মুহাম্মদ হাবীবুল্লাহ হেলালী ::
দোয়ারাবাজারে এলজিইডি’র সড়ক সংস্কারে নিয়োগপ্রাপ্ত কর্মী বাকপ্রতিবন্ধী রহিমা খাতুন (৩১) সম্প্রতি মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় মৃত্যুবরণ করেছেন। সড়কে কাজ করা অবস্থায় বেপরোয়া গতির মোটরসাইকেলের ধাক্কায় তার মর্মান্তিক মৃত্যু হয়। তিনি উপজেলার বোগলাবাজার ইউনিয়নের বহরগাঁও গ্রামের মৃত আবদুল বারিকের মেয়ে। এদিকে, সড়ক দুর্ঘটনায় অকালে মাকে হারিয়ে এখন অসহায় দিনাতিপাত করছে বাকপ্রতিবন্ধী রহিমা খাতুনের ৮ বছরের একমাত্র পুত্র আবদুল মোমিন। তাকে দেখার কেউ নেই। নেই মা-বাবা। কোন অভিভাবক না থাকায় এখন নিরাশ্রয় হয়ে পড়েছে ওই শিশুটি। খেয়ে না খেয়ে মানুষের বাড়ি বাড়ি ঘুরে বেড়াচ্ছে।
এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, অসহায় প্রতিবন্ধী রহিমা খাতুন স্থানীয় সরকার প্রকৌশলী অধিদপ্তরের অধীনে ‘রুরাল এমপ্লিমেন্ট এন্ড রোড মেইন্টেইনেন্স কর্মসূচি’র আওতায় নিয়োগপ্রাপ্ত কর্মী ছিলেন। গত ২৪ জানুয়ারি দোয়ারাবাজার-বোগলাবাজার সড়কে মোল্লাপাড়া গ্রামের নিকটবর্তী সড়ক সংস্কারের কাজ করছিলেন। হঠাৎ বেপরোয়া গতিতে আসা এক মোটরসাইকেলের ধাক্কায় তিনি গুরুতর আহত হয়ে মৃত্যুবরণ করেন। কাফন-দাফন শেষে স্থানীয় সরকার প্রকৌশলী কর্তৃপক্ষও তার সন্তানের কোন খোঁজখবর নেয়নি। সড়কে কাজ করতে গিয়ে দুর্ঘটনায় নারী কর্মী মারা গেলেও পাননি আর্থিক কোন সহায়তা।
স্থানীয়রা জানান, ১০ বছর পূর্বে বাকপ্রতিবন্ধী রহিমা খাতুনের বিয়ে হয়েছিল সুনামগঞ্জের মঙ্গলকাটা এলাকার এক শ্রমিকের সাথে। কয়েক বছর পর গর্ভে সন্তান রেখেই স্বামী তাকে ছেড়ে চলে গেলে তিনি বাবার বাড়িতেই থাকেন। শ্রমিকের কাজ করে একমাত্র সন্তানকে লালনপালন করেন। পরে এলজিইডি’র নারী শ্রমিক হিসেবে নিয়োগপ্রাপ্ত হন। শ্রমিকের কাজ করেই চলতো তার জীবনসংসার।
ইউপি সদস্য আকবর আলী বলেন, প্রতিবন্ধী রহিমা খাতুন মোটরসাইকেল ধাক্কায় মারা যাওয়ার পর তার একমাত্র শিশুপুত্র এখন অসহায় দিনাতিপাত করছে। এলজিইডি’র নিয়োগপ্রাপ্ত নারী কর্মী হয়ে কর্মস্থলে মৃত্যুবরণ করলেও মৃত্যু পরবর্তী প্রতিবন্ধী ও তার সন্তানের খবর কেউ রাখেনি। পাননি কোন আর্থিক সহায়তা।
বহরগাঁও গ্রামের রমিজ আলী বলেন, সরকারি রাস্তায় কাজ করতে গিয়ে মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় প্রতিবন্ধী রহিমা খাতুন মারা গেলে কাফন দাফনের সহযোগিতা ব্যতিত আর কোন সহায়তা পাননি। ওই নারী কর্মীর একমাত্র শিশু পুত্র এখন অসহায় হয়ে পড়েছে। দেখার কেউ নেই তার।
দোয়ারাবাজার উপজেলা এলজিইডি প্রকৌশলী দেবতোষ পাল বলেন, নারী কর্মী রহিমা খাতুনের মৃত্যুর পর তাৎক্ষণিক আমরা কাফন দাফনের ব্যবস্থা গ্রহণ করেছি। আর্থিক সহায়তার বিষয়টি নিয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সাথে আলোচনা করবো।