1. [email protected] : admin2017 :
  2. [email protected] : Sunam Kantha : Sunam Kantha
  3. [email protected] : wp-needuser : wp-needuser
রবিবার, ১৯ মে ২০২৪, ০৪:৪৫ পূর্বাহ্ন
ঘোষণা ::
সুনামগঞ্জ জেলার জনপ্রিয় সর্বাধিক পঠিত পত্রিকা সুনামকন্ঠে আপনাকে স্বাগতম। আমাদের পাশে থাকার জন্য সকলকে আন্তরিক অভিনন্দন। আমাদের পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দিতে যোগাযোগ করুন - 01711-368602

উপজেলা পরিষদ নির্বাচন : ভোটে অটল বিএনপি’র বহিষ্কৃতরা

  • আপডেট সময় সোমবার, ৬ মে, ২০২৪

স্টাফ রিপোর্টার ::
বিএনপি ভোট বর্জনের সিদ্ধান্ত নিলেও সুনামগঞ্জের ১১টি উপজেলায় ভোটের প্রচারে দলটির কর্মী-সমর্থকদের উপস্থিতি চোখে পড়ার মতো। কারণ দলটির স্থানীয় নেতারা নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছেন। ইতোমধ্যে ১৪ জনকে বিএনপি বহিষ্কার করলেও তারা ভোটের মাঠ ছাড়েননি। তাদের কেউ কেউ এখন কেন্দ্রীয় নেতাদের সমালোচনা করছেন।
বহিষ্কৃত একাধিক নেতা জানিয়েছেন, এভাবে টানা নির্বাচন বর্জন করতে থাকলে স্থানীয় পর্যায়ে রাজনীতি করা তাদের জন্য কঠিন হয়ে পড়বে। ফাঁকা মাঠে আওয়ামী লীগ সকল সুবিধা নিয়ে সাংগঠনিকভাবে শক্তিশালী হবে আর বিএনপি দুর্বল হতে হতে এক সময় ধ্বংস হয়ে যাবে। এ অবস্থায় বিএনপি’র স্থানীয় নেতাদের অস্তিত্ব রক্ষা করা কঠিন হয়ে পড়বে।
এদিকে, দলের সিদ্ধান্ত অমান্য করে উপজেলা পরিষদে নির্বাচনে অংশ নেয়ায় সুনামগঞ্জের বিভিন্ন উপজেলার ১৪ জন নেতাকে বহিষ্কার করেছে বিএনপি। তারা হলেন- ধর্মপাশা উপজেলা বিএনপি’র সাংগঠনিক সম্পাদক চেয়ারম্যান প্রার্থী অ্যাড. সাইফুল ইসলাম চৌধুরী কামাল, তাহিরপুর উপজেলা বিএনপি’র সাবেক সহ-সভাপতি চেয়ারম্যান প্রার্থী আবুল কাশেম, বিশ্বম্ভরপুর উপজেলা বিএনপি’র সদস্য চেয়ারম্যান প্রার্থী হারুনুর রশিদ দুলাল, বিএনপি’র সাবেক কেন্দ্রীয় নেতা ও বিশ্বম্ভরপুর উপজেলা নির্বাচনে চেয়ারম্যান প্রার্থী মোহন মিয়া বাচ্চু, সুনামগঞ্জ জেলা মহিলা দলের সাবেক আহ্বায়ক বিশ্বম্ভরপুর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী মদিনা আক্তার, জেলা বিএনপি’র সদস্য ও জামালগঞ্জ উপজেলা বিএনপি’র সভাপতি এবং জামালগঞ্জ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান প্রার্থী নূরুল হক আফিন্দী, জামালগঞ্জ উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সাবেক আহ্বায়ক ও ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী আব্দুল্লাহ আল-মামুন, ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী ও শাল্লা উপজেলা বিএনপির যুগ্ম স¤পাদক হাজিরুল ইসলাম ওরফে আজাহার, শাল্লা উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক ও ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী আবদুল মজিদ, ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী ও শাল্লা উপজেলা যুবদলের সদস্য সাইফুর রহমান, শাল্লা উপজেলা বিএনপির সভাপতি ও চেয়ারম্যান প্রার্থী গনেন্দ্র চন্দ্র সরকার, দিরাই উপজেলা বিএনপির সাংগঠনিক স¤পাদক ও এই উপজেলা পরিষদের দুবারের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান গোলাপ মিয়া, দিরাই উপজেলা পরিষদে ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী দিরাই উপজেলা বিএনপির মহিলাবিষয়ক স¤পাদক ও এই উপজেলা পরিষদের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান ছবি চৌধুরী। তাদেরকে দলের পদবি ও দলের প্রাথমিক সদস্য পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়। এই বহিষ্কারাদেশ পেয়েও তারা দমে যাননি। বরং ভোটের মাঠে প্রচার-প্রচারণা আরও বাড়িয়ে দিয়েছেন। একই সাথে কেন্দ্রীয় নেতাদের তীব্র সমালোচনা করছেন।
বিএনপির নেতারা বলছেন, প্রার্থীরা দলীয় নির্দেশনা অমান্য করার পাশাপাশি সাংগঠনিক ব্যবস্থাকেও আমলে নিচ্ছেন না। এমনকি প্রার্থীদের নির্বাচনবিমুখ করতে কেন্দ্রীয়, বিভাগীয় ও জেলার নেতাদের বিশেষভাবে দায়িত্ব দেওয়া হলেও সেটিও খুব একটা কাজে লাগছে না। এ নিয়ে দলের নীতিনির্ধারকেরা অস্বস্তিতে পড়েছেন।
শাল্লা উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে ভোট করে আগেও জিতেছিলেন গনেন্দ্র চন্দ্র সরকার। এবারও ভোটে আছেন। বিএনপি ভোটে না থাকায় তিনি এবার স্বতন্ত্র প্রার্থী। গনেন্দ্র ছিলেন উপজেলা বিএনপির সভাপতি। বহিষ্কারাদেশ পেয়েও তিনি দমে যাননি। বরং ভোটের প্রচারে নেমে কেন্দ্রীয় নেতাদের তীব্র সমালোচনা করছেন। তার সঙ্গে বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনের বিভিন্ন স্তরের নেতাকর্মীরা প্রকাশ্যেই ভোটের প্রচারে আছেন। তবে দায়িত্বশীলরা সামনে না এসে পেছন থেকে সহযোগিতা দিচ্ছেন বলে তথ্য মিলেছে।
গনেন্দ্র চন্দ্র সরকার জানান, আমার ৫০ বছরের রাজনৈতিক জীবন। বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতাদের সঙ্গে তৃণমূলের কোনো স¤পর্ক নেই। তারা কেন্দ্রে বসে নির্দেশনা দেয়। বাস্তবে মাঠের খবর নেয় না।
তৃণমূলের কর্মীদের থেকে কেন্দ্রীয় নেতারা ‘দূরে সরে যাচ্ছেন’ মন্তব্য করে তিনি বলেন, তারা দলকে ধ্বংস করে দিচ্ছেন। কেন্দ্রীয় নেতাদের বহিষ্কারের এই হঠকারী সিদ্ধান্তকে আমি মানি না। আমি নির্বাচনে শেষ পর্যন্ত লড়াই চালিয়ে যাব।
এ উপজেলায় আওয়ামী লীগের তিন জন প্রার্থী ভোটে আছেন। তারা হলেন সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান অবনী মোহন দাস, গত নির্বাচনে ভাইস চেয়ারম্যান পদে বিজয়ী আওয়ামী লীগ নেতা দিপু রঞ্জন দাস ও ক্ষমতাসীন দলের আরেক নেতা এস এম শামীম। সরকার সমর্থকদের ভোট ভাগাভাগির সুযোগ দিতে মুখিয়ে আছেন বিএনপির রাজনীতিতে বিশ্বাসী আনারস প্রতীক পাওয়া গনেন্দ্র চন্দ্র সরকার। তিনি বলেন, আগামী ৮ মে জনগণ আমার পক্ষেই রায় দেবেন আশা করি।
দিরাই উপজেলাতেও পরোক্ষভাবে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির লড়াইয়ের ক্ষেত্র প্রস্তুত হয়েছে। এ উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে ভোটে দাঁড়িয়ে বহিষ্কৃত গোলাপ মিয়া হারিয়েছেন বিএনপির উপজেলা শাখার সাংগঠনিক স¤পাদকের পদ। এর আগে ভাইস চেয়ারম্যান পদে জয় পেয়েছিলেন। তারও প্রতীক আনারস।
গনেন্দ্র চন্দ্র সরকারের মত গোলাপ মিয়াও বিএনপির সিদ্ধান্ত পাত্তা দিচ্ছেন না। তিনি বলেন, বিএনপি আমাকে বহিষ্কার করলেও সাধারণ নেতাকর্মীরা আমার পক্ষে আছেন। অনেক নেতা আড়াল থেকে কাজ করছেন।
তবে এই সরকারের অধীনে নির্বাচনে অংশগ্রহণ না করার ব্যাপারে কঠোর অবস্থানেই আছেন বিএনপির শীর্ষ নেতারা। তাদের দাবি, দলের শৃঙ্খলা রক্ষায় সিদ্ধান্ত উপেক্ষাকারীদের বহিষ্কার করতেই হবে। এর কোনো বিকল্প নেই।
উপজেলা পরিষদের আসন্ন নির্বাচন ‘সরকারের পাতানো ফাঁদ’ বলে অভিহিত করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস। মির্জা আব্বাস বলেন, উপজেলা নির্বাচনেও সরকার ফাঁদ পেতেছে। এর আগে জাতীয় নির্বাচনেও ফাঁদ পেতেছে। বিএনপি সেই নির্বাচন প্রত্যাখ্যান করেছে।
অপরদিকে, দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে স্থানীয় সরকার নির্বাচনে যারা অংশ নিচ্ছেন তাদের ‘বিপথগামী ও মীরজাফর’ বলে আখ্যা দিয়েছেন বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।
রিজভী বলেন, ৭ জানুয়ারি ডামি নির্বাচনের পর দেশে প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে এক ব্যক্তির স্বৈরশাসন। এতে গভীর সংকটে পড়েছে মানুষ। স্বাধীনতাপ্রিয় গণতন্ত্রকামী জনগণের ভোটাধিকার আজ বিপন্ন। বাংলাদেশের নির্বাচন এখন বিশ্ববাসীর কাছে হাস্যকর কৌতুকে পরিণত হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, কেবল জাতীয় নির্বাচন নয়, স্থানীয় সরকারের নির্বাচনগুলোও ‘আমরা আর মামু’দের তামাশায় রূপান্তরিত করা হয়েছে। রিজভী আরও বলেন, এই ভয়াবহ পরিস্থিতিতে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থেকে আসন্ন লোক দেখানো উপজেলা নির্বাচন বর্জনের মাধ্যমে স্বৈরতন্ত্র, ভোট ডাকাতির বিরুদ্ধে প্রতিবাদে দলের পক্ষ থেকে আহ্বান জানানো হয়েছে। এই সরকার কখনোই অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন নিশ্চিত করতে পারবে না।

 

 

 

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর

© All rights reserved © 2016-2021
Theme Developed By ThemesBazar.Com