1. [email protected] : admin2017 :
  2. [email protected] : Sunam Kantha : Sunam Kantha
  3. [email protected] : wp-needuser : wp-needuser
শনিবার, ১৮ মে ২০২৪, ০৪:২৫ অপরাহ্ন
ঘোষণা ::
সুনামগঞ্জ জেলার জনপ্রিয় সর্বাধিক পঠিত পত্রিকা সুনামকন্ঠে আপনাকে স্বাগতম। আমাদের পাশে থাকার জন্য সকলকে আন্তরিক অভিনন্দন। আমাদের পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দিতে যোগাযোগ করুন - 01711-368602

অটোরিকসা চুরি করতেই দুই চালককে খুন : গ্রেফতার ৭

  • আপডেট সময় রবিবার, ৫ মে, ২০২৪

স্টাফ রিপোর্টার ::
ধর্মপাশা উপজেলার সদর ইউনিয়নের দক্ষিণ নোয়াগাঁও ও দশধরী গ্রামের ইজিবাইক চালক সাইকুল ইসলাম খান (২৭) ও হুমায়ূন কবির (২০) হত্যাকা-ের রহস্য উদ্ঘাটন করেছে পুলিশ। হত্যার ঘটনায় জড়িত থাকায় সাত জনকে গ্রেফতার, একটি ইজিবাইক ও চারটি ব্যাটারি উদ্ধার করা হয়েছে। গ্রেফতারকৃত আসামিরা হল ধর্মপাশা থানার দুধবহর গ্রামের মো. রতন মিয়ার ছেলে দেলোয়ার হোসেন দিলু (৩০), রফিকুল ইসলামের ছেলে আজিম উদ্দিন (২৫), একই গ্রামের মো. রফিকের ছেলে নুরুল আমীন (২২), মো. ময়না মিয়ার ছেলে রুবেল (২২), মো. আবুল কাসেমের ছেলে জাকিরুল ইসলাম ওরফে ইমুল (২৪), একই থানার দক্ষিণ নোয়াগাঁওয়ের মো. স্বপন মিয়ার ছেলে কাউছার ওরফে নিয়াশ (২৪) এবং নেত্রকোণা সদর থানার ঠাকুরকোণা গ্রামের মৃত গোলম রব্বানীর ছেলে সেলিম মিয়া (৩৫)। ধর্মপাশা থানার অফিসার ইনচার্জের নেতৃত্বে থানা পুলিশের একাধিক টিম ধর্মপাশা থানাসহ ময়মনসিংহ, নেত্রকোণা ও গাজীপুর জেলার বিভিন্ন এলাকায় গত ১ মে হতে ৩ মে পর্যন্ত ব্যাপক অভিযান পরিচালনা করে আসামিদের শনাক্ত করাসহ গ্রেফতার করেন।
এ বিষয়ে শনিবার দুপুরে জেলা পুলিশ সুপার কার্যালয়ে প্রেস ব্রিফিংয়ের আয়োজন করা হয়। ব্রিফিংয়ে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস) রাজন কুমার দাস বিস্তারিত তুলে ধরেন। তিনি জানান, গত ১৫ এপ্রিল রাত সাড়ে ১০টায় ধর্মপাশা থানাধীন আতকাপাড়া গ্রামের বিল্লাল নুরীর ধান ক্ষেত থেকে অর্ধগলিত একটি লাশ পাওয়া যায়। এ বিষয়ে থানা পুলিশ তদন্তে নেমে লাশের পরিচয় শনাক্ত করে। অর্ধগলিত লাশটি ছিল ধর্মপাশাধীন দক্ষিণ নোয়াগাঁও গ্রামের মো. কারি মিয়া খানের ছেলে অটোরিকসা চালক সাইকুল ইসলাম খান (২৭)। এ বিষয়ে অজ্ঞাতনামা আসামিদের বিরুদ্ধে গত ২০ এপ্রিল ধর্মপাশা থানায় একটি হত্যা মামলা রুজু করা হয়। মামলাটি তদন্ত শুরুর পর গত ২৫ এপ্রিল বিকাল সাড়ে ৪টায় ধর্মপাশা থানাধীন কান্দাপাড়া গ্রামস্থ নিমাইকোণা হাওরের জনৈক সাহাব উদ্দিনের ধান ক্ষেত থেকে একটি মানব দেহের মাথার খুলি এবং শরীরের বিভিন্ন অংশের হাড়ের সাথে থাকা ময়লাযুক্ত কাপড় উদ্ধার করা হয়। এ বিষয়ে থানা পুলিশ তদন্তে নেমে লাশের পরিচয় শনাক্ত করতে সক্ষম হয়। লাশটি ছিলো ধর্মপাশা থানার দশধরী গ্রামের মো. কামাল মিয়ার ছেলে অটোচালক হুমায়ুন কবিরের (২০)। এ বিষয়েও অজ্ঞাতনামা আসামিদের বিরুদ্ধে ২৯ এপ্রিল ধর্মপাশা থানায় আরেকটি হত্যা মামলা রুজু করা হয়।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস) রাজন কুমার দাস আরও জানান, মামলা দু’টির ঘটনায় প্রাপ্ত তথ্য-উপাত্ত যাচাই-বাছাইসহ তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহার করে জেলা পুলিশের ঊর্ধ্বতন অফিসারদের দিকনির্দেশনায় ধর্মপাশা থানার অফিসার ইনচার্জের নেতৃত্বে থানা পুলিশের একাধিক টিম অভিযান পরিচালনা করে উক্ত মামলা দু’টির সাথে জড়িত ৭ আসামিকে গ্রেফতার করে। এছাড়া এ অভিযানে চোরাইকৃত একটি অটোরিকসা এবং অপর একটি অটোরিকসার ৪টি ব্যাটারি উদ্ধার করা হয়।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস) রাজন কুমার দাস জানান, আসামি রুবেলকে আটক করা হলে সে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে উক্ত ২টি হত্যাকা-ের সাথে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে এবং সেসহ আসামি দেলোয়ার, আজিম, নুরুল, ইমুল, নিয়াশ মিলে হত্যা করে বলে জানায়। তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে অন্যান্য আসামিদের গ্রেফতার করা হয়।
আটককৃত আসামিদের ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, গত রমজান মাসে ১৬ মার্চ ইফতার শেষে আসামিরা অটোরিকসা চুরির পরিকল্পনা করে। প্রথমে তারা সাইকুল ইসলামের অটোরিকসা চুরির সিদ্ধান্ত নেয়। কিন্তু সাইকুল সকল আসামির পরিচিত হওয়ায় সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করে তারা হুমায়ুন কবিরের অটোরিকসা চুরির পরিকল্পনা করে। পরিকল্পনা মোতাবেক গত ১৭ মার্চ সন্ধ্যার দিকে আসামিগণ বেড়াতে যাওয়ার কথা বলে অটোরিকসা চালক হুমায়ুনকে তার অটোরিকসা নিয়ে আসতে বলে। সে অটোরিকসা নিয়ে নোয়াগাঁও গ্রামের রাস্তায় আসলে সকল আসামি অটোরিকসায় উঠে বসে। পরে আসামিরা নিমাইকোণা হাওরের রাস্তায় অটোরিকসা রেখে হুমায়ুনকে হাওরের ধান ক্ষেতে নিয়ে যায়। সেখানে আসামিরা গামছা দিয়ে হুমায়ুনের গলা পেঁচিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে। আসামিরা ভিকটিমের মৃত্যু নিশ্চিত হওয়ার পর মৃতদেহ ধান ক্ষেতের ভিতরে ফেলে চলে আসে। পরে তারা হুমায়ুনের অটোরিকসাটি নিয়ে আটককৃত আসামি সেলিম মিয়ার নিকটে ৩০ হাজার টাকায় বিক্রি করে।
ভিকটিম হুমায়ুনের পরিবার থেকে তার নিখোঁজ হওয়ার বিষয়ে কোন তৎপরতা না থাকায় এবং নিখোঁজের বিষয়টি থানা পুলিশকে অবহিত না করায় আসামিগণ পুনরায় গত ৬ এপ্রিল সন্ধ্যায় ইফতার শেষে পূর্বের ন্যায় সাইকুল ইসলামের অটোরিকসাটি চুরির পরিকল্পনা করে। পরিকল্পনা মোতাবেক গত ৮ এপ্রিল দুপুরে আসামি রুবেল ও ইমুল সাইকুলের অটোরিকসা নিয়ে নেত্রকোণা সদর থানার ঠাকুরকোণা বাজারে যায়। পরে তারা সন্ধ্যার দিকে ধর্মপাশা থানাধীন আতকাপাড়া গ্রামের উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান বিল্লাল নুরীর মৎস্য ফিসারির কাছে আসে। সেখানে দেলোয়ার, নুরুল, নিয়াশা, আজিম অবস্থান করছিল। যেহেতু আসামিরা ভিকটিম সাইকুল ইসলামের পরিচিত তাই তারা সকলে মিলে অটোরিকসাটি রাস্তার পাশে রেখে গাঁজা খাওয়ার জন্য ফিসারির উত্তর পাশে যায়। সেখানে তারা গাঁজা সেবন করে। পরে আসামিরা কৌশলে একটি চামড়ার বেল্ট দিয়ে ভিকটিম সাইকুল ইসলামের গলায় পেঁচিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে। আসামিরা ভিকটিমের মৃত্যু নিশ্চিত হওয়ার পর মৃতদেহ ফিসারির উত্তর পাশে ধান ক্ষেতের মাঝামাঝি স্থানে ফেলে চলে আসে। পরে তারা সাইকুলের অটোরিকসাটি নিয়ে আটককৃত আসামি সেলিম মিয়ার নিকটে ৩৭ হাজার টাকায় বিক্রি করে।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস) রাজন কুমার দাস জানান, গ্রেফতারকৃত আসামিদের আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে। আসামিরা দুটি হত্যাকা-ের সাথে জড়িত থাকার বিষয়ে বিজ্ঞ আদালতে ফৌজদারি কার্যবিধির ১৬৪ ধারা মোতাবেক দোষ স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করে।

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর

© All rights reserved © 2016-2021
Theme Developed By ThemesBazar.Com