চয়ন কান্তি দাস ::
নীতিমালার তোয়াক্কা না করে ধর্মপাশা উপজেলার মধ্যনগর ইউনিয়নের মধ্যনগর গ্রামের পেছনে ঘোড়াডোবা হাওরের সাপডুয়ারি ফসলরক্ষা বাঁধের দুই পাশের ২৫ থেকে ৩০ ফুট দূর থেকে এস্কেভেটর (খননযন্ত্র) দিয়ে মাটি উত্তোলন করে সেই মাটি ফসলরক্ষা বাঁধে ফেলা হচ্ছে। এ নিয়ে এলাকার কৃষকদের মধ্যে চরম ক্ষোভ ও হতাশা দেখা দিয়েছে।
উপজেলা প্রশাসন ও স্থানীয় সূত্রে জানাযায়, মধ্যনগর ইউনিয়নের ঘোড়াডোবা হাওরটি সুনামগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের অধীনে রয়েছে। এই হাওরের আওতায় থাকা মধ্যনগর গ্রামের পেছনে সাপডুয়ারী নামক একটি ফসলরক্ষা বাঁধ রয়েছে। এই ফসলরক্ষা বাঁধটির দৈর্ঘ্য ৬০৬ মিটার। ফসলরক্ষা বাঁধটিতে মাটি ভরাটসহ অন্যান্য কাজের জন্য বরাদ্দ নির্ধারণ করা হয়েছে ১৮ লাখ ১৪ হাজার ৮৫০ টাকা। এই বাঁধের প্রকল্প বাস্তবায়ন কাজে পিআইসি’র সভাপতি হলেন মধ্যনগর ইউনিয়নের মধ্যনগর গ্রামের বাসিন্দা বেনু মাধব রায় ও সদস্য সচিব হলেন একই গ্রামের শিবেন রায়। বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো’র) নির্দেশনা অনুযায়ী হাওরের ফসলরক্ষা বাঁধের অন্তত ৩০ মিটার দূর থেকে মাটি উত্তোলন করতে হবে। কিন্তু এই নিয়ম না মেনে সপ্তাহখানেক সময় ধরে ওই পিআইসি’র সভাপতি ও সদস্য সচিব দু’জন মিলে বাঁধের দুই পাশের ২৫ থেকে সর্বোচ্চ ৩০ ফুট দূর থেকে এস্কেভেটর দিয়ে মাটি তুলে সেই মাটি প্রকল্প স্থানে ফেলার কাজ করিয়ে আসছেন।
গতকাল সোমবার বিকেল সাড়ে তিনটার দিকে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, এস্কেভেটর দিয়ে ওই ফসলরক্ষা বাঁধটির কাছাকাছি স্থান থেকে মাটি উত্তোলন করায় বেশ কয়েকটি গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। বাঁধের কাজে পিআইসির সভাপতি ও সদস্য সচিবকে উপস্থিত পাওয়া যায়নি।
ঘোড়াডোবা হাওর পাড়ের নিয়ামতপুর গ্রামের বাসিন্দা কৃষক উপানন্দ সরকার বলেন, নীতিমালার তোয়াক্কা না করে এই বাঁধটির ২৫ থেকে ৩০ফুট দূর থেকে মাটি উত্তোলন করে সেই মাটি ফসলরক্ষা বাঁধের ওপর ফেলা হচ্ছে। সংশ্লিষ্ট বিভাগের লোকজনদের নজরদারি না থাকায় এমনটি হচ্ছে।
প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটি (পিআইসির) সভাপতি বেনু মাধব রায় বলেন, আমি ও সদস্য সচিবের অনুপস্থিতির কারণে এই ভুলটি হয়ে গেছে। ফসলরক্ষা বাঁধের কাছাকাছি স্থান থেকে মাটি উত্তোলন করায় যেসব গর্তের সৃষ্টি হয়েছে সেগুলো দ্রুত ভরাট করে দেওয়া হবে।
সুনামগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপসহকারী প্রকৌশলী ও উপজেলা কাবিটা প্রকল্প বাস্তবায়ন এবং মনিটরিং কমিটির সদস্য সচিব মাহমুদুল ইসলাম বলেন, হাওরের ফসলরক্ষা বাঁধের কাছাকাছি স্থান মাটি উত্তোলন সম্পূর্ণভাবে বেআইনি। এমনটি হয়ে থাকলে ওই প্রকল্প বাস্তবায়ন কাজের পিআইসি’র সভাপতি ও সদস্য সচিবের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।