শহীদনূর আহমেদ ::
সুনামগঞ্জ পৌরসভার বড়পাড়া এলাকায় সুরমা নদীর তীর কেটে মাটি বিক্রি করছে স্থানীয় প্রভাবশালী চক্র। প্রকাশ্য দিবালোকে এমন অপকর্ম চললেও এ ব্যাপারে কোনো পদক্ষেপ নিচ্ছে না প্রশাসন।
অনুসন্ধানে জানাযায়, দীর্ঘ দিন ধরে স্থানীয় একটি সিন্ডিকেট নদীর তীর কেটে মাটি বিক্রির ব্যবসা করছে। শ্রমিক দিয়ে উত্তোলিত এই মাটি ট্রাকের সাহায্যে অন্যত্র নিয়ে বিক্রি করে লুটে নিচ্ছে মোটা অঙ্কের টাকা। এদিকে অব্যাহতভাবে তীর কেটে ফেলায় নদী ভাঙনের ঝুঁকিতে রয়েছে নদী তীরবর্তী বসতভিটা, খেলার মাঠ ও দোকানপাট। নদীর তীর রক্ষায় এই অবৈধ মাটি বিক্রি বন্ধে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামানা করেছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।
স্থানীয়রা জানান, শুষ্ক মওসুমে শুরু হয় নদীর তীর কাটা। গত ৬ মাস ধরে স্থানীয় একটি প্রভাবশালী সিন্ডিকেট পার কেটে মাটি নিয়ে যায়। দিনেদুপুরে ট্রাকের ট্রাক মাটি লুটে নিলেও অসাধুরা প্রভাবশালী হওয়ায় তাদের বিরুদ্ধে কেউ কথা বলছেন না। দীর্ঘদিন ধরে তীর কাটা বন্ধে সচেতনমহল থেকে দাবি উঠলেও সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের পক্ষ থেকে কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ না করায় তারা হতাশ।
শনিবার (৪ মে) দুপুর ১২টায় সরেজমিনে বড়পাড়ার সুরমা নদী তীরবর্তী এলাকা গেলে দেখা যায়, ১০-১২ জনের একটি শ্রমিক দল কোদাল ও বেলচার সাহায্যে মাটি কেটে ট্রাকবোঝাই করছেন। মাটি কাটার এই দৃশ্য ক্যামেরাবন্দি করতেই তারা এই প্রতিবেদকের উপস্থিতি টের পেয়ে যান এবং দৌড়ে পালাতে থাকেন। নদীর তীর কাটার বিষয়ে উপস্থিত ট্রাক চালকের কাছে জানতে চাইলে তিনি কোনো কথা বলতে রাজি হননি।
এ ব্যাপারে স্থানীয় বাসিন্দা আব্দুল বাসির বলেন, এখানে সুরমা নদীর পার কাটা এখন নিত্যনৈমিত্তিক ব্যাপার। দিনেদুপুরে পার কাটা হয়, কেউ বাঁধা দেয় না। প্রতিদিন অসংখ্য ট্রাক দিয়ে এই মাটি নিয়ে বিক্রি করছে একটি চক্র। তিনি বলেন, কে প্রতিবাদ করবে? যেখানে প্রশাসন নীরব, সেখানে সাধারণ মানুষের এতো শক্তি কি আছে এই প্রভাবশালীদের বিরুদ্ধে কথা বলার?
আবুল হোসেন নামের আরেক স্থানীয় বাসিন্দা বলেন, রাত নেই দিন নেই, অবিরত একাধিক ট্রাক দিয়ে মাটি, বালি নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। আমরা কেবল অবাক হয়ে থাকি, আর দেখি। ট্রাক চলাচলের শব্দে ঘরে থাকা দায়। এ নিয়ে স্থানীয় বাসিন্দারা মিলে মেয়র সাহেবের কাছে একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছি। কিন্তু কোনো কাজ হয়নি ।
এ বিষয়ে জানতে পৌর মেয়র নাদের বখতের সাথে যোগাযোগ করা হলে তার মোবাইল ফোনটি বন্ধ থাকায় বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি।
সুনামগঞ্জ সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মৌসুমী মান্নান বলেন, তহশীলদার পাঠিয়ে খোঁজ নিয়ে এ ব্যাপারে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।