স্টাফ রিপোর্টার ::
হাওরের দুর্গত কৃষকের ত্রাণে অনিয়ম-দুর্নীতি বিষয়ে ব্যবস্থা নিচ্ছে প্রশাসন। বিভিন্ন স্থানে ডিলারদের লাইসেন্স বাতিল, আত্মসাৎকৃত বরাদ্দ ফিরিয়ে দেয়ার নির্দেশনাসহ নানাভাবে দুর্নীতিবাজদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে শুরু করেছে প্রশাসন। জানা গেছে, বর্তমান জেলা প্রশাসক মো. সাবিরুল ইসলাম দায়িত্ব নেবার পর হাওরের ফসলহারা কৃষকের ত্রাণে কোনো দুর্নীতি হলে সংশ্লিষ্টদের ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশনা দেন তিনি। এরপর থেকেই মূলত অ্যাকশন শুরু হয় বলে জানা গেছে।
অভিযোগ থেকে জানা যায়, হাওরের ফসলহারা কৃষকের বিশেষ ভিজিএফ নিয়ে শুরু থেকেই বিভিন্ন ইউনিয়নের চেয়ারম্যান-মেম্বাররা স্বজনপ্রীতি, দুর্নীতি ও অনিয়ম করে যাচ্ছেন। বিশ্বম্ভরপুর উপজেলার ফতেপুর ইউনিয়নের চারজন ইউপি সদস্য এ নিয়ে চরম দুর্নীতি করেন। প্রশাসন তাদের দুর্নীতির বিষয়টি আমলে নিয়ে তদন্ত শুরু করে সত্যতা পায়। সম্প্রতি জেলা প্রশাসন সেই ইউপি সদস্যদের আত্মসাৎকৃত বরাদ্দের টাকা সরকারি কোষাগারে জমা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে।
জগন্নাথপুর উপজেলার পাইলগাঁও ইউনিয়নের যুবলীগ নেতা আব্দুল বারিকের ডিলারশিপ বাতিল করা হয়েছে। ওএমএসের চাল কালোবাজারে বিক্রি করে দেওয়ায় তার ডিলারশিপ বাতিল করা হয়। একই উপজেলার আশারকান্দি ইউনিয়নের প্যানেল চেয়ারম্যান ও সচিবের বিরুদ্ধে হাওরের দুর্গত কৃষকের ত্রাণে দুর্নীতির বিষয়ে তদন্ত চলছে। তার বিরুদ্ধেও শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানা গেছে। এদিকে সম্প্রতি দিরাইয়ে রফিনগর ইউনিয়নে ভিজিএফের চাল কালোবাজারে বিক্রির অভিযোগে তদন্ত চলছে বলে জানা গেছে।
হাওর বাঁচাও সুনামগঞ্জ বাঁচাও আন্দোলনের যুগ্ম আহ্বায়ক মুক্তিযোদ্ধা আবু সুফিয়ান বলেন, ফসল ডুবে যাওয়ার পর সরকার দুর্গত কৃষকদের নানা প্রণোদনা দেয়। কিন্তু সেই সহায়তা বিতরণে কিছু লোক ব্যাপক দুর্নীতি ও অনিয়ম করে। আমরা অনিয়ম-দুর্নীতির বিরুদ্ধে মানবববন্ধন-প্রতিবাদ সমাবেশ করে দোষীদের বিরুদ্ধে শাস্তির দাবি জানিয়েছে। ফসলহারা কৃষকদের সহায়তা অব্যাহত রাখতেও স্মারকলিপি দিয়েছি।
জগন্নাথপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মাছুম বিল্লাহ বলেন, হাওরের দুর্গত কৃষকের ত্রাণে অনিয়ম হলেই প্রশাসনিক ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশনা দিয়েছি। ইতোমধ্যে আমরা এক ডিলারের লাইসেন্স বাতিল করেছি। আরেকটি ইউনিয়নে বিশেষ ভিজিএফের দুর্নীতির বিষয়ে তদন্ত চলছে। দোষীদের বিরুদ্ধে প্রশাসন ব্যবস্থা নিতে কঠোর বলে তিনি জানান।