স্টাফ রিপোর্টার ::
হত্যা, অস্ত্রসহ একাধিক মামলার আসামি সুনামগঞ্জের বহুল আলোচিত সালমান ইসলামকে পুলিশে ধরিয়ে দিয়েছেন তার মা। সোমবার সকালে সহকারি পুলিশ সুপার তাপস রঞ্জন ঘোষের কার্যালয়ে গিয়ে পুলিশের হাতে ছেলেকে তুলে দেন মা স্বপ্না বেগম। সালমান ইসলাম সদর উপজেলার পৈন্দা গ্রামের আমিরুল ইসলামের ছেলে। তবে সে ছোটবেলা থেকেই নানা বাড়ি শহরের উত্তর আরপিননগরে বসবাস করে।
পুলিশ জানায়, সালমান ইসলামের বিরুদ্ধে ২০০৮ সনে আওয়ামী লীগের কার্যালয়ের সামনে সুনামগঞ্জের উদীয়মান ফুটবলার কামরুল ইসলামকে হত্যার অভিযোগ রয়েছে। এই নির্মম হত্যাকা-ের মধ্য দিয়েই আলোচনায় আসে সে। এ ঘটনায় দীর্ঘদিন কারাভোগের পর জামিনে বেরিয়ে এসে আরো বেপরোয়া হয়ে ওঠে সালমান। তাছাড়া পুলিশের সোর্স হিসেবে পরিচয় দিয়েও গ্রামের নিরীহ মানুষকে হয়রানি করতো।
কয়েক মাস আগে পৈন্দা গ্রামের জনৈক স্কুলছাত্রীকে জোরপূর্বক বিয়ে করতে গিয়ে ভ্রাম্যমাণ আদালতে ১ মাসের দ-িত হয়ে কারাভোগ করে সালমান। তার বিরুদ্ধে বখাটেপনা, মাদক সেবন, চাঁদাবাজিসহ নানা অভিযোগ রয়েছে।
জানা গেছে, একাধিক মামলার আসামি হওয়ার পরই পালিয়ে যায় সালমান। তাকে গ্রেফতারে বারবার অভিযান চালালেও পুলিশ ধরতে পারছিলনা। মোস্টওয়ান্টেড আসামি হিসেবে গ্রেফতার হলে বড় দুর্ঘটনার মুখে ছেলে পড়তে পারে এই আশঙ্কায় মা স্বপ্না বেগম পুলিশের সঙ্গে কথা বলে তাকে আত্মসমর্পণের প্রস্তুতি নেন। সোমবার সকালে সহকারি পুলিশ সুপার তাপস রঞ্জন ঘোষের কার্যালয়ে ছেলেকে নিয়ে উপস্থিত হন মা। পুলিশ তাকে গ্রেফতার দেখিয়ে দুপুরে আদালতে সোপর্দ করে।
এদিকে সালমান ইসলামকে পুলিশের কাছে সোপর্দের সময় মা স্বপ্না বেগমকে ছিলেন অশ্রুসজল। তিনি ফুঁপিয়ে কাঁদছিলেন। ওড়না দিয়ে বারবার মুছছিলেন চোখ। কিন্তু তার ছেলে সালমান ইসলাম ছিল নির্বিকার। স্বাভাবিক ছিল সে।
সালমান ইসলামের মা স্বপ্না বেগম বলেন, সালমান ছোটবেলা থেকেই শহরে বসবাস করছিল। খারাপ ছেলেদের সঙ্গে মিশে আমার ছেলে খারাপ হয়েছে। আমার ছেলের অপরাধের সঙ্গে যারা তাকে খারাপ করেছে তাদেরও বিচার চাই আমি।
সুনামগঞ্জের সহকারি পুলিশ সুপার তাপস রঞ্জন ঘোষ বলেন, সালমান ইসলামের বিরুদ্ধে, খুনসহ তিনটি মামলা রয়েছে। তাকে গ্রেফতারের জন্য আমরা বারবার চেষ্টা করছিলাম। ছেলের বড় ক্ষতি হতে পেরে এই ভয় পেয়ে তার মা আমাদের হাতে তার অপরাধী ছেলেকে তুলে দিয়েছেন। আমরা দুপুরেই তাকে আদালতে সোপর্দ করেছি।