতিফের ছেলে আমজাদ হোসেন, মৃত গণি মিয়ার ছেলে আবিদ মিয়া, মৃত মোবারক আলীর ছেলে এনামুল হক লিলু, তেতইয়া এলাকার আলতা মিয়ার ছেলে সাদির মিয়া, দুস্ত মোহাম্মদের ছেলে রাজু মিয়া, কুলঞ্জ এলাকার তকদির মিয়ার ছেলে তাজ উদ্দিন, দিরাইয়ের চন্ডিপুর এলাকার মোশাররফ মিয়ার ছেলে উজ্জ্বল মিয়া, তছবির মিয়া, সুরিয়ারপাড় এলাকার ছায়েদ মিয়ার ছেলে সাদ্দাম, বারইল এলাকার শাহিদ মিয়ার ছেলে সিজিল মিয়া, জারুলিয়া এলাকার জনি মিয়ার ছেলে কালাম মিয়া, কুলঞ্জ এলাকার পরতাব উল্লার ছেলে ইয়াকুব আলী, মৃত মনির মিয়ার ছেলে লিটন, মৃত তোবারক আলী’র ছেলে রিপন মিয়া, চন্ডিপুর এলাকার মৃত হাসিম উল্লাহর ছেলে জিয়াউর রহমান লিটন, হাতিয়া এলাকার তফজ্জুল মিয়ার ছেলে আলী আকবর।
মামলার বাদী একরার হোসেন বলেন, অভিযোগ না দেয়ার জন্য আমাকে দেশ-বিদেশ থেকে ফোনসহ নানাভাবে হুমকি দেয়া হচ্ছিল। আসামিরা প্রভাবশালী হওয়ায় আতঙ্কে আছি। সুষ্ঠু তদন্ত হবে কিনা এ নিয়ে সন্দিহান।
দিরাই থানার ওসি মো. আব্দুল জলিল দুই পক্ষের পাল্টাপাল্টি মামলা দায়েরের ঘটনাটি নিশ্চিত করে জানান, আসামিদের বিরুদ্ধে তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য কার্যক্রম চালাচ্ছে পুলিশ। কোন নিরপরাধ মানুষ যাতে হয়রানির শিকার না হন সেইদিকে দৃষ্টি রয়েছে।
প্রসঙ্গত, গত মঙ্গলবার জারলিয়া জলমহাল দখলকে কেন্দ্র করে যুবলীগ নেতা একরার হোসেন ও আ.লীগ নেতা মাসুক মিয়ার গ্রুপের মধ্যে বন্দুকযুদ্ধ হয়। এতে গুলিবিদ্ধ হয়ে তিনজন নিহত হন। গুলিবিদ্ধ হয়ে আহত হন আরো কয়েকজন।