1. [email protected] : admin2017 :
  2. [email protected] : Sunam Kantha : Sunam Kantha
  3. [email protected] : wp-needuser : wp-needuser
সোমবার, ০৬ মে ২০২৪, ০৭:৩১ অপরাহ্ন
ঘোষণা ::
সুনামগঞ্জ জেলার জনপ্রিয় সর্বাধিক পঠিত পত্রিকা সুনামকন্ঠে আপনাকে স্বাগতম। আমাদের পাশে থাকার জন্য সকলকে আন্তরিক অভিনন্দন। আমাদের পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দিতে যোগাযোগ করুন - 01711-368602

সুনামগঞ্জ আ.লীগের কমিটি : ‘কাউয়া-হাইব্রিড’ ঠেকাতে কেন্দ্রের হাতে নেতাদের জীবন বৃত্তান্ত

  • আপডেট সময় শুক্রবার, ৯ জুন, ২০১৭

বিশেষ প্রতিনিধি ::
সভাপতি, সাধারণ সম্পাদকের নাম ঘোষণার এক বছরের মাথায় সুদীর্ঘ ২০ বছর পর কেন্দ্র থেকে সুনামগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটিতে গঠনের যে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে সেখানে যাতে ‘কাউয়া-হাইব্রিড’ ঢুকতে না পারে সে কারণে কেন্দ্র থেকে পদপ্রত্যাশী নেতাদের রাজনৈতিক জীবন বৃত্তান্ত চাওয়া হয়েছে। পছন্দের পদে আসীন হতে রাজনীতির অতীত ইতিহাস কাগজে ছাপিয়ে কেন্দ্রীয় নেতাদের সঙ্গে লবিং করছেন পদপ্রত্যাশীরা।
এ প্রসঙ্গে সুনামগঞ্জের দায়িত্বে থাকা দলের সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন বলেন, ‘কমিটি গঠনের বিষয়টি চূড়ান্ত প্রক্রিয়াধীন। জীবন বৃত্তান্ত নিয়ে আমরা যাচাই করতে চাই যে পদপ্রত্যাশী নেতাদের অতীতে দলের জন্য অবদান এবং ত্যাগ কতখানি আছে।’
প্রসঙ্গত, ২০১৬ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি সুনামগঞ্জ শহরের জুবিলী উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে অনুষ্ঠিত জেলা আওয়ামী লীগের বহুল প্রতীক্ষিত সম্মেলনে সভাপতি পদে আলহাজ মতিউর রহমান ও সাধারণ সম্পাদক পদে ব্যারিস্টার এনামুল কবির ইমনের নাম ঘোষণা করেন দলটির তৎকালীন সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম। এ সময় ব্যাপক বিক্ষোভ দেখান ১৫ বছর ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্বে থাকা সাধারণ সম্পাদক পদপ্রত্যাশী নূরুল হুদা মুুকুটের অনুসারীরা। কিন্তু পূর্বে দীর্ঘ দিন তিনি এই পদে দায়িত্ব থাকায় তাকে সরিয়ে দেয়া হয়। দায়িত্ব দেয়া হয় তরুণ নেতা ব্যারিস্টার ইমনকে।
সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক আগে থেকে বিপরীত মেরুতে থাকায় এক বছরের বেশি সময় পার হয়ে গেলেও জেলা আওয়ামী লীগের ঐক্যবদ্ধ একটি কমিটির রূপরেখা কেন্দ্র জমা দিতে দিতে পারেন নি। এমন প্রেক্ষপটে পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠনের উদ্যোগ নেয় আওয়ামী লীগ হাইকমান্ড।
এদিকে, দ্বিধা বিভক্ত জেলা আওয়ামী লীগে এখন সভাপতি মতিউর রহমানের সঙ্গে জোটবদ্ধ এক সময় ‘সাপে-নেউলে’ সম্পর্ক নিয়ে বিপরীত মেরুতে থাকা সাবেক সাধারণ সম্পাদক আয়ূব বখ্ত জগলুল এবং সাবেক ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক নূরুল হুদা মুকুট। এই দুই নেতার প্রথম জন দ্বিতীয় মেয়াদে সুনামগঞ্জ পৌরসভার মেয়র এবং দ্বিতীয় জন জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান। ।
অপরদিকে, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে প্রতিমন্ত্রী এমএ মান্নান, সংসদ সদস্য মুহিবুর রহমান মানিকসহ জেলার পাঁচ প্রতিমন্ত্রী-এমপিদের সহযোগিতায় জেলা আওয়ামী লীগের মূলধারার নেতৃত্বে চলে আসেন জেলা যুবলীগের সাবেক আহ্বায়ক ব্যারিস্টার এনামুল কবির ইমন। এমন প্রেক্ষাপটে অতীতের দ্বন্দ্ব ভুলে সভাপতি মতিউরের নেতৃত্বে ঐক্যবদ্ধ হন জগলুল-মুকুট। এরপর থেকে জেলার স্থানীয় সরকারের বিভিন্ন পর্যায়ের নির্বাচন এবং পদপদবি নিয়ে ‘ঠা-া যুদ্ধ’ চলছে এই দুই বলয়ের মধ্যে।
দলীয় সূত্র জানায়, কেন্দ্র থেকে পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠনের উদ্যোগ নেওয়ার পর জেলা আ.লীগের সভাপতি মতিউর রহমান ৭১সদস্যের একটি কমিটি দলের যুগ্ম সম্পাদক মাহবুবুল আলম হানিফের কাছে জমা দিয়েছেন। কিন্তু কমিটিতে যাতে মাঠের ত্যাগীরা স্থান পান এমন লক্ষ্যে প্রত্যেক নেতার রাজনৈতিক জীবন বৃত্তান্ত দেওয়ার নির্দেশ দেন হানিফ। ব্যারিস্টার ইমনও পৃথক কমিটি জমা দিতে প্রতিমন্ত্রী, এমপি ও নিজস্ব বলয়েরর নেতাদের সঙ্গে দফায় দফায় বৈঠক করেছেন। তবে তিনি জমা দেয়ার জন্য কমিটি তৈরি করতে পারেন নি বলে জানা গেছে।
জীবন বৃত্তান্ত বিশ্লেষণ করে দুই পক্ষের প্রদত্ত কমিটি থেকে সমন্বয় করে যে কোন দিন পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা হতে পারে বলে জানিয়েছেন দলের দায়িত্বশীল একাধিক সূত্র।
সূত্র আরও জানায়, পূর্ণাঙ্গ কমিটিতে দ্বিধাবিভক্ত দুটি পক্ষেরই প্রধান টার্গেট জ্যেষ্ঠ সহ-সভাপতি, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও সাংগঠনিক সম্পাদকের পদগুলো। পদ-পদবী অর্জনের এই লড়াইয়ে সভাপতি মতিউর রহমানের পক্ষে জগলুল-মুকুটের পাশাপাশি সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক রেজাউল করিম শামীম, দক্ষিণ সুনামগঞ্জ উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আবুল কালাম, ছাতক পৌরসভার মেয়র আবুল কালাম চৌধুরী, তার ভাই সাবেক ছাত্রলীগ নেতা শামীম চৌধুরী প্রমুখের সমর্থন রয়েছে।
অপরদিকে, সাধারণ সম্পাদক ব্যারিস্টার ইমনের পক্ষে প্রতিমন্ত্রী এমএ মান্নান, এমপি মুহিবুর রহমান মানিক ছাড়াও আছেন জয়া সেনগুপ্তা এমপি, মোয়াজ্জেম হোসেন রতন এমপি, শামছুন নাহার বেগম শাহানা এমপি ও সাবেক সহ-সভাপতি আফতাব উদ্দিন প্রমুখ।
সূত্র আরও জানায়, সভাপতি প্যানেল থেকে সিনিয়র সহ-সভাপতি পদে জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক পৌর মেয়র আয়ূব বখত জগলুল ও সাবেক ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান নূরুল হুদা মুকুট নাম প্রস্তাবের সম্ভাবনাই বেশি। দলকে শক্তিশালী করতে জেলা সদরে প্রভাবশালী এই দুই নেতার যে কোন একজনকে এই পদে দিলে সভাপতির অবর্তমানে দলকে শক্তিশালী করতে পারবেন বলে মনে করছেন এই অংশের নেতারা।
এ ব্যাপারে জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ব্যারিস্টার এনামুল কবির ইমন বলেন, ‘জগলুল ভাই জাতীয় পরিষদের সদস্য। যে কারণে উনার নাম জেলা কমিটিতে প্রস্তাব করিনি। আর নূরুল হুদা মুকুট জেলা পরিষদ নির্বাচনে দলের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে গিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন। যে কারণে তার নাম প্রস্তাব করার প্রশ্নই আসে না।’
বিশ্বস্ত সূত্রমতে, সাধারণ সম্পাদক প্যানেল থেকে জ্যেষ্ঠ সহ-সভাপতি পদে সুনামগঞ্জ-৫ আসনের এমপি মুহিবুর রহমান মানিক কিংবা সাবেক সহ-সভাপতি আফতাব উদ্দিনের নাম প্রস্তাবের সম্ভাবনাই বেশি।
সুনামগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মতিউর রহমান বলেন, ‘যারা দীর্ঘ দিন মাঠে থেকে দলীয় কর্মকা-ে সক্রিয় ছিলেন তাদেরকে প্রাধান্য দিয়ে যাতে শক্তিশালী একটি কমিটি গঠন করা হয় যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুল আলম হানিফের সঙ্গে দেখা করে এই অনুরোধ করেছি।’
তিনি আরও বলেন, ‘আগামীতে জাতীয় নির্বাচন, তাই আমরা চাই কমিটিতে যাতে বিতর্কিতরা স্থান না পায়। নবীন-প্রবীণের সমন্বয়ে একটি শক্তিশালী কমিটি গঠন করা হোক এমন প্রত্যাশা করি।’
আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক (সিলেট বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত) আহমদ হোসেন বলেন, ‘দলের আদর্শের প্রতি আনুগত্য আছে এমন নেতাদের কমিটিতে অগ্রাধিকার দেওয়া হবে। অতীতে দলের শৃংখলা মেনে চলা এবং অবদান মূল্যায়ন করে পরীক্ষিত নেতাদের অন্তর্ভুক্ত করা হবে কমিটিতে।’

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর

© All rights reserved © 2016-2021
Theme Developed By ThemesBazar.Com