ধর্মপাশা প্রতিনিধি ::
ধর্মপাশা উপজেলার মধ্যনগর বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণিতে পড়ুয়া এক স্কুল ছাত্রী (১৪) তার সহপাঠীদের প্রচেষ্টায় বাল্যবিয়ে থেকে রক্ষা পেয়েছে। গতকাল সোমবার সন্ধ্যায় ওই ছাত্রীটির বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন হওয়ার কথা ছিল।
এলাকাবাসী ও সংশ্লিষ্ট বিদ্যালয় ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার মধ্যনগর বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণিতে পড়ুয়া ওই ছাত্রীর (১৪) সঙ্গে পার্শ্ববর্তী নেত্রকোনা সদর উপজেলার ঠাকুরাকোণা এলাকার এক যুবকের (২৬) গতকাল সোমবার সন্ধ্যায় বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন হওয়ার কথা ছিল ওই ছাত্রীটির কয়েকজন সহপাঠী এ বাল্যবিয়ের খবরটি জানতে পারে। তারা এ বাল্যবিয়ে বন্ধ করতে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষককে বিষয়টি অবহিত করেন পরবর্তীতে ওই বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণিতে পড়ুয়া ২৫-৩০জন শিক্ষার্থী গত রোববার দুপুরে মধ্যনগর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান প্রবীর বিজয় তালুকাদারের কাছে এসে এ বাল্যবিয়ে ঠেকাতে অনুরোধ করেন ইউপি চেয়ারম্যান তাদেরকে এ বিয়ে বন্ধের আশ্বাস দিলে ওইদিন বিকেলে তারা সহপাঠী ওই ছাত্রীটির বাড়িতে গিয়ে ওই ছাত্রীর সঙ্গে কথা বলে এই বিয়েতে তার সম্মতি না থাকার বিষয়টিও অবগত হয়। এ সময় সহপাঠীরা এই বিয়ে বন্ধ করার জন্য মেয়েটির বাবা মাকেও অনুরোধ করেন
নাম প্রকাশ না করার শর্ত কয়েকজন শিক্ষার্থী জানায়, এই বিয়েতে আমাদের সহপাঠীর কোনো মতামত ছিল না। সে আরও পড়াশোনা করতে চায় জোর করে তার পরিবারের লোকজন তাকে বিয়ে দিতে চাচ্ছিল আমরা স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান ও তার বাবা-মাকে এ বাল্যবিয়ে বন্ধ করার অনুরোধ করি।
মধ্যনগর বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. নূরুল ইসলাম বলেন, মেয়েটি আমার বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী এ বাল্যবিয়ে বন্ধ করতে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান ও ওই ইউনিয়নের এক ইউপি সদস্যকে এ ব্যাপারে সর্বাত্মক সহায়তা করার জন্য বলেছি।
মধ্যনগর ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) চেয়ারম্যান প্রবীর বিজয় তালুকদার বলেন, এ বাল্যবিয়ে আয়োজনের ঘটনাটি আমার জানা ছিল না নবম শ্রেণিতে পড়ুয়া ওই ছাত্রীর সহপাঠীরা রোববার বেলা আড়াইটার দিকে ইউনিয়ন পরিষদে এসে আমাকে বিষয়টি জানানোর পর আমি তা অবগত হই আমি ওই ছাত্রীর অভিভাবকের সঙ্গে কথা বলার জন্য যোগাযোগ করি। ওইদিন সন্ধ্যায় ছাত্রীটির পিতা ইউনিয়ন পরিষদে আসেন। এ সময় তিনি মেয়েটির বাল্যবিয়ের আয়োজনের কথা স্বীকার এবং দুঃখ প্রকাশ করেন। এমনকি ১৮বছরের আগে নিজ মেয়েকে বিয়ে দেবেন না বলে লিখিতভাবে অঙ্গীকার করেছেন
ভারপ্রাপ্ত উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার দায়িত্বে থাকা উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভূমি) মো. ইয়াসিন কবীর বলেন, ওই শিক্ষার্থীর সহপাঠীদের উদ্যোগে বাল্যবিয়ে বন্ধ করার বিষয়টি অত্যন্ত প্রশংসনীয়। এটি একটি উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত। বাল্যবিয়ে প্রতিরোধে এগিয়ে আসা এসব শিক্ষার্থীদের সম্মাননা দেওয়া হবে