স্টাফ রিপোর্টার ::
সুনামগঞ্জ সরকারি সতীশ চন্দ্র বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের নানা অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগে সমালোচিত প্রধান শিক্ষক হাফিজ মাওলানা মো. মাশহুদ চৌধুরীকে জেলা শহর থেকে চরাঞ্চলের দুর্গম ইউনিয়য়নে বদলি করা হয়েছে। জনস্বার্থে বদলি করার কথা বলা হলেও মূলত নানা অনিয়মের কারণে গত মঙ্গলবার মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক দুর্গা রানী শিকদার স্বাক্ষরিত চিঠিতে (স্মারক ৩৭.০২.০০০০.১০৬.১৯.০০২.২০২২.২৫৪) তাকে বদলি করা হয়। তার বদলিতে স্বস্তি প্রকাশ করেছেন অভিভাবকরা। একাধিক অভিভাবক মিষ্টি বিতরণও করেছেন এমন খবরও পাওয়া গেছে। তবে বৃহস্পতিবার সহকারী প্রধান শিক্ষক অসীম চন্দ্র বর্মণের কাছে দায়িত্ব হস্তান্তর করলেও এখনো তিনি ‘হিসাব মিলাতে’ বিদ্যালয়ের অনেক অভ্যন্তরীণ খাতাপত্র তার কাছে রেখে দিয়েছেন বলে বিশ্বস্ত সূত্রে জানা গেছে।
জেলা শহরের প্রধান বালিকা বিদ্যালয় থেকে লক্ষ্মীপুর জেলার রামগঞ্জ উপজেলার দুর্গম মধুপুর ইউনিয়ন সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ে মো. মাশহুদ চৌধুরীকে বদলি করা হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার তিনি বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক অসীম চন্দ্র বর্মণের কাছে দায়িত্ব হস্তান্তর করেছেন।
একটি সূত্র জানিয়েছে, তার উপর মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের দায়িত্বশীল কর্মকর্তারাও ক্ষুব্ধ ছিলেন। সাবেক একজন এমপির সুনজরের কারণে তিনি বেপরোয়া হয়ে উঠেন। দুর্নীতির পাশাপাশি নানা বিতর্কিত কাজে জড়িয়ে ছিলেন তিনি।
অভিভাবকরা জানান, শিক্ষক হাফিজ মো. মাশহুদ চৌধুরী সুনামগঞ্জে কর্মকালীন নানা বিতর্কিত কাজে যুক্ত ছিলেন। বিশেষ করে সরকারি চাকরিবিধি লঙ্ঘন করে তিনি নিয়মিত ফেসবুকে বিভিন্ন পেশাজীবীদের নিয়ে বিতর্কিত পোস্ট দিতেন। বিদ্যালয়ের বিভিন্ন ফান্ডের অর্থ তছরুপ, নানা ছুতোয় শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে অবৈধভাবে টাকা উত্তোলন, জোরপূর্বক তার বই বিক্রি, বিদ্যালয়ের বিভিন্ন বরাদ্দ নয়ছয়, ফটক নির্মাণের নামে ছাত্রীদের কাছ থেকে টাকা উত্তোলন, নিয়মিত এসএসসি পরীক্ষার্থীদের কাছ থেকে কোচিংয়ের নামেসহ নানাভাবে চাঁদা আদায় করতেন। গত এসএসসি পরীক্ষায় কোচিংয়ের নামে অতিরিক্ত টাকা হাতিয়ে নিয়েছিলেন। এসব নিয়ে জাতীয় ও স্থানীয় পত্রিকায় নিয়মিত প্রতিবেদনও ছাপা হয়েছে। এক সভায় জেলা প্রশাসকের কাছে তার দুর্নীতি ও অনিয়ম চিত্র তুলে ধরেছিলেন সাংবাদিকরা।
দায়িত্ব নেওয়া সহকারী প্রধান শিক্ষক অসীম চন্দ্র পাল বলেন, আমি গতকাল বুধবার দায়িত্ব বুঝে নিয়েছি। তবে অভ্যন্তরীণ খাতাপত্র এখনো বুঝে নেইনি। তিনি এসব খাতাপত্রের হিসেব মিলাচ্ছেন। এগুলো মিলানো শেষ হলে তিনি আমাকে বুঝিয়ে দিবেন।