1. [email protected] : admin2017 :
  2. [email protected] : Sunam Kantha : Sunam Kantha
  3. [email protected] : wp-needuser : wp-needuser
মঙ্গলবার, ০৭ মে ২০২৪, ০৪:৫৭ পূর্বাহ্ন
ঘোষণা ::
সুনামগঞ্জ জেলার জনপ্রিয় সর্বাধিক পঠিত পত্রিকা সুনামকন্ঠে আপনাকে স্বাগতম। আমাদের পাশে থাকার জন্য সকলকে আন্তরিক অভিনন্দন। আমাদের পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দিতে যোগাযোগ করুন - 01711-368602

ক্রমেই নামছে পানির স্তর

  • আপডেট সময় শনিবার, ১০ জুন, ২০১৭

বিশেষ প্রতিনিধি ::
হাওর-বাওর-নদ-নদীর দেশ সুনামগঞ্জ। বছরের বেশিরভাগ সময়ই জলের নানা উৎস লক্ষ করা যায়। সুনামগঞ্জ জেলা শহরও খাল-জলাশয় ঘেরা ছিল। স্বাধীনতার পর থেকেই বাণিজ্যিকীকরণ ও আবাসিকিকরণ শুরু হওয়ায় প্রাকৃতিক পানির জলাধার নষ্ট হচ্ছে। ফলে গত কয়েক বছর ধরে শুষ্ক মওসুমে পানির স্তর নিচে নেমে গেছে। যে কারণে সাধারণ নলকূপে এখন আর আগের মতো পানি উঠছে না। সম্প্রতিক সময়েও সুনামগঞ্জ শহরের সাধারণ নলকূপগুলোতে পানি উঠছেনা। এতে চরম ভোগান্তির কবলে পড়েছেন বিভিন্ন আবাসিক এলাকার লোকজন। জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর সূত্র জানিয়েছে, পানির স্তর নিচে নেমে যাওয়ায় এই সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে। আগামীতে সংকট আরো তীব্র হলে বলে সূত্র জানায়।
জানা গেছে, সুনামগঞ্জ পৌরসভায় সরকারি নলকূপ বাদেও প্রতিটি বাসা বাড়িতে নিজস্ব অর্থায়নে নলকূপ রয়েছে। এই নলকূপে মোটর স্থাপন করে পানি তুলে জরুরি প্রয়োজন সারেন মানুষজন। গত কয়েক বছর ধরে পানির স্তর অস্বাভাবিক নিচে চলে যাওয়ায় শুষ্ক মওসুমে পানি উঠছে না। এরপর থেকেই মানুষজন সাবমারজিবল নলকূপ স্থাপন করতে থাকেন। এখন এই নলকূপ স্থাপন করায় ৪০ ফিটের কাছাকাছি যেসব সাধারণ নলকূপ রয়েছে সেগুলোতে পানি উঠছেনা। জানা গেছে গভীর নলকূপের কাছে সাধারণ নলকূপ থাকলে এই সমস্যা হয়।
জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, পানির স্তর নিচে নেমে যাওয়ায় পৌরসভায় ১০০টি গভীর নলকূপ স্থাপনের কাজ বাস্তবায়ন করছে জনস্বাস্থ্য বিভাগ। তাছাড়া বৃহত্তম একটি ওয়াটার সাপ্লাইয়ের নির্মাণ কাজও চলছে। সংশ্লিষ্টরা জানান, জলবায়ু পরিবর্তনজনিত কারণেও পানির স্তর নিচে নেমে যাচ্ছে।
এদিকে গত এক সপ্তাহ ধরে শহরের নতুনপাড়া, হাজীপাড়া, মল্লিকপুর, উকিলপাড়াসহ বিভিন্ন এলাকায় সাধারণ মানের নলকূপে পানি উঠছেনা। বিশেষ করে পবিত্র রমজানে পানি না ওঠায় চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন তারা। তবে যারা পৌরসভার পানি সাপ্লাইয়ের সংযোগ নিয়েছেন তারাও দুই বেলা কাক্সিক্ষত পরিমাণ পানি পাচ্ছেন না। এতে দৈনন্দিন জরুরি কাজেও পানি ব্যবহার করতে পারছেন না তারা।
হাজীপাড়া আবাসিক এলাকার বাসিন্দা সুজন মিয়া বলেন, এখন বৃষ্টিপাতের মওসুম। তারপরও সাধারণ নলকূপে পানি উঠছেনা। গত ১৫দিন ধরে আমাদের বাসায় পানি উঠছেনা। আগে শেষ রাতে পানি উঠলেও এখন কোনসময়ই পানি উঠেনা। তিনি জানান, মোটরবাজারজাত কোম্পানির ইঞ্জিনিয়ার তাকে জানিয়েছেন, আশপাশে গভীর নলকূপ থাকলে সাধারণ নলকূপে পানি উঠেনা। এখন এই পাড়ার অনেক পরিবার চরম পানি সংকটে রয়েছে।
নতুনপাড়া এলাকার বাসিন্দা ইকবাল কাগজী বলেন, বর্ষায়ও মোটর লাগিয়ে সাধারণ নলকূপে পানি ওঠানো যাচ্ছেনা। গত এক সপ্তাহ আগে ভোরে কিছুক্ষণ পানি ওঠানো গেলেও এখন একেবারেই পানি ওঠছেনা। এই অবস্থা অতীতে বর্ষা মওসুমে হয়নি বলে তিনি জানান।
লেখক-গবেষক কল্লোল তালুকদার চপল বলেন, সুনামগঞ্জের প্রাকৃতিক পানির রিজার্ভার অনেক আগেই নিঃশেষ হয়ে গেছে। যে কারণে বর্ষা মওসুমেও পানি উঠছেনা। আগামীতে অবস্থা আরো ভয়াবহ হবে।
পৌরসভার প্যানেল মেয়র হোসেন আহমেদ রাসেল বলেন, আমাদের সাপ্লাইয়ের পানি গ্রহিতার সংখ্যা নির্ধারিত পরিমাণের চেয়েও কয়েকগুণ বেশি। যার ফলে চাপ বেশি থাকে। তারপরও দুই বেলা নিয়মিত পানি সরবরাহ করা হচ্ছে। নতুন ওয়াটার সাপ্লাই চালু হলে এই সমস্যা থাকবেনা বলে তিনি জানান।
সুনামগঞ্জ জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মাহবুবুর রহমান বলেন, পানির স্তর অনেক নিচে নেমে গেছে। সাধারণ নলকূপের পাশে সাবমারজিবল নলকূপ থাকলে সাধারণ নলকূপে চাপ বাড়ে। এতে পানি না ওঠাটাই স্বাভাবিক। তাছাড়া জলবায়ু পরিবর্তন জনিত কারণেও এখন পানির স্তর নিচে নামছে।

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর

© All rights reserved © 2016-2021
Theme Developed By ThemesBazar.Com